এবার উত্তরের ঈদযাত্রা অনেকটাই নির্বিঘ্ন হবে
অনলাইন ডেস্ক: উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের ২২ জেলার যানবাহন চলাচলের অন্যতম রুট সিরাজগঞ্জের ৯৫ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক। প্রতি বছরই উত্তরাঞ্চলের ঈদযাত্রায় গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় এ রুটটি।
যানজট, দুর্ঘটনা যেন নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়ায় বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কসহ জেলার অন্যান্য রুটগুলোতে।
গত কয়েক বছর ধরে ভুগিয়েছে জরাজীর্ণ নলকা সেতু।
তবে নলকায় নতুন সেতু নির্মাণ করায় অনেকটাই আশার আলো দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম গোলচত্বর থেকে চান্দাইকোনা মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে।
এ কারণে কিছুটা ভোগান্তি হতে পারে বলেও ধারণা অনেকের।
এরই মধ্যে পুলিশ এ রুটের ১৪টি স্থান ঝূঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সেগুলো হলো- সয়দাবাদ, মুলিবাড়ী, কড্ডার মোড়, ঝাঐল ওভার ব্রিজ, শহীদনগর, কোনাবাড়ী, নলকা, পাঁচলিয়া, হাটিকুমরুল গোলচত্বর, হাটিকুমরুল ইউনিয়ন অফিসের সামনে, রয়হাটি জোড়া ব্রিজ, কামারপাড়া ব্রিজ, ভুঈয়াগাঁতী ও চান্দাইকোনা। তবে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে সংস্কার চলছে বলে জানিয়েছেন চারলেন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কসহ সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন রুট ঘুরে জানা যায়, সাউথ এশিয়া সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক)-২ প্রকল্পের আওতায় এলেঙ্গা-রংপুর মহাসড়ক চারলেন করার কাজ চলছে। এ প্রকল্পের মধ্যে সিরাজগঞ্জের প্রায় ৫০ কিলোমিটার অংশ পড়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে চান্দাইকোন পর্যন্ত এ চারলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের বেশ কিছু স্থান রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ।
সংস্কার কাজ করার ফলে কোনো কোনো স্থানে চারলেনের সড়ক গিয়ে এক লেনে মিলিত হচ্ছে। ফলে সেখানে বাঁক তৈরি হয়ে স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হচ্ছে গাড়িগুলোর। এসব পয়েন্টকে ঘিরে ভয়াবহ যানজট সৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে। ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থেকে হাটিকুমরুল হয়ে চান্দাইকোনা ৫০ কিলোমিটার মহাসড়কটি।
এসময় কথা হয় বেশ কিছু গাড়ির চালক-হেলপার ও যাত্রীদের সঙ্গে। তারা বলেন, এ রুটটি যাত্রীদের কাছে অভিশাপ ছিল। দীর্ঘদিন ধরেই ঈদযাত্রায় নাকাল হতো উত্তরাঞ্চলের যাত্রীরা। এবারও অনেক স্থানে খানাখন্দ, দুই লেন সড়কের কোথাও কোথাও এক লেন হওয়ায় যানজট হতে পারে। তবে অনেক স্থানে চারলেন সড়ক প্রস্তুত হওয়া এবং নলকা সেতুর জট না থাকায় যানজট অনেকটা কম হবে বলে আশা তাদের।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল কবির জানান, এ রুটটিতে যত গাড়ি চলে, তাতে ফোরলেন রাস্তা থাকা দরকার। কিন্তু রয়েছে টুলেন। আবার ফোরলেনে উন্নীতকরণের কাজ চলতে থাকায় টুলেনের কোনো কোনো জায়গায় এক লেন হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও খানাখন্দ রয়েছে। অপরদিকে টুলেনের মধ্যে বিভিন্ন গতির গাড়ি চলার কারণে ওভারটেকিং করতে গিয়েও যানজট সৃষ্টি হয়।
হেগো-মীর আক্তার জেভির প্রকল্প ম্যানেজার এখলাস উদ্দিন জানান, সংস্কার কাজ চলছে, আশা করছি, আগামী ২০ রোজার মধ্যে কাজ শেষ হবে। আশা করা যাচ্ছে, তখন এ সড়কে আর যানজট হবে না। এছাড়া যানজট রোধে এ সড়কের পাঁচটি ব্রিজ ঈদের আগেই খুলে দেওয়া হবে।
হাইওয়ে পুলিশের (বগুড়া রিজিওন) পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, হাটিকুমরুল-বনপাড়া ও হাটিকুমরুল-পাবনা সড়কে কোনো সমস্যা হবে না। বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে হাটিকুমরুল গোল চত্বর হয়ে চান্দাইকোনা পর্যন্ত রুটে ফোরলেনের কাজ চলছে। এখানে কিছু সমস্যা আছে। তবে এ রুটে ঈদযাত্রা যাতে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে পারি, সেই লক্ষে আমরা সাসেক কর্মকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছি। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। এ রুটের ঝাঐল ব্রিজ ও কামারপাড়া ব্রিজে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
তিনি বলেন, ফোরলেনের কাজে বেশ অগ্রগতি হওয়ায় গত বছরের তুলনায় ঈদযাত্রা এবার অনেকটা নির্বিঘ্ন হবে। মানুষকে সুস্থভাবে ঘরে পৌঁছে দিতে পুলিশ মাঠে থাকবে।
সোনালী/জেআর