রাজশাহীতে নগর আ’লীগের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ
স্টাফ রিপোর্টার: দেশের উন্নয়ন কার্যক্রমকে ব্যাহত ও বিএনপি’র অব্যাহত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাজশাহী মহানগরের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়েছে।
বৃহষ্পতিবার বেলা ৩টায় কুমারপাড়াস্থ দলীয় কার্যালয় থেকে এই মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদিক্ষণ শেষে সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন।
সমাবেশে রাজশাহী মহানগর আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল সভাপতিত্ব করেন। সঞ্চালনা করেন নগরের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র লিটন বলেন, লন্ডনে বসে ক্যাসেট বাজায় তারেক জিয়া। আর সেই তারেক জিয়ার ক্যাসেট শুনে এরা এখানে আওয়াজ দেয়। আমরা বলতে চাই আপনাদের হাওয়া ভবন, চম্পা ভবন, খোয়াব ভবন ছিল। খোয়াব ভবনের মতো খোয়াব আর দেখেন না। আর খোয়াব দেখে লাভ নাই। আবারো ক্ষমতায় বসবেন, লুটপাট করবেন- আপনাদের সেই স্বপ্ন আর পূরণ হবে না।
মেয়র বলেন, আপনারা সমাবেশ করছেন, আমরা জানি কেন করছেন। নির্বাচনও করবেন। এখন বলছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন করবেন না, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন করবেন না। আপনাদের জন্য নির্বাচন থেমে থাকবে না। নির্বাচনে আসেন, কিছু আসন পেলেও পেতে পারেন। জনগণ যদি দেয়, তাহলে কিছু আসন পেতে পারেন।
বিএনপির উদ্দেশ্যে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, সরকার অনুমতি দিয়েছে সমাবেশ করেন। ভদ্রভাবে করেন, ৮ জেলা থেকে লোক নিয়ে এসে করেন, কোনটাতে আপত্তি নেই। কিন্তু যদি শুনি কোথাও কোন গাড়ি ভেঙেছেন, যানবাহনে আগুন দিয়েছেন বা জনগণের মাঝে অশান্তি তৈরি করেছেন, তাহলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কী করবে, সেটি তাদের ব্যাপার। কিন্তু দলীয়ভাবে আমরা ক্ষমতাশীন দল ছেড়ে দিতে পারি না। জনগণ আমাদের রায় দিয়েছে, জনগণের পক্ষে কাজ করার জন্য, উন্নয়ন দেবার জন্য, তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করবার জন্য, আমরা সেটি রক্ষা করতে ওয়াদাবদ্ধ।
সমাবেশে ডাবলু সরকার বলেন, বিএনপি এখন দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তারা রাজপথের রাজনীতিতে ব্যর্থ হয়ে বর্তমান সরকারের অপপ্রচার ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে শুরু করেছে। বিএনপি’র নেতারা বলছে রাজপথ নাকি তাদের দখলে! আমি তাদেরকে বলতে চাই, আসুন, দেখে যান রাজপথ কার দখলে, রাজপথ আমাদের দখলে, রাজপথ আওয়ামী লীগের দখলে। আমরা অতীতে রাজপথে ছিলাম, বর্তমানেও রাজপথে আছি, ভবিষ্যতেও রাজপথে থাকবো।
ডাবলু বলেন, জনগণ বিএনপি’র দুঃশাসন ভুলে যায়নি। বিএনপি হাওয়া ভবন থেকে খোয়াব ভবন চম্পক ভবন করে দেশের অর্থ সম্পদ লুণ্ঠন করে বিদেশে পাচার করেছিলো। তাদের শাসনামলে বাংলাদেশ পাঁচ বার দূর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো। তারা দেশের সকল খাতকে ধ্বংস করেছিলো। তাদের আমলে ১০ ট্রাক অস্ত্র আনা হয়েছিলো দেশে জঙ্গীবাদ কায়েমের লক্ষ্যে। বিএনপি সারাদেশে হত্যা, খুন করে দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলো। তাদের আমলে সরকারী মদদে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ২২ জন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা করেছিলো, এর মূল হোতা ছিলো তারেক রহমান।
নগর আওয়ামী লীগের এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি আবারো ক্ষমতায় এলে দেশে কোন শান্তি থাকবে না, দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। লক্ষ লক্ষ মানুষকে তারা হত্যা করবে, তাই বিএনপিকে রাজনৈতিক ভাবে প্রতিহত করা সকলের নৈতিক দায়িত্ব কারণ এ দলটি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, দলটির জন্ম হয়েছে ক্যান্টনমেন্টের সেনা ছাউনি থেকে।
তিনি বলেন, বিএনপিকে সমুচিত জবাব দিতে হলে আমাদেরকে রাজপথে থাকতে হবে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিএনপি-জামায়াত যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে জনগণকে সাথে নিয়ে রাজপথে থেকে আমরা এই দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা করবো।
কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য বেগম আখতার জাহান, রাজশাহী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, সৈয়দ শাহাদত হোসেন, অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, রেজাউল ইসলাম বাবুল, ডা. তবিবুর রহমান শেখ, নাঈমুল হুদা রানা, বদরুজ্জামান খায়ের, যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, আহ্সানুল হক পিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আসলাম সরকার, মীর ইসতিয়াক আহমেদ লিমনসহ নগর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সোনালী/জগদীশ রবিদাস