কাটাখালী পৌর মেয়র আব্বাসকে স্থায়ীভাবে অপসারণ
স্টাফ রিপোর্টার: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাগারে থাকা আব্বাস আলীকে রাজশাহীর পবা উপজেলার কাটাখালী পৌরসভার মেয়রের পদ থেকে স্থায়ীভাবে অপসারণ করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের পৌর শাখা-২ এর উপসচিব ফারজানা মান্নান এক প্রজ্ঞাপনে আব্বাস আলীকে মেয়রের পদ থেকে অপসারণ করেন। গত ২ অক্টোবর এই প্রজ্ঞাপন জারি হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় আব্বাস আলী একমাত্র আসামি। বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে তার বিতর্কিত অডিও সামাজিক মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ায় তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে পৌরসভার ১২ জন কাউন্সিলর অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন। তাদের অভিযোগ, আব্বাস আলী বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে কটূক্তি ও অশালীন বক্তব্য দিয়েছেন।
এছাড়াও আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভয়ভীতি দেখানো, আত্মীয়-স্বজন ও গুন্ডাবাহিনী দিয়ে হুমকি প্রদান; পৌরসভায় অরাজকতা, দুর্নীতি ও অনিয়মসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনেন কাউন্সিলররা। স্থানীয় সরকার বিভাগের রাজশাহীর উপ-পরিচালক তাদের অভিযোগের তদন্ত করে মতামতসহ প্রতিবেদন দিয়েছেন।
কাটাখালী পৌরসভার মোট সদস্য সংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশের বেশি ভোটে গৃহীত হওয়ায় আইন অনুযায়ী আব্বাস আলীকে তার নিজ পদ থেকে অপসারণ করা যুক্তিযুক্ত। তাই সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র আব্বাস আলীকে স্থানীয় সরকার আইন অনুযায়ী পদ থেকে অপসারণ করা হলো।
আওয়ামী লীগের মনোনয়নে পরপর দুবার কাটাখালী পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন আব্বাস আলী। তিনি পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ছিলেন। গত বছরের নভেম্বরে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নিয়ে তার আপত্তিকর কথার অডিও রেকর্ড ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া তিনি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করছেন, এমন আরেকটি অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়। এতে রাজশাহীতে তোলপাড় শুরু হয়।
ওই ঘটনায় আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন সিটি করপোরেশনের একজন কাউন্সিলর। পরে আব্বাস আলীকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এরমধ্যেই পবা উপজেলা আওয়ামী লীগ আব্বাস আলীকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেয়। এরপর তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে আরও কয়েকটি মামলা হয়। গ্রেপ্তারের পর থেকেই আব্বাস আলী রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। গত বছরের ৯ ডিসেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে আব্বাস আলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এর ১০ মাসের মাথায় তাকে স্থায়ীভাবে অপসারণ করা হলো।