ঢাকা | জুলাই ২৬, ২০২৪ - ১:৪৫ অপরাহ্ন

‘মৌলবাদীদের তোয়াজ করে রেহাই পাবেন না’

  • আপডেট: Tuesday, February 28, 2023 - 9:44 pm

অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী ও যুবমৈত্রীর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় নেতৃবৃন্দ বলেছেন, মৌলবাদীদের তোয়াজ করে কখনোই রেহাই পাবেন না। সুযোগ পেলেই ওরা ছোবল মারবে। আফগানিস্তান, পাকিস্তান, মিশর, তুরস্ক তার জ্বলন্ত উদাহরণ। সেসব দেশের শাসকগোষ্ঠী মৌলবাদকে তোয়াজ করেও ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি। এদেশেও পারবেন না।

মঙ্গলবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের দ্বিতীয় তলায় ‘মৌলবাদীদের চাপের মুখে পাঠ্যপুস্তক প্রত্যাহার: শিক্ষা ক্ষেত্রে অশনিসংকেত’ শীর্ষক এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করা হয়।

আলোচনায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বরেণ্য ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ধর্মান্ধদের কাছে সরকার কিভাবে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে, পাঠ্যপুস্তক প্রত্যাহারসহ আরো নানা বিষয় তার প্রমাণ। বাংলাদেশ তো পাকিস্তান হয়ে গেছে। মুক্তিযুদ্ধকেও আমরা মনে রাখার প্রয়োজনীয়তা মনে করি না। তা নাহলে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশে এসব হয় কিভাবে!

আলোচকের বক্তব্যে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তরুণ এবং যুবকদের ঐক্যবদ্ধ করে ছাত্রমৈত্রী-যুবমৈত্রীসহ প্রগতিশীল ছাত্র-যুব সংগঠনগুলো যদি কাজ করতে পারে; তবে অবশ্যই শিক্ষা ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা সম্ভব।

বাদশা বলেন, তাদের ভয়ে ভীত হয়ে আমাদের পরাজয় স্বীকার করলে চলবে না। যেদিন রাষ্ট্রধর্ম করা হয়, সেদিন এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে ছাত্রমৈত্রীর নেতা শহীদ জামিল আকতার রতনকে জীবন দিতে হয়েছিল। সেই আন্দোলন এতখানি শক্তি অর্জন করেছিল, ছাত্রদের তো জেলে যেতে হয়েছিলই; আমি তখন ছাত্রনেতা নই- আমাকেও সেদিন পিটিয়ে জেলে পাঠানো হয়েছিল। এভাবেই আমরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের আন্দোলনে লড়াই করেছি, বিজয়ও ছিনিয়ে এনেছি। মুক্তিযুদ্ধের কাঙ্ক্ষিত চেতনার দেশ গড়তে গিয়ে এভাবেই মার খেতে খেতে আমরা এতদূর পর্যন্ত এসেছি।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে রাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান- শত্রুর বিরুদ্ধে পেছনে সরে কখনো জয়ী হওয়া যায় না। শত্রুরা যখন এগোয়, তখন তাদের প্রতিরোধ করেই জিততে হয়। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ৭২ এর সংবিধান কলমের কালি দিয়ে নয়; ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্ত দিয়ে লেখা। সংবিধান যদি আসলেই ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্ত দিয়ে লেখা হয়ে থাকে, তবে সেটিকে রক্ষা করতে যদি আরও ত্রিশ লক্ষ মানুষকে শহিদ হতে হয়, তবে সেই লড়াই আমাদের করতে হবে।

গোলটেবিল আলোচনায় যুবমৈত্রীর সভাপতি তৌহিদুর রহমান তৌহিদের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, লেখক-সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, সমকালের সহ-সম্পাদক সাইফুল ইসলাম তপন, যুবজোটের সভাপতি রোকনুজ্জামান রোকন, যুব ইউনিয়নের সভাপতি খান আসাদুজ্জামান মাসুম, যুবমৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক তাপস দাস, জাসদ ছাত্র লীগের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম ননী। এসময় বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ রাশেদ খান মেনন এমপিসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনায় মূলপত্র উপস্থাপন করেন, ছাত্রমৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক অদিতি আদৃতা সৃষ্টি। সঞ্চালনা করেন ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি অতুলন দাস আলো।

সোনালী/জগদীশ রবিদাস