ঢাকা | ডিসেম্বর ২২, ২০২৪ - ১১:৩৬ পূর্বাহ্ন

মোখা এখন ৫২৫ কিলোমিটারের মধ্যে, বাতাসের গতি ২০০ কিলোমিটার

  • আপডেট: Saturday, May 13, 2023 - 9:55 pm

অনলাইন ডেস্ক: ঘূর্ণিঝড় মোখা কক্সবাজার থেকে ৫২৫ কিলোমিটারের মধ্যে চলে এসেছে। ঝড়ের কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ উঠছে ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত।

শনিবার (১৩ মে) রাতে এমন তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানিয়েছেন, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও আরও ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় (১৬.৯° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০.৬°পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে।

এটি আজ দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২৫ কি.মি. দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৬৫ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থান করছিল।

ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে ১৪ মে সকাল ০৯টা থেকে সন্ধ্যা ০৬টার মধ্যে কক্সবাজার-উত্তর মায়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

শনিবার মধ্যরাত নাগাদ চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হতে পারে।

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮০ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২০০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুদ্ধ রয়েছে।

কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত, চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে আট নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া মোংলা সমুদ্রবন্দরকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

এদিকে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ দশ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনানএবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ আট নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ০৮-১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ০৫-০৭ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

মোখার প্রভাবে চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগে ভারী (৪৪-৮৮ মিমি) থেকে অতি ভারী (৮৯ মিমি বা তার বেশি) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

রোববার (১৪ মে) দুপুরের দিকে ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার ও মিয়ানমারে কিয়াকপিউ বন্দরের মাঝ দিয়ে উপকূলে উঠে আসবে। তখন ঝড়ের গতি থাকবে ১৭৫ কিলোমিটার পর্যন্ত।

ঝড়ের ব্যাস চারশ কিলোমিটার, ফলে মিয়ানমানের সিত্তে বন্দরের কাছ দিয়ে এটি স্থলভাগে প্রবেশ করলে এটি তাণ্ডব চালাবে আশাপাশের দুইশ কিলোমিটারের বেশি এলাকাজুড়ে। বর্তমানে এটি প্রায় ২০ কিলোমিটার বেগে সামনের দিকে এগুচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড় মোখা নামটি ইয়েমেনের দেওয়া। কফির জন্য বিখ্যাত স্থানীয় একটি বন্দরের নাম মোখা। কালক্রমে সেখানকার কফির নামকরণও করা হয়েছে মোখা। ইংরেজিতে শব্দটি Mocha লেখা হলেও এর উচ্চারণ হচ্ছে Mokha।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপ (escap) আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়ার ঘূর্ণিঝড়গুলোর নাম ঠিক করে। এক্ষেত্রে এসকাপ সদস্যভুক্ত ১৩টি দেশের দেওয়া নামের তালিকা থেকে পর্যাক্রমে এক একটি ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়।

বর্তমানে যে তালিকা রয়েছে সেখানে ১৬৯টি ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া আছে। এর মধ্যে মোখা নামটি ১৩ নম্বর। অর্থাৎ ওই তালিকা থেকে পরবর্তী ১৫৬ ঝড়ের নাম ঠিক করা হবে।

সোনালী/জেআর