ঢাকা | ডিসেম্বর ২২, ২০২৪ - ৩:৩৬ অপরাহ্ন

‘এমপি শিবলী সাদিক ও তার চাচার দাপটে আমরা দিশেহারা’

  • আপডেট: Wednesday, August 24, 2022 - 10:21 pm

 

অনলাইন ডেস্ক: দিনাজপুরে সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক ও তার চাচা স্বপ্নপুরীর মালিক দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে উপজাতিদের জমিজমা দখলের অভিযোগ উঠেছে। জীবন-সম্পদ রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছে ভূমিহারা নির্যাতিত পরিবারের সদস্যরা।

বুধবার বেলা ১১টার দিকে দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সম্মুখ সড়কে ভূমিহারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন আয়োজন করে।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সারাদেশে আদিবাসীদের অস্তিত্ব আজ সঙ্কটাপন্ন। পদে পদে আমাদের নির্যাতন-নিপীড়ন করা হচ্ছে এবং জাল জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে জমিজমা কেড়ে নেয়া হচ্ছে। স্থানীয় সংসদ শিবলী সাদিক ও তার চাচা দেলোয়ার হোসেন একজন ভূমিদস্যু। তাদের ভূমিদস্যুতার গ্রাসে দিনাজপুরের স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পটের আশপাশের এলাকায় বসবাসকারী আদিবাসী ও অন্যসব পরিবারগুলো জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে।

লিখিত অভিযোগে বলা হয় এমপি শিবলী সাদিক ও তার চাচা ভূমিদস্যু দেলোয়ার হোসেনের অধীনস্থ গুন্ডা বাহিনীর সদস্য মনোয়ার, আমিনুল, আনার, জাহাঙ্গীর, এমপির পিএস সামশুজ্জামান ও এমপির ম্যানেজার মুক্তার আলীর নেতৃত্বে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দাগ-খতিয়ানের ২০ দশমিক ৫৬ একর জমি জবরদখল করা হয়েছে। দখলকৃত জমির মধ্যে ৩৩ শতক কবরস্থান, ১৪ শতক কালি মন্দির, ১৪ শতক জাহের থান এবং ২ একর জমি পুকুর বানিয়ে জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে এমপি ও তার ক্যাডার বাহিনী।

‘এসব বিষয়ে মুখ খুললে গনেশ হেমরম ও তার ভাতিজা উকিল হেমরমকে প্রাণনাশের হুমকি দেয় তারা। একই এলাকার খুকুমণি হেমরমের ২ দশমিক ৩২ একর জমিসহ ঘরবাড়ি দখল করে নিয়েছে এমপির চাচা দেলোয়ার হোসেনের গুন্ডা বাহিনী।’

এ ব্যাপারে দিনাজপুর আদালতে ১২২/১৪ মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় দেলোয়ার হোসেন পরিকল্পিতভাবে তারই কর্মচারী আলবেরী কোস মাহালীকে রিমুট হিসেবে ব্যবহার করে স্বয়ং জমিতে অবস্থান নিয়েছে। তারা লুইস হাসদার ১ দশমিক ৬১ একর জমি জবরদখল করে নেয় (মামলা নং ২৯৯/২১ ও বাটোয়ারা মামলা নং ১৯/২১ চলমান)। এছাড়াও রবেন মাড্রি ২১ দশমিক ৮ একর (আদালতে মামলা নং ২১৮/১০ ও ৫/২০) এবং আলতাফ আলীর কয়েকটি দাগের ১০ দশমিক ৭১ একর ও ১ দশমিক ৫০ একর জমি এমপি ও তার গুন্ডা বাহিনী জোবরদখল করে নিয়েছে। এ বিষয়েও আদালতে মামলা চলমান রয়েছ।

বক্তারা আরও বলেন, ইতিপূর্বে বিষয়গুলো উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেও আমরা কোনো সুফল পাইনি। এ বিষয়ে আমরা সরকারের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনপূর্বক নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছি। এমপি এবং তার চাচার ক্ষমতার দাপটে আমরা পরাস্ত হয়ে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছি। আমরা এই দেশে জীবন ও সম্পদ নিয়ে নিরাপদে বসবাসের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সাহায্য চাই।

সেখানে উপস্থিত জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেনের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সরকারের কাছে নির্যাতন-নিপীড়ন ও জমি দখল বন্ধসহ সমস্যার সমাধান করে আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠনসহ অন্যান্য দাবিগুলো মেনে নেয়ার আহ্বান করছি। আদিবাসী সম্প্রদায়ের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ দীর্ঘদিন ধরেই এ আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে আসছে।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির নেতা আনিসুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সুফল হেমরম, উকিল হেমরম, খুকুমণি হেমরম, লুইস হাসদা, রবেন মার্ডি, আফতাব ও গনেশ। মানববন্ধন শেষ পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল সহকারে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করতে যান।