রাবিতে দুই দিনব্যাপী চিহ্নমেলা শুরু
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: সাহিত্যের ছোট কাগজ চিহ্নে আয়োজনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) দুই দিনব্যাপী ‘চিহ্নমেলা মুক্তবাঙলা-২০২২’ শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ^বিদ্যালয়ের ড. মু. শহীদুল্লাহ একাডেমিক ভবন চত্ত্বরে বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন কলকাতার বিশিষ্ট লিটল ম্যাগ ব্যক্তিত্ব সন্দীপ দত্ত। এই মেলায় ভারত ও বাংলাদেশের ১৭০টি ছোট কাগজের চার শতাধিক লেখক-সম্পাদক অংশগ্রহণ করেছে। এ যেন দুই বাংলার লেখক, পাঠক ও সম্পাদকদেও মিলন মেলা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি কবি নির্মলেন্দু গুণ বলেন, ‘চিহ্ন নামটি শুনেই আমার মনে হয়েছে রবীন্দ্রনাথের সেই বিখ্যাত গান ‘যখন পরবে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে’। রবীন্দ্রনাথের এই চিহ্ন না পড়াটা নেগেটিভ সেন্সে তিনি বলেছেন। এখানে যে চিহ্নমেলা হচ্ছে সেটা পজিটিভ সেন্স থেকে। আমরা আমাদের ভালোবাসার চিহ্ন, আমাদের সংগ্রামের চিহ্ন, আমাদের প্রতিবাদের চিহ্ন রেখে যেতে চাই।’
রাবি উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ‘চিহ্নমেলার মাধ্যমে আমরা প্রাকৃতিক ভূগোলকে অতিক্রম করে ভাষার ভূগোলে এক হয়েছি। আমরা যারা বাংলা ভাষায় কথা বলি তাদের জন্য এই চিহ্নমেলা একটা মহামহাসমূদ্রে পরিণত হয়েছে। এই মিলনমেলা আমাদের আগামীর দিশা দেখাবে।’
এসময় অন্যদের মধ্যে সহ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম, বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক সনৎকুমার সাহা, কবি জুলফিকার মতিন, বাংলা একাডেমির পরিচালক আমিনুর রহমান সুলতান ও ‘চিহ্ন’ সম্পাদক অধ্যাপক শহীদ ইকবাল। পরে মেলা প্রাঙ্গণ থেকে একটি বর্ণাঢ্য আনন্দ র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে মেলা প্রাঙ্গনে এসে শেষ হয়।
দুইদিন ব্যাপী এ মেলার প্রথম দিন সোমবার ‘প্রয়াত-প্রিয়জন’ অনুষ্ঠানে প্রয়াত প্রতিথযশা লেখকদের স্মরণ করা হয়। প্রয়াত শঙ্খ ঘোষ, সৈয়দ শামসুল হক, দেবেশ রায়, আনিসুজ্জামান ও হাসান আজিজুল হকের স্মৃতি তর্পণ করেন কবি নির্মলেন্দু গুণ, অধ্যাপক সনৎকুমার সাহা, জুলফিকার মতিন, রুহুল আমিন প্রামাণিক, ইমানুল হক এবং অমল সরকার।
এরপর ‘সৃষ্টিশীলতার সমাজতত্ত্ব ও লিটলম্যাগ’ নিয়ে একক বক্তৃতা দেন প্রাবন্ধিক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। অনুবাদ প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেন আলম খোরশেদ, শরীফ আতিক-উজ-জামান, সফিকুল ইসলাম, প্রত্যয় হামিদ ও মুহম্মদ মুহসীন।
মেলার দ্বিতীয় দিন আজ মঙ্গলবার লিটলম্যাগে লেখালেখি নিয়ে আড্ডা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মেলা উপলক্ষে প্রকাশিত বিভিন্ন গ্রন্থ ও পত্রিকার মোড়ক উন্মোচন, প্রবন্ধ পাঠ, অংশগ্রহণকারী পত্রিকার সম্পাদকদের ‘চিহ্নস্মারক’ প্রদান করা হবে। সন্ধ্যায় বাংলাদেশের ‘তৃতীয় চোখ’ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ‘নৌকো’কে ‘চিহ্ন লিটলম্যাগ সম্মাননা’ প্রদান করা হবে। ‘চিহ্ন সাহিত্য পুরস্কার’ প্রদান করা হবে কথাসাহিত্যিক হামিদ কায়সারকে এবং কবি জুলফিকার মতিনকে ‘চিহ্ন সারস্বত সম্মননা’ প্রদান করা হবে।