ঢাকা | জুন ৩, ২০২৫ - ৩:১৮ অপরাহ্ন

চিকিৎসায় অবহেলা ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় রাবির মামলার আবেদন

  • আপডেট: Saturday, October 22, 2022 - 11:02 pm

বিশ^বিদ্যালয় প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী এম জি এম শাহরিয়ারের চিকিৎসায় অবহেলা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ এনে মামলার আবেদন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ড ও এর আশেপাশের ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স, ইন্টার্নি, ব্রাদার, আনসার ও তাদের সহযোগীদের অভিযুক্ত করা।

গতকাল শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম বাদী হয়ে নগরীর রাজপাড়া থানায় মামলার এই আবেদন করেন৷ মামলার এই আবেদনের বিষয়টি রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহাঙ্গীর আলম নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে একই ঘটনায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। যেখানে রাবি তিনশতাধিক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ভাঙচুর ও হামলার অভিযোগ এনে মামলার আবেদন করা হয়।

রাবি প্রশাসনের দেওয়া অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়, গত ১৯ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮ টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এম.জে.এম. শাহরিয়ার শহীদ হবিবুর রহমান হলের তৃতীয় তলার ছাদ হতে নিচে পড়ে গিয়ে মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়। এমতাবস্থায় তাকে জরুরী চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হলে কোনো প্রকার চিকিৎসা প্রদান না করে কর্তব্যরত চিকিৎসক শাহরিয়ারকে চিকিৎসার জন্য আইসিইউ-তে না নিয়ে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রেরণ করেন। ৮ নম্বর ওয়ার্ডে নিয়ে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা অনেক ডাকাডাকির পর বিলম্ব করে চিকিৎসক ও নার্স আহত শাহরিয়ারের নিকটে আসে এবং নানা অযুহাতে চিকিৎসা প্রদানে কালক্ষেপণ করতে থাকে। ফলে সেখানেই বিনা চিকিৎসায় শাহরিয়ার মৃত্যুবরণ করে।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, চিকিৎসকেরা সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করলে শাহরিয়ারের বাঁচার সম্ভাবনা ছিল বলে ছাত্রদের বিশ্বাস। শাহরিয়ারের মৃত্যুর বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে তাঁর সহপাঠী ও বন্ধুরা রামেক হাসপাতালে পৌঁছায় এবং কর্তব্যে অবহেলাজনিত মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মাঝে এক করুণ শোকাবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ফলে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকে। সেই সময় ৮ নম্বর ওয়ার্ড ও তার আশেপাশের ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক/ইন্টানী/নার্স/ব্রাদার/আনসার ও তাদের উশৃংখল সহযোগিরা ন্যাক্কারজনকভাবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অবরুদ্ধ করে লাঠি ও শল্যচিকিৎসায় ব্যবহৃত ধারালো যন্ত্রপাতি দিয়ে হামলা চালায়।

অভিযোগে বলা হয়, এতে আনুমানিক শতাধিক শিক্ষার্থীকে গুরুতরভাবে আহত করে। আহত শিক্ষার্থীদের অনেককে আশংকাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্র, বারিন্দ মেডিকেলসহ রাজশাহীর অন্যান্য বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা প্রদান করা হয়।

জানতে চাইলে রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ বিষয়ে আমরা একটি মামলার আবেদন পেয়েছি।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার রাত ৮ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের বারান্দা থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয় মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী এম জি এম শাহরিয়ার। আহতাবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তবে হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে কালক্ষেপণ করার অভিযোগ তুলেন রাবি শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক, ওয়ার্ড বয় ও আনসাররা শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে। এক পর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে রাবির বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS