লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাই, ছয় ডাকাত গ্রেপ্তার

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে পথরোধ করে ৩৪ লাখ ৭২ হাজার টাকা ছিনতাই করেছে সশস্ত্র যুবকরা। এই ঘটনার ছিনতাইয়ে যুক্ত ৬ যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত রোববার ভোরে নগরীর শাহমখদুম থানার পোস্টাল অ্যাকাডেমির সামনে এই ঘটনা ঘটে। যুবকদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ডাকাতির ১৬ লাখ ৮৪ হাজার ৯৪০ টাকা। জব্দ করা হয়েছে ডাকাতিতে ব্যবহৃত অ্যাম্বুলেন্সটি।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার পূর্ব মোল্লাপাড়ার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আশিক ইসলাম (২৪), একই এলাকার আজাদ আলীর ছেলে হৃদয় (২৪), রাজপাড়া থানার আলীগঞ্জ মধ্যপাড়ার আসলাম আলীর ছেলে আব্দুর রহমান (২১), একই এলাকার আসলামের ছেলে আব্দুর রহিম (২০), ডিঙ্গাডোবা ঘোষমহালের লোকমান আলীর ছেলে রিকো ইসলাম (২১) ও চন্ডীপুর সুফিয়ানের মোড়ের মৃত এবাদুলের ছেলে ইয়ামিন (২০)।
সোমবার বেলা ৩টার দিকে গ্রেপ্তারকৃতদের নগর পুলিশ সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়। এ সময় আরএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী বলেন, রাজশাহীর ৮৫ জন পান ব্যবসায়ীর একটি সমিতি জেলার দুর্গাপুর থানার দাওকান্দি বাজারে পান ব্যবসা করে আসছে।
এই সমিতির সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পান কিনে নিয়ে রাজধানী ঢাকার শ্যামবাজারের বিভিন্ন আড়তে বিক্রি করেন। রোববার ভোর সোয়া ৫টার দিকে সমিতির পান বিক্রির ৩৪ লাখ ২৭ হাজার টাকা নিয়ে নগরীর শিরোইল বাস টার্মিনালে পৌঁছান রায়হান আহম্মেদ (২৬), শহিদুল ইসলাম (৩০) ও আমিনুল ইসলাম (২৭)। সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া করে দাওকান্দি বাজারের উদ্দেশে রওনা হন তারা। পেছন থেকে তাদের সিএনজি অটোরিকশাকে অনুসরণ করছিল একটি নীল রংয়ের অ্যাম্বুলেন্স। ভোর সাড়ে ৫টায় নগরীর শাহমখদুম থানার পোস্টাল অ্যাকাডেমির সামনে পৌঁছালে পেছনে থাকা সেই অ্যাম্বুলেন্সটি হঠাৎ সামনে এসে তাদের গতিরোধ করে।
সিএনজি অটোরিকশাটি থামার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্স থেকে ৬-৭ জন ডাকাত বের হয়ে চায়নিজ কুড়াল, হাসুয়া, চাকু, ছোরা ও লোহার রড নিয়ে তাদের ঘিরে ধরে। মারধর করে সঙ্গে থাকা ৩৪ লাখ ২৭ হাজার টাকা ডাকাতি করে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আমচত্বরের দিকে পালিয়ে যায়। পান ব্যবসায়ী এখলাস মোল্লা এব্যাপারে অভিযোগ দেয়।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, আরএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহায়তায় সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অ্যাম্বুলেন্সসহ আসামিদের শনাক্ত করে পুলিশ। পরে তাদের অবস্থানও নিশ্চিত হয়। নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ৬ জনকে। তাদের কাছে ডাকাতি হওয়া ১৬ লাখ ৮৪ হাজার ৯৪০ টাকা পাওয়া গেছে। ডাকাতিতে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারসহ অ্যাম্বুলেন্সটি জব্দ করা হয়েছে।
ডাকাতি হওয়া বাকি টাকা উদ্ধার এবং এই কাণ্ডে যুক্ত অন্যান্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার। এ ছাড়া গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।