নাটোরে বিএনপি-আ. লীগের সংঘর্ষে আহত ১২
অনলাইন ডেস্ক: নাটোরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ধাওয়া পাল্টা ধাওয়াসহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিএনপির ১২ নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
শনিবার নাটোর সদর, নলডাঙ্গা, সিংড়া ও গুরুদাসপুরে বিএনপির পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ধাওয়ায় দলটির নেতাকর্মীরা আহত হন।
এদিকে বিএনপির নাশকতা প্রতিরোধে নাটোর শহরসহ প্রতিটি ইউনিয়নে অবস্থান নিয়ে শান্তি সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ। এসব সমাবেশ থেকে বিএনপিকে রাজপথে নামতে না দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
কাফুরিয়া ইউনিয়নের স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি লুৎফর রহমান জানান, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী শনিবার সকালে পীরগঞ্জ বাজারে শান্তিপূর্ণ মিছিল শেষে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় ওই বাজারে নাশকতা করার উদ্দেশ্যে কাফুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালামের নেতৃত্বে স্থানীয় বিএনপি একটি মিছিল নিয়ে আসে। এ সময় আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপর চড়াও হয়ে মারমুখী হয়ে উঠে। তাদের নাশকতা ঠেকাতে ছাত্র ও যুবলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা হয়।
এদিকে সদর উপজেলার ছাতনী ইউনিয়নের দিয়াড় মাদ্রাসাঘাট বটতলা মোড়ে বিএনপির পদযাত্রা মঞ্চ দখল করে শান্তি সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। সকালে বিএনপি নেতাকর্মীরা সমাবেশে শেষে পদযাত্রা শুরু করার পর স্থানীয় আওয়ামী লীগ ওই মঞ্চ দখল করে সমাবেশ করে।
শনিবার সকাল ১১টায় সদর উপজেলার ছাতনী ইউনিয়নের পন্ডিতগ্রামে বিএনপির গণমিছিল শেষে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখছিলেন জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু। বক্তব্য রাখার সময় আওয়ামী লীগ কর্মীরা আশেপাশে অবস্থান নেয়। বক্তব্যের শেষ দিকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি দুলাল সরকারের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ধাওয়া দিলে ছত্রভঙ্গ হয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। এসময় তাড়াহুড়া করে দৌড়াতে পালাতে গিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের ৫ থেকে ৭ জন আহত হন।
অপরদিকে, বেলা ১২টায় শহরের স্টেশন এলাকায় পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাইনুল ইসলাম রিমনের ওপর হামলা করে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।
জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মারুফ ইসলাম বলেন, শনিবারের কর্মসূচিতে ছাত্রদল যুবদল মিলে আরও শতাধিক নেতাকর্মীদের উপর হামলা করেছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।
জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, আমরা খুবই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিলাম। শেষদিকে আওয়ামী লীগ কর্মীরা ধাওয়া দেয় বিনা উস্কানিতে। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে চাইলেও সরকারি দল বাধা দিচ্ছে। আমাদের অন্তত ১২ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে এখন পর্যন্ত জানতে পেরেছি।
অপরদিকে, সকাল থেকেই জেলার ৫২টি ইউনিয়নে অবস্থান নেয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। শহরে মোটর শোডাউন বের করে ছাত্রলীগ কর্মীরা। দুপুরে শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে শান্তি সমাবেশ করে সদর আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের অনুসারীরা।
ওই সমাবেশে এমপি শিমুল হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, নাটোর শহর বা অন্য কোন ইউনিয়নে বিএনপির একটা নেতাকর্মীকেও ঘর থেকে বের হতে দেওয়া হবে না। তাদের নাশকতা প্রতিরোধে আওয়ামী লীগ মাঠে থাকবে।
নাটোর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ নাছিম আহমেদ জানান, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি থাকায় জেলার বিভিন্ন জায়গায় হালকা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ওই সব এলাকায় থানা ও ডিবি পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে ওইসব এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
সোনালী/জেআর