ঢাকা | মে ১, ২০২৫ - ১২:৪১ পূর্বাহ্ন

নতুন অফিসসূচির প্রথম দিনেই সড়কে ভোগান্তি

  • আপডেট: Wednesday, August 24, 2022 - 1:39 pm

অনলাইন ডেস্ক: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য পরিবর্তিত অফিসসূচির প্রথম দিনেই রাজধানীর সড়কে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন অফিসগামী যাত্রীরা। বুধবার সকালে প্রায় প্রতিটি বাসে যাত্রীদের দাঁড়িয়ে যেতে দেখা গেছে। অনেককে বাসের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতেও দেখা যায়। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে সকাল সাতটা থেকে আটটা পর্যন্ত অবস্থান করে দেখা গেছে, নতুন সময়ে অফিস ধরতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ব্যক্তিগত গাড়ি, স্টাফ বাস ও মোটরসাইকেলে করে অফিসে যাচ্ছেন। এর আগে সড়কে সকাল ৮টার পর যানজট দেখা যেত। তবে নতুন অফিসসূচির প্রথম দিন আজ সকাল ৭টার দিকেই দেখা গেছে যানজট।

মগবাজার মোড়ের অদূরে হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতাল এলাকায় দায়িত্ব পালনরত ট্রাফিক পুলিশের সহকারী কমিশনার রেফাতুল ইসলাম সমকালকে বলেন, অফিসের সময়সূচি এগিয়ে আনায় যানজটও আগেই শুরু হয়েছে। যানবাহনের চাপ অন্যদিনের চেয়ে কিছুটা বেশি দেখা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি মাথায় রেখে ট্রাফিক পুলিশ আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছে। আধাঘন্টা এগিয়ে আজ সকাল ৬টা থেকেই সড়কে কাজ করছেন ট্রাফিক সদস্যরা। একইভাবে তদারকির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারাও সকাল সাড়ে ৭টার বদলে আধাঘন্টা আগে থেকে কাজ করছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, মগবাজার-সাতরাস্তা উড়ালসড়কের দুই প্রান্তে যানবাহনের ব্যাপক চাপ। থেমে থেমে ধীর গতিতে এগুচ্ছে যানবাহন। সাতরাস্তা থেকে মহাখালীমুখী সড়কে সব যানবাহন যেন স্থবির হয়েছিল। মিন্টো রোড সার্কেল থেকে ডিএমপি সদর দপ্তরের সামনের সড়ক হয়ে কাকরাইল মোড় পর্যন্ত দেখা যায় তীব্র যানজট। সকালে অফিস ও স্কুল শুরুর সময়টায় এই যানজট বেইলি রোডসহ আশেপাশের এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়ে।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল মোড়ে দায়িত্ব পালনরত ট্রাফিক সার্জেন্ট জাকির হোসেন বলেন, সকাল ৭টা থেকে ক্লাস শুরু হলেও আজ সাড়ে ৬টা থেকেই যানবাহনের চাপ ছিল এই এলাকায়। সকাল সোয়া ৮টা পর্যন্ত ছিল একই অবস্থা। এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। প্রথম শিফটের ছুটি ও পরের শিফটের শুরুর সময়টায় বেলা সোয়া ১১টার দিকে আবার চাপ বাড়তে শুরু করেছে।

আজ সকালে সড়কে যে পরিমাণ বাস ছিল, তার প্রায় প্রতিটিতে যাত্রীরা দাঁড়িয়ে গেছেন। বাসে নারীদেরও দাঁড়িয়ে যেতে দেখা গেছে। বাসের জন্য অনেক সময় অপেক্ষা করতে দেখা গেছে অফিসগামী যাত্রীদের। নির্দিষ্ট গন্তব্যে বাস পেতেও সমস্যায় পড়তে হয়েছে অনেককে।

এদিকে আদালতও আজ থেকে সকাল আটটায় খুলছে। ফলে, আইন পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিরাও সকালে বের হয়েছেন। আকাশ সাহা নামে এক আইনজীবী বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে এটি খুবই ভালো উদ্যোগ। তবে অফিস টাইম এগিয়ে আনার আগে কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই সড়কে ভোগান্তির কথাটাও আগে চিন্তা করা উচিত ছিল। ১৫ থেকে ২০ মিনিট ধরে দাঁড়িয়ে আছি। বাসের দেখা নেই।

প্রসঙ্গত, আজ থেকে দেশের সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অফিস সকাল আটটা থেকে শুরু হয়েছে। নতুনসূচিতে এ অফিস চলবে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। সাপ্তাহিক ছুটি এখনকার মতো শুক্র ও শনিবারই থাকবে। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে অফিসের নতুন সময়সূচির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছিলেন। তিনি জানান, বুধবার থেকে সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত অফিস সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত হবে। নির্দেশনা দিয়ে দেওয়া হয়েছে, সব সরকারি অফিসগুলোতে কোথাও কোনো পর্দা টাঙানো থাকবে না। এয়ারকুলারও যথাসম্ভব কম ব্যবহার করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এ সিদ্ধান্তের কারণে দু’টি সুবিধা হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। একটা হলো বিদ্যুৎ সাশ্রয়, সঙ্গে ট্রাফিক জ্যামও কমবে। তিনি বলেন, সারা দেশে আমনের সেচ নিশ্চিত করতে সামনে ১২ থেকে ১৫ দিন মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হবে। যাতে সেচে কোনো অসুবিধা না হয়। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে আসা পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে বলেও আভাস দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

সোনালী/জেআর

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS