জাল দলিল করে বাবার জমি আত্মসাতের চেষ্টা
স্টাফ রিপোর্টার: ভাই ও বোনদের ফাঁকি দিতে জাল দলিল করে বাবার জমি আত্মসাতের চেষ্টা করেছেন এক প্রতারক। এই ঘটনায় বোনের দায়ের করা মামলায় ওই প্রতারক ভাই এখন কারাগারে রয়েছেন। সে পবার দামকুড়া ইউনিয়নের কলার টিকর গ্রামের মরহুম আবু বাককার সিদ্দিকের ছেলে হাসান আলী।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, পবার দামকুড়ার কলার টিকর গ্রামের মরহুম আবু বাককার সিদ্দিক পবা উপজেলার গোসাইপুর মৌজায় আর.এস ৯ ও ১০ নং খতিয়ানের ১৩৭, ১৩৮ ও ১০৭/১৬৩ নং দাগে মোট ২.১৫০০ একর ভিটা জমি ক্রয় করেন। যার দলিল নং ১১২৮৫, তারিখ ১৪/৭/১৯৬৪ ইং এবং দলিল নং ৮৭৫৮, তারিখ ১৩/৩/১৯৭২ ইং। তিনি জীবিত থাকা অবস্থায় তার বড় ছেলে হাসান আলী বাবার সমস্ত জমিজমা দেখাশুনা করতেন। ১১/০১/২০১০ ইং তারিখে আবু বাককার সিদ্দিক এক স্ত্রী, ৩ ছেলে ও ৭ মেয়ে ওয়ারিশ রেখে মারা যান। বাবার মুত্যুর পর হাসান আলী প্রতারণা করে ২.১৫০০ একর জমি বাবাকে দাতা দেখিয়ে ১৯/৯/১৯৮০ ইং তারিখে ২৪১৪৩ নম্বরের একটি জাল দলি তৈরি করেন। ভাই ও বোনদের ফাঁকি দিতেই এই জাল দলিল তৈরি করা হয়।
এরপর গত ৯/৪/২০২১ ইং তারিখে ওই দলিল খারিজের জন্য পবা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে আবেদন করেন হাসান আলী। যার খারিজ কেস নং ১৪৩১৪/৯-১/২০-২১। বিষয়টি জানান পর হাসান আলীর বোন (মামলার বাদী) ও ছোট ভাইয়েরা সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রি অফিসে খোঁজ নিয়ে ওই দলিলের জাবেদা কপি সংগ্রহ করে তারা জানতে পারেন উক্ত ২৪১৪৩/১৯৮০ নং দলিলে দাতা মোসা: ফাতেমা বেওয়া ও মো: আব্দুল মজিদ এবং তাদের টিপ নম্বর ১৬৫৬৭ ও ১৬৫৬৮।
কিন্তু বাদীর ভাইয়ের জাল দলিলে দাতার টিপ নম্বর ১৫৫১০ দেখানো হয়েছে। অথচ ১৫৫১০ নম্বরের টিপ সম্বলিত দলিলের নম্বর ২১৮১১/১৯৮০ এবং দাতা মোসা: আলিমুন্নেছা বিবি ও গ্রহিতা মো: আব্দুস সামাদ গাজী দিং এবং বিক্রিত সম্পত্তি পবা উপজেলার নেপালপাড়া মৌজাধীন।
এছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী হাসান আলীর জন্ম তারিখ ২৫/১০/১৯৮২। অথচ তার বাবার দেয়া ওই জাল দলিল সম্পাদনের তারিখ দেখানো হয়েছে ১৯/৯/১৯৮০ ইং। কাজেই জন্মের আগে বাবার নিকট হতে জমি নেয়া বাস্তবতা বিবর্জিত এবং চরমভাবে প্রতারণার শামিল। আসামি হাসান আলী বাবার সম্পত্তি গ্রাস করার হীন উদ্দেশ্যে জাল দলিল তৈরি করে দণ্ড বিধি ৪৬৫/৪৬৭/৪৭১ ধারায় অপরাধ করেছে মর্মে তার বড় বোন জান্নাতুন নেসা বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আল মমিন বিল্লা জানান, এ মামলায় গত বুধবার আসামি হাসান আলী আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিনের জন্য আবেদন জানালে বিজ্ঞ বিচারক তার জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।