ঢাকা | জুলাই ২৭, ২০২৪ - ৬:৩৬ পূর্বাহ্ন

রাবিতে ছাত্র-শিক্ষক নির্যাতন দিবসে আলোচনা সভা

  • আপডেট: Wednesday, August 24, 2022 - 11:04 pm

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ছাত্র-শিক্ষক নির্যাতন দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাদের কারাবরণ ও নির্যাতনের প্রতিবাদের স্মরণে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসটি পালন করে।

বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সাংসদ মো. আয়েন উদ্দিন বলেন, ‘সেই সরকার কোন গণতান্ত্রিক শক্তিতে আসেনি। তারা অশুভ শক্তির মাধ্যমে বন্দুকের নলের জোরে ক্ষমতায় আসে। তারা চাচ্ছিল জিয়া, এরশাদের মতো নতুন একটি দল তৈরি করে ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে। আমরা তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে নেত্রীর মুক্তির দাবিতে মিছিল করি। আমরা কেবল তত্ত্বাবধায়ক সরকার হটানোর জন্য আন্দোলন করিনি। আমাদের মূল চেতনা ছিল জাতির জনকের কন্যার মুক্তি।’

সভায় ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মলয় ভৌমিক বলেন, ‘পাকিস্তান আমল থেকে প্রতিটি সামরিক শাসনের প্রথম প্রতিবাদ হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এই বিষয়টা সামরিক শাসকরা ভালোভাবেই মাথায় রাখে। ২০০৭ সালেও সেনাশাসিত সরকারের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিবাদ করেছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। বঙ্গবন্ধুকন্যাকে গ্রেপ্তারের পর প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ সভা করেছিল। সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আমরা শিক্ষকরা ক্যাজুয়াল লিভের মাধ্যমে বিভাগ থেকে গণছুটি নিয়েছিলাম।’

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘সেই সময়ে আমাদের সহকর্মীরা অসাধারণ সাহসের পরিচয় দিয়েছিলেন। আমাদের ছাত্ররা অসম্ভবকে সম্ভব করেছিল। আমরা শিক্ষকরা গুলি খেতে পারি, গ্রেপ্তার হতে পারি, এমনকি চাকরিও চলে যেতে পারে, এসব কথা মাথায় রেখেও জরুরি অবস্থার মধ্যে প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর জারি রাখতে মৌন মিছিল করেছিলাম। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সর্বোচ্চ সম্মান পাওয়ার কথা, সেখানে পুলিশ, সামরিক বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে তাদের নির্মম নির্যাতন করা হয়েছিল।’

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার তো আর তখন এমনি এমনি আসেনি। তাদের প্ল্যান ছিল। যার মধ্যে প্রথমটিই হলো বিশ্ববিদ্যালয়কে আয়ত্তে নিয়ে নেওয়া।’

সভা প্রধানের বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ‘আত্ম-উপলব্ধিই আজকের দিনের মূল উদ্দেশ্য। সেদিন আমরা কেউ কোন কিছু পাওয়ার কথা ভাবিনি। কেউ জানতাম না যে একদিন আমাদের কেউ উপাচার্য হবে, কেউ সাংসদ হবে। ২১ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ঘটনা ছিল ইতিহাসের অনিবার্য এক ঘটনা।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. সাখাওয়াত হোসেন, জনসংযোগ দপ্তরের উপ-প্রধান তথ্য অফিসার মো. সাদেকুল ইসলাম বক্তৃতা করেন। এতে কারাবরণকারী ও নির্যাতনের শিকার শিক্ষক, কর্মকর্তাদের সম্মানস্বরূপ উপহার দেওয়া হয়।