রাজশাহীতে পাষণ্ড ছেলের মারধরে আহত হয়ে আইসিইউতে ভর্তি মা!
অনলাইন ডেস্ক: পাষণ্ড ছেলের মারধরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার (ইউনিট) ইউনিটে এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন এক হতভাগ্য ‘মা’। ছেলের বেধরক মারধরে মায়ের বুকের হাড় ভেঙে গেছে।
তাও মন গলেনি। এর আগেও তিনি মারধর করেছেন মাকে। তবে এবার গুরুতর। বলা হচ্ছে তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে এ কাজ করেছেন।
তাই এ ঘটনার পর তাকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আর মুমূর্ষু মাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পরে অবস্থার আরও অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় তিনি এখন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা সংকটাপন্ন।
অজ্ঞাত ওই নারী রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানা এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। তার স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি তার এক ছেলের সঙ্গেই থাকতেন। তার দুই ছেলের মধ্যে একজন ভারতে থাকেন। আরেক ছেলে নগরের বোয়ালিয়া থানা এলাকার বাসিন্দা। তিনি একজন চা বিক্রেতা। তার সঙ্গেই থাকেন এ নারী। গত বৃহস্পতিবার (৯ মে) এ ঘটনা ঘটে।
রামেক হাসপাতালের আইসিইউ ইনচার্জ ডা. আবু হেনা মোস্তফা কামাল এ ঘটনাটি তার ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেছেন।
তিনি লেখেন ‘৬০ ঊর্ধ্ব ভদ্রমহিলা। রাজশাহী জেলার মধ্যে বসবাস। দুই ছেলে সন্তানের জননী। স্বামী পরলোকে গেছেন বেশ কিছু বছর আগে। এক ছেলে প্রবাসী। অন্য ছেলের সঙ্গে থাকেন। কি কারণে জানি না, কিন্তু ছেলেটা নিজ মা এর মাথায়, শরীরে প্রচণ্ড আঘাত করেন। বুকের পাঁজরের হাড় ভেঙে গেছে। ফুসফুস অচেতন হবার পর প্রতিবেশীরা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মাধ্যমে সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করে দেন। এতই রক্তপাত হয় যে, প্রতিবেশীরা তখনই দুই ব্যাগ রক্ত দান করেন। অবস্থার মারাত্মক অবনতি হওয়ায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের Geriatric আইসিইউতে আজ ভোরে স্থানান্তর করতে হয়। টেলিভিশন, সংবাদ পত্রে দেখি, এরকম নির্মম ঘটনা। আজ নিজে সেই হতভাগ্য মাকে আইসিইউতে চিকিৎসা দিতে গিয়ে কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে গেছি। ওই মায়ের চিকিৎসা সংক্রান্ত সব দায় দায়িত্ব রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের Geriatric আইসিইউ এর যাকাত তহবিল এবং প্রতিবেশীদের পক্ষ থেকে বহন করা হচ্ছে। আইসিইউতে উনার সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছে। আপনারা ওই হতভাগা মা এর জন্য, নিজ সৃষ্টি কর্তার কাছে প্রার্থনা করুন, উনাকে আমরা যেন চিকিৎসা ও সেবা দিয়ে সুস্থ করে তুলতে পারি।’
বিষয়টি জানতে চাইলে রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, এমন কোনো ঘটনা তার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোনালী/জেআর