ঢাকা | অক্টোবর ১৮, ২০২৪ - ৬:৪৩ পূর্বাহ্ন

লাউয়ের মাচায় উঁকি দিচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন

  • আপডেট: Wednesday, August 31, 2022 - 11:24 pm

রফিকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ থেকে: লাউ অতি পরিচিত জনপ্রিয় সবজি। পুষ্টিবিদদের মতে এতে রয়েছে অনেক প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ। আমরা অনেকেই এটা হয়ত জানি না যে লাউতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। ২৫০ গ্রাম লাউ থেকে আমরা ২৫ এমজি ভিটামিন সি পাই, আমাদের সারা দিনে যতখানি ভিটামিন সি লাগে তার প্রায় অর্ধেক। লাউ শরীরের পুষ্টিগুন যেমন বৃদ্ধি করে তেমনি আগাম লাউ চাষ একটা লাভজনক কৃষি।

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় লাউ, শসা ও ক্ষিরার মত আগাম সবজির চাষ শুরু হয়েছে। আগাম লাউ চাষে লাউয়ের মাচায় উঁকি দিচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। লাউ চাষ করে কৃষক যেমন লাভবান হয়, তেমনি গ্রামীণ জীবনে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার গাড়াদহ ইউনিয়নের গাড়াদহ গ্রামে কৃষকের জমিতে শোভা পাচ্ছে মাচায় ঝুলে থাকা অসংখ্য লাউ। প্রতি ১’শ পিচ লাউ ২৩’শ থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। এই দাম পেয়ে কৃষক খুশি। গাড়াদহ গ্রামের লাউ চাষি আ. হাকিম জানান, গত বছর তিনি ২০ শতাংশ জমিতে লাউয়ের চাষ করে ৮০ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন।

তিনি আরো বলেন, জমি প্রস্তুত করা থেকে মাচা তৈরি শ্রমিকসহ অন্যান্য খরচ মিলে আমার প্রায় ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল। সবমিলে আমার ঐ জমি থেকে আমি প্রায় ৬০ হাজার টাকা লাভ করেছিলাম। এ বছর আমি ৭২ শতাংশ জমিতে লাউ চাষ করেছি। যদি আবহাওয়া ভালো থাকে তাহলে আশাকরি ১ লাখ থেকে দেড় লাখ টাকার মত লাভ করতে পারবো।

লাউয়ের জমি পরিদর্শনে এসে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ এহসানুল হক বলেন, আমরা চাষীদের উচ্চ মূল্যের ফসলের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। যাতে কৃষক অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে। লাউ বিক্রির পাশাপাশি লাউয়ের কচি ডগাও শাক হিসেবে বিক্রি করছে। বর্তমানে আধুনিক উপায়ে আগাম লাউ চাষ পদ্ধতি এর মাধ্যেমে ফলন বৃদ্ধি পাচ্ছে ও কৃষক লাভবান হচ্ছে।

উপজেলার গাড়াদহ ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন জানান, উপজেলায় এ বছর ৬ হেক্টর জমিতে লাউয়ের চাষ হয়েছে। আগামী বছর এর চাষ আরো বাড়বে। উৎপাদিত লাউ শাহজাদপুরের বিভিন্ন হাটবাজারের পাশাপাশি অন্য এলাকাগুলোতে বিক্রি হচ্ছে।

শাহজাদপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোহাম্মদ আব্দুস ছালাম বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষকদেরকে উচ্চ মূল্যের ফসলের উৎপাদনে নানাভাবে উদ্বুদ্ধ করছে। সেই সাথে তা যেন নিরাপদ থাকে সেজন্য আমরা কৃষকের মাঠে “পরিবেশ বান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন” প্রকল্প থেকে প্রদর্শনী দিতেছি। তাদেরকে ভার্মি কম্পোষ্ট, সেক্স ফেরোমেন ফাঁদ, আঠালো ফাঁদ ইত্যাদির ব্যবহার শিখিয়েছি। কৃষক এগুলোর প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে বলে তিনি মনে করেন।