র্যাব হেফাজতে জেসমিনের মৃত্যু: তদন্ত কমিটি নিয়ে ধোঁয়াশা
অনলাইন ডেস্ক: র্যাব হেফাজতে নওগাঁর ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় উচ্চ আদালতে নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটি ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
জেসমিনের পরিবারের অভিযোগ, ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও সেই তদন্ত কমিটির কেউ তাদের সঙ্গে দেখা করেনি কিংবা কথাও বলেননি।
ওই কমিটিতে কারা আছেন তা জানেন না তারা। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে গিয়েও কোনো তথ্য পাননি তারা।
সবমিলিয়ে সেই তদন্ত কমিটি নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। গত ২৪ মার্চ র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিন মারা যাওয়ার পরে এনিয়ে দেশব্যাপী তোলপাড় হয়।
প্রশ্নবিদ্ধ হয় র্যাবের ভূমিকা। বিষয়টি এক আইনজীবী নজরে আনলে সরব হয় উচ্চ আদালত।
অভিযুক্ত র্যাব কর্মকর্তাদের কর্মস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর ৫ এপ্রিল ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ।
সেখানে নওগাঁ জেলা জজ পদমর্যাদার একজন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে রাখতে বলা হয়। যার প্রতিবেদন দেওয়ার কথা ছিলো ৬০ দিনের মধ্যে।
কিন্তু জেসমিনের পরিবারের অভিযোগ, এখন পর্যন্ত সেই তদন্ত কমিটির কেউ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।
এবিষয়ে সুলতানা জেসমিনের মামা নাজমুল হক মন্টু বলেন, জেসমিনের একমাত্র ছেলে শাহেদ হোসেন সৈকতের সঙ্গে কথা হয়েছে।
সে বলেছে, এখন পর্যন্ত তার কাছে কিংবা আমাদের কাছে তদন্ত কমিটির পরিচয়ে কেউ আসেননি। তদন্ত কমিটিতে আসলে কারা আছেন এবিষয়ে কোনো পক্ষ মুখ খুলছেন না। আর তাই ন্যায় বিচারের আশায় উচ্চ আদালতের দিকেই তাকিয়ে আছি।
এদিকে জেসমিনকে হাসপাতালে নেওয়ার সিসি টিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যায়, দুপুর ১টা ১৪ মিনিটে জেসমিনকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে নেওয়া হয় নওগাঁ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে।
র্যাবের পোশাকে দুইজন নারী ও কয়েকজন সাধারণ পোশাকের পুরুষ জেসমিনকে গাড়ি থেকে নামান। সে সময় জেসমিনকে তার মাথায় বার বার হাত দিতে দেখা যায়। এরপর হাসপাতালের বেঞ্চে বসানো মাত্রই বেঞ্চে এলিয়ে পড়েন জেসমিন।
হাসপাতালে রেজিস্ট্রার মেনটেইন করে শুরু হয় অজানা অপেক্ষা। এক পর্যায়ে ১২ মিনিট জরুরি বিভাগের জেসমিনকে বসিয়ে রাখা হয়। এরপর তাকে কোনোভাবে ট্রলিতে ওঠানো হয়। একজন ট্রলি ঠেলে জেসমিনকে ওয়ার্ডের দিকে নিয়ে যান।
নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. জাহীদ নজরুল চৌধুরী বলেন, সেদিন শারীরিক দুর্বলতা ও বমিভাব নিয়ে হাসপাতালে আনা হয় জেসমিনকে। ভর্তির পর কিছু পরীক্ষা শেষে দেওয়া হয় চিকিৎসা। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সেইদিন বিকেল ৪টার দিকে তাকে রাজশাহীতে রেফার্ড করা হয়।
সোনালী/জেআর