ঢাকা | জুলাই ১, ২০২৫ - ২:২৪ পূর্বাহ্ন

একা থাকা শিশুদের টা‌র্গেট করে অপহরণ কর‌তো তারা

  • আপডেট: Saturday, May 6, 2023 - 3:00 pm

অনলাইন ডেস্ক: স্কুল, মার্কেট, কোচিং কিংবা মাদরাসার সামনে কোনো শিশুকে একা পেলেই তার সঙ্গে ভাব জমাতে মা-বাবার আত্মীয়-বন্ধু পরিচয় দি‌য়ে কৌশলে অপহরণ করতো শিশুদের। এমন এক‌টি চ‌ক্রের সন্ধান পে‌য়ে‌ছে পু‌লিশ। প‌রে অভিযান চা‌লি‌য়ে চক্রের মূলহোতাসহ ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হ‌লেন- চক্রটির মূল‌হোতা মো. মিল্টন মাসুদ (৪৫), মো. শাহীনুর রহমান (৩৮) ও সুফিয়া বেগম (৪৮)।

শুক্রবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তরা বিভাগের বিশেষ অভিযানে গাজীপুরের সালনা থে‌কে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ২টি মোবাইল ফোন ও অপহরণে ব্যবহৃত ৫টি সিমকার্ড জব্দ করা হয়ে‌ছে।

পু‌লিশ বল‌ছে, চক্রটি এই পর্যন্ত প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ শিশু অপহরণ করেছে। অপহৃত শিশুর মা-বাবাকে ফোন করে ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দি‌তো। বিশেষ করে যে শিশুরা বাবা-মার ফোন নম্বর মুখস্ত বলতে পারতো তাদেরকেই টার্গেট করতো তারা। টার্গেট করে সুকৌশলে অপহরণ করে তাদের পরিবারের কাছ থে‌কে মোবাইল ফিনান্সের (বিকাশ, নগদ) মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা মুক্তিপণ আদায় করছিলো।

শনিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া আ্যন্ড পাবলিক রিলেসন্স সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উত্তরা বিভাগের ডিসি মোর্শেদ আলম বলেন, গত ২৪ মার্চ রাজধানীর উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের হলি ল্যাবের সামনে থেকে ৬ বছরের শিশু শাহিন শেখ হারিয়ে গেলে এ সংক্রান্ত একটি জিডি করা হয় উত্তরা পূর্ব থানায়। তদন্তের সূত্র ধরে প্রথমে অপহরণকারী চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়। উত্তরা এয়ারপোর্ট জোনের এডিসি মো. তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে উত্তরা পূর্ব থানার একটি টিম তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের শনাক্তের পর অভিযান পরিচালনা করে এবং ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃত‌দের কাছ থে‌কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া ত‌থ্যের বরাত দি‌য়ে ডি‌সি মো‌র্শেদ আলম জানান, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে স্কুল, বাজার, রেস্টুরেন্টসহ নানা জায়গায় একা থাকা ও বাবা মায়ের সঙ্গে ঘুরতে থাকা শিশুদের টার্গেট করে কৌশলে অপহরণ করতো। তাদের পরিবারের কাছ থেকে বিকাশ, নগদসহ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ আদায় করে।

তি‌নি আরও বলেন, চক্রের মূলহোতা মিল্টন ও তার সহযোগী শাহীনুর রহমান ৬ থেকে ৭ বছর ধরে ৫০০ থেকে ৬০০ শিশু অপহরণ করে এবং তাদের আত্মীয়দের কাছ থেকে ৫০০ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে মুক্তিপণ নেয়।

ডি‌সি জানান, টার্গেটকৃত শিশুকে তার বাবা-মায়ের বন্ধু কিংবা ব্যবসায়িক পার্টনার বলে পরিচয় দিতো। তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে এবং কথা বলার এক পর্যায়ে মা-বাবার আর্থিক অবস্থা জেনে নিতো। এরপর কৌশলে নম্বর নিয়ে শিশুটির মা-বাবাকে ফোন দিয়ে অপহরণ হয়েছে জানিয়ে টাকা দাবি করতো।

উত্তরা এয়ারপোর্ট জোনের এডিসি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, সাধারণত ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে তারা। বাবা-মা ভয়ে তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী টাকা দেয় অপহরণকারীদের কাছে। টাকা দেয়ার কিছু সময় পরে দেখা যায় অপহৃত শিশুটি বাসায় ফিরে এসেছে। কোনো বাবা-মা যদি টাকা নাও দিতে পারেন তবুও তাদের সন্তান ফিরে চলে এসেছে কয়েকটি অভিযোগ খতিয়ে দেখে এসব তথ‌্য জানা গে‌ছে।

তি‌নি আরও বলেন, গ্রেপ্তার মিল্টন মাসুদের বিরুদ্ধে ৫টি এবং শাহীনুর রহমানের বিরুদ্ধে ৩টি করে ঢাকা ও গাজীপুরে মামলা রয়েছে।

সোনালী/জেআর

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS