জামিন পেলেন না রাজশাহীর কর-উপ কমিশনার
অনলাইন ডেস্ক: ঘুষের ১০ লাখ টাকাসহ গ্রেফতার হওয়া রাজশাহীর উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়ার জামিন পাননি।
বুধবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে মহিবুলকে রাজশাহী মুখ্য মহানগর দায়রা জজ আদালতে (সিএমএম) হাজির করা হয়।
এ সময় আসামির পক্ষে তার আইনজীবী জামিনের আবেদন জানান। তবে শুনানি শেষে আদালতের বিচারক আল আসাদ আশিকুজ্জামান সেই জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
পরে কর সেই উপ-কর কমিশনারকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। গ্রেফতার হওয়া কর কর্মকর্তা মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়ার গ্রামের বাড়ি খুলনার বাগেরহাটে।
তিনি ২৫তম কর ক্যাডারের কর্মকর্তা।
এর আগে ৪ এপ্রিল দুপুরে রাজশাহী কর ভবনে অভিযান চালিয়ে ঘুষের ১০ লাখ টাকাসহ রাজশাহী কর অঞ্চলের (সার্কেল-১৩) উপ-কর কমিশনার (বৈতনিক) মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করে দুদকের একটি অভিযানিক দল।
এদিন দুদকের উপ-পরিচালক (ডিডি) আমিনুল ইসলাম বাদী ১৬১ ধারাসহ দুর্নীতি বিরোধী আইনে মহিবুলের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর আজ তাকে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হয়।
দুদকের আইনজীবী শহিদুল হক খোকন জানান, গ্রেফতার হওয়া কর উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়াকে আজ রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় মহিবুলের আইনজীবীরা তার জামিনের আবেদন করেন।
তবে দুদকের আইনজীবীরা মহিবুলের জামিনের বিরোধিতা করে আদালতে বক্তব্য দেন। দুই পক্ষের শুনানি শেষে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আল আসাদ আশিকুজ্জামান, কর উপ-কমিশনার মহিবুলের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন, আমরা মহিবুল ইসলামের জামিনের আবেদন করেছিলেন। কারণ তাকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে। বিচারক দুই পক্ষের শুনানি শেষে মহিবুলের জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। নথিপত্র পেলে তারা এবার উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করবেন।
এর আগে রাজশাহীর গাইনী বিশেষজ্ঞ ও মাদারল্যান্ড ফার্টিলিটি হাসপাতালের মালিক ডা. ফাতেমা সিদ্দিকার নিষ্পত্তি হওয়া বেশ কিছু কর রিটার্ন প্রতিবেদনে ২৬ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন ও কর ফাঁকির অভিযোগে ফাইল পুনরায় চালু করেন গ্রেফতার হওয়া উপ-কর কমিশনার মহিবুল।
ডা.ফাতেমা সিদ্দিকার অতীতের আয়কর রিটার্ন ফাইলে গুরুতর অসঙ্গতির কারণে তার ওপর নতুন করে সাড়ে তিন কোটি টাকা কর নিরূপণের প্রক্রিয়া চলছিল। এর মধ্যে ফাইলগুলো জরিমানা ছাড়া নিষ্পত্তির জন্য উপ-কমিশনার মহিবুল ৬০ লাখ টাকা ঘুষ চেয়েছিলেন চিকিৎসকের কাছে। ডা. ফাতেমা সিদ্দিকা ৫০ লাখ টাকা দিতে রাজি হয়ে গোপনে দুদকে মহিবুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।
মঙ্গলবার সকালে ডা. ফাতেমা সিদ্দিকা ও তার স্বামী ইউসুফ ইসলাম উপ-কমিশনার মহিবুলের কক্ষে গিয়ে এর প্রথম কিস্তি হিসাবে ১০ লাখ নগদ টাকা দেন। তারা মহিবুলের কক্ষ থেকে বের হওয়ার কয়েক মিনিট পরেই দুদকের বিভাগীয় পরিচালক কামরুল হাসানের নেতৃত্বে একটি টিম অভিযান চালায়। এ সময় তাকে ঘুষের ১০ লাখ টাকাসহ হাতেনাতে গ্রেফতার করে দুদক।
সোনালী/জেআর