সীমান্তে প্রাণহানি কমায় দুই দেশের সন্তোষ
অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে প্রাণহানির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দুই পক্ষ সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার বিষয়ে সম্মত হয়েছে।
এ দুই শীর্ষ নেতা দক্ষিণ এশিয়া এবং এর বাইরে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদের বিস্তার রুখতে তাদের জোরাল অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির বৈঠক নিয়ে বুধবার প্রচার করা যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা উল্লেখ রয়েছে। ৩৩ অনুচ্ছেদের ওই বিবৃতিতে রাজনীতি, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য, সংযুক্তি, পানিসম্পদ, উন্নয়ন–সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক, জনগণের মেলবন্ধনসহ দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার সব বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
দুই শীর্ষ নেতা পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন, অন্তর্জাল নিরাপত্তা, তথ্য যোগাযোগ, মহাকাশপ্রযুক্তি, পরিবেশবান্ধব ও সুনীল অর্থনীতির মতো নতুন ক্ষেত্রে সহযোগিতা এগিয়ে নিতে রাজি হয়েছেন।
দুই শীর্ষ নেতা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোচনা করেছেন। কোভিড-১৯ মহামারি ও বৈশ্বিক পরিস্থিতির দরুন সরবরাহব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে তাঁরা এ অঞ্চলের সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের স্বার্থে বন্ধুত্ব ও অংশীদারত্বের চেতনায় ব্যাপকতর সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
দুই শীর্ষ নেতা দ্বিপক্ষীয় ও উপ-আঞ্চলিক রেল, সড়ক ও অন্যান্য সংযুক্তির বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ভারত থেকে চাল, গম, চিনি, পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের মতো নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করার অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। ভারত নিজেদের জোগানের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ইতিবাচকভাবে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে। এ লক্ষ্যে ভারত সব রকম প্রয়াস চালাবে। সীমান্তে প্রাণহানির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় দুই শীর্ষ নেতা সন্তোষ প্রকাশ করেন। দুই পক্ষ সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন। দুই শীর্ষ নেতা দক্ষিণ এশিয়া এবং এর বাইরে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদের বিস্তার রুখতে তাঁদের জোরালো অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
এদিকে পানিসম্পদ বণ্টনে সহযোগিতার অংশ হিসেবে দুই শীর্ষ নেতা কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টনে সমঝোতা স্মারক সই হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। ত্রিপুরা রাজ্যের সেচের প্রয়োজনীয়তাকে বিবেচনায় নিয়ে ফেনী নদীর অন্তর্বর্তী চুক্তি সইয়ের জন্য বাংলাদেশকে অনুরোধ জানিয়েছে ভারত। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীরা অন্তর্বর্তী চুক্তি সইয়ের রূপরেখা তৈরি এবং তথ্য–উপাত্ত বিনিময়ের লক্ষ্যে বাড়তি কয়েকটি নদী যুক্ত করতে যৌথ নদী কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশে গঙ্গার পানির সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহারে যৌথ সমীক্ষার জন্য যৌথ কারিগরি কমিটি গঠনকে স্বাগত জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অতীতের আলোচনাগুলোর কথা স্মরণ করিয়ে তিস্তার অন্তর্বর্তী পানি চুক্তি সইয়ের জন্য বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের অনুরোধ পুনর্ব্যক্ত করেছেন। অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের অন্তর্বর্তী চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত হয়েছিল ২০১১ সালে।
প্রসঙ্গত চার দিনের সফরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে রয়েছেন। গত সোমবার তিনি দিল্লিতে যান। এ সফরে মঙ্গলবার নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৈঠক করেন।