ঢাকা | ডিসেম্বর ২১, ২০২৪ - ৬:৫৯ অপরাহ্ন

ফের বেড়েছে লোডশেডিং, পরিস্থিতি খারাপ গ্রামাঞ্চলের

  • আপডেট: Wednesday, May 10, 2023 - 2:50 am

অনলাইন ডেস্ক: দেশজুড়ে তাপপ্রবাহে জনজীবন অতিষ্ঠ। এদিকে চাহিদা বাড়লেও বিদ্যুতের উৎপাদন কমেছে; বেড়েছে লোডশেডিং। গ্রামাঞ্চলের পরিস্থিতি বেশি খারাপ। বিভিন্ন এলাকায় দিনে ১০-১২ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে বলে খবর আসছে। গরমের মধ্যে দুর্ভোগ বেড়েছে মানুষের।

বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, তিন কারণে লোডশেডিং বেড়েছে। চরম গরমে এসির লোড মাত্রাতিরিক্ত বেড়েছে। জ্বালানির অভাবে ও যন্ত্রপাতি সংরক্ষণে বিদ্যুতের উৎপাদন কমেছে। বিদ্যুতের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে প্রায় আড়াই হাজার মেগাওয়াট।

সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং হচ্ছে ময়মনসিংহ ও কুমিল্লায়। এরপর রংপুর, খুলনা, রাজশাহী, ঢাকা ও সিলেটে। তবে বরিশাল অঞ্চলে লোডশেডিং নেই বললেই চলে। রংপুরের বাসিন্দা ইকবাল মাহমুদ জানান, দিন-রাত মিলিয়ে তাদের এলাকায় ৬-৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। বিশেষ করে রাতে বিদ্যুৎ চলে যায়। গরমে আর ঘুমানো সম্ভব হয় না। এভাবেই দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটছে।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকাতেও দিনে দুই/একবার লোডশেডিং হচ্ছে। ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির (ডিপিডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেছেন, ঢাকায় চাহিদা অনুসারে বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। তাই লোডশেডিং তেমন নেই, যা হচ্ছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। বিভিন্ন এলাকায় বিতরণ ব্যবস্থার ত্রুটির কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে।

দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে থাকা ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) একজন কর্মকর্তা জানান, কেন্দ্রীয়ভাবে সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় তাঁরা লোডশেডিং দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

দেশের সবচেয়ে বেশি গ্রাহক পল্লী বিদ্যুত্যায়ন বোর্ডের। ৮২টি সমিতির মধ্যে ৬৩টির অবস্থা নাজুক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রকৌশলী বলেন, তাঁরা ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম পাচ্ছেন। ফলে কোথাও কোথাও অর্ধেক সময়ও বিদ্যুৎ দেওয়া সম্ভব হয় না।

বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান বলেন, গরমের কারণে এসি ও ফ্যানের ব্যবহার বেড়েছে। এতে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে। তাই কিছু এলাকায় সাময়িক ঘাটতি হচ্ছে।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সম্প্রতি সমকালকে বলেছিলেন, গরমের কারণে চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। আমরা ভেবেছিলাম সর্বোচ্চ চাহিদার সময়ে অর্থাৎ পিক আওয়ারে উৎপাদনের প্রয়োজন হবে ১৫ থেকে ১৬ হাজার মেগাওয়াট। কিন্তু সারাদিনই চাহিদা থাকছে ১৬ হাজার মেগাওয়াট। চাহিদা মতো গ্যাস মিলছে না। ফলে উৎপাদন কম হচ্ছে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দুই সপ্তাহ ধরে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ। সংরক্ষণ ও মেরামতের জন্য বিভিন্ন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় তিন হাজার ৪৮৬ মেগাওয়াট উপাদন করা যায়নি। পাশাপাশি জ্বালানি সংকট রয়েছে। গ্যাস ও জ্বালানি তেলের সংকটের কারণে সোমবার ৩ হাজার ৬৫৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হয়েছে। তিনি জানান, পিডিবির দিনে প্রয়োজন ১৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাস। সোমবার পাওয়া গেছে ১১৩ কোটি ঘনফুট। গ্যাসের সরবরাহ বাড়াতে পেট্রোবাংলাকে অনুরোধ করেছে পিডিবি।

এদিকে সংকটে বন্ধ হওয়ার শংকায় দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র পায়রা। কারণ ডলার সমস্যায় কয়লা আমদানি বন্ধ রয়েছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে প্রায় ১২শ মেগাওয়াট পাওয়া যায়। তাই এই কেন্দ্র বন্ধ হলে লোডশেডিং পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। সমস্যার সমাধানে পায়রা কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ বিভাগকে চিঠি দিয়েছে।

সোনালী/জেআর