পরিকল্পিত নগর পরিবহন সময়ের দাবি
রাজশাহীকে অটোরিকশার নগরী বলা যায়। নগরজুড়ে ব্যাটারিচালিত অটো চলাচলে যাতায়াতের এমন সুবিধা অন্যত্র কমই দেখা যায়। ভাড়াও কম। সর্বনিম্ন ভাড়া ৫ টাকা। চালক-মালিকদের ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে সামান্য বাড়লেও যাত্রীদের কাছে তা সাশ্রয়ীই বলা যায়। বিকল্প কাজের ব্যবস্থা না থাকায় সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সিটি কর্পোরেশন নিয়ম করে এক বেলা অটো চালানোর বিধিনিষেধ দেয়ায় চালকদের আয় কিছুটা হলেও কমে গেছে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির চাপে তাদের দুর্ভোগও বেড়েছে। এমন অবস্থায় হঠাৎ করেই ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে নগরীতে অটো চলাচল বন্ধ হয়ে যায় গত রবিবার। পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই অটো বন্ধ থাকায় নগরবাসীর দুর্ভোগের সীমা ছিল না।
এর আগে অটোচালক-মালিক প্রতিনিধিদের সাথে নগর কর্তৃপক্ষ বসে ভাড়া, সময় সীমা ইত্যাদি নির্ধারণ করে। পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে তারা উদাসীন না থাকলে অঘোষিত অটো ধর্মঘটের মুখে চরম দুর্ভোগে পড়তে হতো না নগরবাসীকে।
বিভাগীয় নগরী রাজশাহীর নজরকাড়া উন্নয়ন অস্বীকারের সুযোগ নেই। বহুতল ভবন, প্রশস্ত রাস্তা, সবুজায়ন, আলোকায়ন কিছুরই অভাব নেই। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতে বেড়েছে অটোরিকশা। অটোতে চড়ে সর্বত্র যাওয়ার এমন সুযোগ কম শহরেই আছে। তবে এই ছোট গাড়ি যে নগর পরিবহনের চাহিদা পূরণ করতে পারে না সেটা বুঝিয়ে দিল এই হঠাৎ অটোধর্মঘট।
অটোধর্মঘটের মুখে সিটি সার্ভিস হিসেবে হঠাৎ করে বাসও নেমেছে নগরীতে। অনির্ধারিত হলেও বাস সার্ভিসে আশান্বিত হয়েছে নগরবাসী। প্রধান প্রধান সড়কে সিটি সার্ভিস চালুর পাশাপাশি সংযোগ সড়কে অটোরিকশা চলাচল অতি সহজেই নগরবাসীর যাতায়াতের চাহিদা মেটাতে পারে।
তবে এজন্য সমন্বিত পরিকল্পনা প্রয়োজন। বাস্তবসম্মত রুট, ভাড়া ও স্ট্যান্ড নির্ধারিত থাকলে এবং নিয়মিত নজরদারি নিশ্চিত হলে এতে কারও আপত্তি থাকতে পারে না। বিষয়টি নিয়ে নগর কর্তৃপক্ষ, বিআরটিএ, ট্রাফিক পুলিশ ও পরিবহন মালিক-শ্রমিক পক্ষ ভেবে দেখতে পারেন। রাজশাহীতে এখন পরিকল্পিত নগর পরিবহন সময়ের দাবি। চলমান বিশৃঙ্খলা কারও কাম্য হতে পারে না।