রাবিতে শিক্ষার্থী নির্যাতন: ছাত্রলীগ নেতার বহিষ্কারের দাবি
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী সামছুল ইসলামকে আবাসিক হলে আটকে রেখে শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ভাস্কর সাহাকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
রোববার বিশ^বিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবন চত্বরে আয়োজিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে তারা এ দাবি জানান। বিশ^বিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ আয়োজিত এই মানববন্ধনে স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরাও সংহতি জানিয়ে অংশ নেন।
কর্মসূচিতে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা রাজনীতিতে অধিক মনযোগী সেজন্য ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে চায় না। এই পরিস্থিতির কারণেই শিক্ষার্থীরা নানা ধরনের অপকর্মে জড়াচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখানে ব্যর্থ। ঘটনার পর ভুক্তভোগীকে আবার ওই হলেই রাখা হয়েছে। তার কাছে গিয়ে ছাত্রলীগের ছেলেরা আবার কথা বলেছে। এখানে তার এই নিরাপত্তাটুকু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দিতে পারেনি। আমরা চাই, দ্রুতই জড়িত ছাত্রলীগের নেতাকে হল থেকে বহিষ্কার করা হোক। তদন্ত সাপেক্ষে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কারেরও দাবি জানান তিনি।
বিভাগের শিক্ষার্থী টিপু সুলতান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিটা দিন অনিরাপত্তার মধ্যদিয়ে পার করছে। হলগুলো শিক্ষার্থীদের নিজ বাড়ি। নিজের বাড়িতেই যদি নিরাপত্তা না থাকে তাহলে আর কোথায় গিয়ে নিরাপত্তা দাবি করব? যেকোন ঘটনা ঘটলে প্রত্যেকটি ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন হয় কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। তদন্তের ফল আমরা দেখি না। বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ শিক্ষার্থীদের নেই, এটি হয়ে গেছে একটা নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যদি আজ এই অবস্থা হয় তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যাবে কোথায়?
কর্মসূচিতে স্টুডেন্ট রাইটস এসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাহিদ হোসেন বাবু বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সমঝোতার নাটক সাজানো বন্ধ করতে হবে। আপনারা যদি এই ঘটনাগুলোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নেন তাহলে এগুলো চলতেই থাকবে। এজন্য আপনাদের অবশ্যই এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। আজ সামছুল ইসলামের সাথে যা হয়েছে আমরা চাই না এরকম ঘটনা আর কারো সাথে ঘটুক। তাই বলতে চাই ভাস্কর সাহার ছাত্রত্ব বাতিল করে নজির স্থাপন করুন। মানববন্ধনে অর্থনীতি বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার সামছুল ইসলাম ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর অভিযোগ করেন মতিহার হল ছাত্রলীগ নেতা ভাস্কর সাহা তাকে রুমে ডেকে গলায় ছুরি ধরে আনুমানিক ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সাংবাদিকদের বিষয়টি জানাতে চাইলে রড ও স্ট্যাম্প দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। এই বিষয়টি কাউকে জানালে আবরারের যে অবস্থা হয়েছে সেই অবস্থা হবে বলেও হুমকি দেয়।