ঢাকা | জুলাই ২৬, ২০২৪ - ১০:৩২ পূর্বাহ্ন

এসএসসি পাসেই এফসিপিএস ডাক্তার!

  • আপডেট: Tuesday, August 30, 2022 - 3:39 pm

অনলাইন ডেস্ক: নাটোরের বড়াইগ্রামে নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় আব্দুল করিম লোহানী (৫৫) নামে এসএসসি পাস এক ভুয়া চিকিৎসককে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার রাতে ওই চিকিৎসককে আটক করা হয়। পাশাপাশি উপজেলার জোনাইল বাজারে ‘জাহাঙ্গীর হাসপাতাল’ সিলগালা করা হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. খুরশীদ আলম বাদী হয়ে রাতেই শিশু মৃত্যু ও ভুয়া চিকিৎসক সাজার অভিযোগে আব্দুল করিম লোহানী এবং হাসপাতাল মালিক জাহাঙ্গীর আলমের নামে মামলা দায়ের করেন।

উপজেল স্বাস্থ্য কর্মকর্তা খুরশীদ আলম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারেন উপজেলার জোনাইল বাজারে ‘জাহাঙ্গীর জেনারেল হাসপাতালে’ সোমবার সকালে ভুল অস্ত্রপচারের কারণে এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে এবং বিকেলে পুনরায় ওই ভুয়া চিকিৎসক এক রোগীর অস্ত্রোপচার করছেন। পরে সেখানে অভিযান চালানো হয়। এসময় অস্ত্রোপচারকারী ডা.আব্দুল করিম লোহানী নামে একজন চিকিৎসকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পরে তার নামে থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

উপজেল স্বাস্থ্য কর্মকর্তা খুরশীদ আলম, এই হাসপাতালটি একই অভিযোগে এর আগেও বন্ধ করা হয়েছিল। যেহেতু এটি লাইসেন্সভুক্ত তাই কিছু শর্তে খুলে দেওয়া হয়েছেছিল। কিন্তু এখন লাইসেন্স বাতিলসহ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

লোহানীর গ্রামের বাড়ী উপজেলার চকপাড়া এলাকায় স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ২৫ বছর আগে বড়াইগ্রাম প্রাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে সেনাবাহিনীর সৈনিকে পদে যোগ দেন আব্দুল করিম। অসদাচরণের কারণে কিছুদিন পরেই তিনি চাকরিচ্যুত হন। পরে তিনি শ্বশুরবাড়ি এলাকায় সদর থানার দত্তোপাড়া এলাকায় বসবাস শুরু করেন। তার কিছুদিন পরে বগুড়ায় যান কর্মসংস্থানে উদ্দেশ্যে। এরপর তিনি রাতারাতি চিকিৎসক বনে যান। একই সাথে বিভিন্ন এলাকায় নিজেকে চিকিৎসক হিসেবে প্রচার শুরু করেন। তার নেমপ্লেটে লেখা দেখা যায় , এমবিবিএস (রাজ), বিসিএস (স্বাস্থ্য), পিজিটি (সার্জারী), পিজিটি (গাইনী এন্ড অব্স), সিএমইউ (আল্ট্রা) ও প্রাক্তন জেনারেল সার্জন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

স্থানীয়দের দাবি, এর কোনটিই সঠিক নয়। প্রকৃত হলো তিনি বড়াইগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেছেন। এর বাইরে কোন পড়া-লেখা নাই। আরও জানা যায়, আব্দুল করিম লোহানী কিছুদিন আগেও রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় একজন রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।

আব্দুল করিমের ভাই ফিরোজ আহম্মেদ জানান, তিনি যখন ছোট তখন তার ভাই সেনাবাহিনীতে চাকুরি করতেন। সেই চাকুরি চলে যাওয়ার পর থেকে ভাই নাটোরে থাকেন। ভাই মেডিকেলে লেখাপড়া করেছেন এমনটা তার জানা নাই।

গ্রেপ্তারের আগে আব্দুল করিম লোহানী জানান, সোমবার সকালে রোগীর অস্ত্রোপচার এবং এনেন্থেসিয়া তিনি নিজেই করেছেন। বিকেলেও তিনি অস্ত্রোচার করেছেন। তিনি বলেন, শিশু মারা যেতেই পারে। আমি অবসরপ্রাপ্ত ডাক্তার।

বড়াইগ্রাম থানারেওসি আবু সিদ্দিক বলেন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তার মাধ্যমে খবর পেয়ে একজন ভুয়া ডাক্তারকে আটক করা হয়। পরে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. খুরশীদ আলম ‘জাহাঙ্গীর হাসপাতালে’র মালিক জাহাঙ্গীর আলম ও আব্দুল করিম লোহানীর নামে মামলা দায়ের করেছেন। এখন হাসপাতাল মালিককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সোনালী/জেআর