সিটি করপোরেশনের দুঃসময়ে এমপি বাদশা পাশে দাঁড়িয়েছেন: মেয়র লিটন
স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, মেয়র হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে আমি দায়িত্ব গ্রহণ করি ২০১৮ সালের ৫ অক্টোবর। দ্বিতীয় দফার ওই দিনগুলো ছিল অত্যন্ত সংকট ও দুশ্চিন্তার। কারণ এতগুলো কর্মকর্তা-কর্মচারী যাদের দায়িত্ব আমার ওপর বর্তালো, তাদের বেতন-ভাতা নিয়ে একটি বাজে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। এনিয়ে ওইসময় কিছুটা আন্দোলনও হয়। তৎকালীন মেয়র কোনভাবেই এই অর্থ যোগার করতে পারছিলেন না।
সেসময় আমি এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা দু’জনে মিলেই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে চেষ্টা করে এমপি বাদশার একটি প্রকল্পের টাকা ডাইভার্ট করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করেছিলাম। তখন আমি মেয়র ছিলাম না, কিন্তু মনে করেছিলাম এটি আমার দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে।
সোমবার (১৫ মে) বেলা ১১টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত নগর ভবনের গ্রীন প্লাজায় রাজশাহী সিটি করপেরেশনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহীর উন্নয়নে কিছু কাজ বাকি থেকে গেছে। বাকি কাজগুলো আমাকে দিয়ে করাবেন সেজন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনরায় মেয়র পদে মনোনয়ন দিয়েছেন। রাজশাহীর অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করতে চাই। আমি সুযোগ পেলে রাজশাহীতে আরও পাঁচহাজার কোটি টাকার ব্যাপক উন্নয়ন করতে চাই। আগামী পাঁচটি বছর হবে কর্মসংস্থানের বছর। পিছিয়ে পড়া রাজশাহী হবে কর্মচঞ্চল নগরী।
রাসিক মেয়র আরো বলেন, ২০১৯ সালে ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী। সেই প্রকল্পের মধ্যে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার কাজ আমরা করতে পেরেছি। বাকি ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা অব্যবহৃত থেকে গেছে। আগামী নির্বাচিত হলে আরও ৩ থেকে ৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ এনে কাজ করতে চাই। নগরীর বর্তমান আয়তনকে বাড়িয়ে ৩৭০ কিলোমিটারে নিয়ে যেতে চাই। নতুন জনবল নিয়োগ, পদোন্নতিসহ সব ব্যয় নির্বাহে সিটি করপোরেশনের আয় বাড়াতে চাই।
লিটন বলেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশনকে আর্থিকভাবে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যেতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করি। শতাধিক কোটি টাকা ঋণের বোঝা নিয়ে ২০১৮ সালের ৫ অক্টোবর দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম। দায়িত্ব গ্রহণে ৬ মাসের মধ্যেই সিটি করপোরেশনের আর্থিক অবস্থার উন্নতি করি। সিটি করপোরেশন ইপিআই কার্যক্রমে পরপর ১১বার দেশসেরা হয়েছে। তৃতীয়বারের মতো বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার লাভ করেছি। রাজশাহী এশিয়ার মধ্যে অন্যতম পরিচ্ছন্ন শহরে পরিণত হয়েছে। এ অর্জন ধরে রেখে রাজশাহীকে আরো এগিয়ে নিতে চাই।
রাসিক মেয়র লিটন বলেন, পদ্মাচরে রিভার সিটি গড়ে তুলতে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। নগরীর উত্তরাংশে সম্প্রসারণ করতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে আরডিএ ও প্রাইভেট সেক্টরে আবাসিক এলাকা গড়ে তোলা হচ্ছে। নগরীতে এরই মধ্যে দুটি ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছে। আরও পাঁচটি ফ্লাইওভার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। রাজশাহীতে দুটি সরকারি আধুনিক স্কুল নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলেছে। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, রাজশাহী হতে কলকাতা সরাসরি বাস, ট্রেন চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। বিসিক-২ শিল্প নগরীর কাজ এগিয়ে চলেছে। সেখানে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প কারখানা স্থাপিত হলে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য দেন, রাসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এফএএম আঞ্জুমান আরা বেগম ও প্রধান প্রকৌশলী নুর ইসলাম তুষার।
সভামঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন রাসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সালেহ মো. নূর-ঈ-সাঈদ, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মো. মামুন। এছাড়া আরও বক্তব্য রাসিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি দুলাল শেখ, সাধারণসম্পাদক আজমীর আহম্মদ মামুন।
সোনালী/জেআর