সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলে জমি পেল ১৪ শিল্প প্রতিষ্ঠান
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১৪টি শিল্প প্রতিষ্ঠান জমি বরাদ্দ পেয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব প্রতিষ্ঠানকে জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
একই অনুষ্ঠানে জাপান ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের (জেডিআই) সঙ্গে সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলের ‘ডিটেইল ইঞ্জিনিয়ারিং প¬্যান’ চুক্তি সই হয়েছে। যমুনা নদীর ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্তে সিরাজগঞ্জ জেলার সয়দাবাদ উপজেলা ও বেলকুচি উপজেলায় ১ হাজার ৩৫ একর জমির ওপর গড়ে উঠছে দেশের সবচেয়ে বড় এই বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল। ২০১৯ সালে সেখানে ভূমি উন্নয়নের কাজ শুরু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো গতকাল বিনিয়োগকারীদের জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বেজা ২০১৮ সালে সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলকে চূড়ান্ত লাইসেন্স দেয়। নয়টি প্রতিষ্ঠান ও দুজন ব্যক্তি উদ্যোক্তা যৌথভাবে এই প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় আছেন। এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে পর্যায়ক্রমে পাঁচ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলে যেসব প্রতিষ্ঠান জমি বরাদ্দ পেয়েছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার ৫ একর, কন্টিনেন্টাল গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিজ ৮ একর, ডায়নামিক ড্রেজিং ২ একর, নিট এশিয়া ৮ একর, এম কে কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ ৪ একর, রাতুল ফেব্রিকস ৫ একর।
এ ছাড়া অ্যাকটিভ কম্পোজিট মিলস ২ একর, রাইজিং হোল্ডিংস ১০ একর, রাইজিং স্পিনিং মিলস ৫ একর, যশোর ফিড ১৬ একর, ম্যারিনা প্রোপার্টি ২১ একর, টেক্সট টাউন ৫ একর, এস্কোয়ার অ্যাকসেসরিজ ১২ একর এবং এস্কোয়ার ইলেকট্রনিকস ৭ একর জমি বরাদ্দ পেয়েছে। অর্থনৈতিক অঞ্চলটিতে ভূমি উন্নয়নের কাজে প্রকৌশলগত সহায়তা দিচ্ছে জেডিআই।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে বেসরকারি খাতে ব্যাপক শিল্পায়নের বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে বেজা সর্বাত্মক সহায়তা করতে প্রস্তুত। তিনি আরও বলেন, উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বারে অবস্থিত এই বৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল সিরাজগঞ্জ জেলার আর্থসামাজিক পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন করবে, যার ছোঁয়া লাগবে সমগ্র উত্তরাঞ্চলে। সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সফলতা বেসরকারি শিল্পায়নের ক্ষেত্রে নতুন দিক উন্মোচন করবে। ফলে ওই এলাকা দেশের মূলধারার অর্থনীতির সঙ্গে স¤পৃক্ত হবে।
সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলের চেয়ারম্যান মতিন চৌধুরী জানান, সেখানে বস্ত্র, তৈরি পোশাক, পাটজাত দ্রব্য, ওষুধ, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, কাগজ, আসবাবপত্রসহ নানাবিধ পণ্য উৎপাদনের জন্য বিনিয়োগ প্রস্তাব আসছে। বিনিয়োগকারীদের জন্য বিদ্যুৎ, পানি ও অন্যান্য পরিষেবা নিশ্চিত করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে সেখানে কেন্দ্রীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (সিইটিপি), ডরমিটরি, স্বাস্থ্যসেবা ও ডে কেয়ার কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। থাকবে বিনোদন সুবিধা। সব মিলিয়ে এটি একটি বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
অর্থনৈতিক অঞ্চলটির পরিচালক শেখ মনোয়ার হোসেন বলেন, উত্তরবঙ্গের মানুষের কাজের একটি ক্ষেত্র তৈরি হলো। এই অর্থনৈতিক অঞ্চলের মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলের আর্থসামাজিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটবে।