ঢাকা | ডিসেম্বর ২২, ২০২৪ - ১২:০৭ অপরাহ্ন

রুমে নিয়ে শিক্ষার্থীকে মারধর টাকা ছিনতাই করলো ছাত্রলীগ নেতা

  • আপডেট: Saturday, August 20, 2022 - 11:16 pm

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহার বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীকে রুমে ডেকে নিয়ে মারধর ও ২০ হাজার টাকা কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার রুমে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রাত আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূরের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। শারীরিকভাবে নির্যাতনের ঘটনায় বিশ^বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

অভিযুক্ত ওই নেতা ভাস্কর রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর অনুসারী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এবং মতিহার হলের ১৩২ নম্বর রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী সামছুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও মতিহার হলের ১৫৯ নম্বর রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী।

লিখিত অভিযোগে সামছুল ইসলাম জানান, তিনি মতিহার হলের ১৫৯ নং রুমের একজন আবাসিক শিক্ষার্থী। পড়াশোনার পাশাপাশি মোবাইল সার্ভিসিং করে জীবিকা নির্বাহ করেন এবং পরিবার চালান। গত ১৫ আগস্ট মতিহার হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহা তাকে ফোন দিয়ে দেখা করার কথা বলে। তার কাছে গেলে সে চাঁদা দাবি করে।

তারপর টাকার জন্য প্রতিনিয়ত ফোন দেয় এবং মানসিকভাবে টর্চার করে। অর্থ দিতে অক্ষম হওয়ায় শুক্রবার বিকাল ৩টায় ভাস্কর সাহার রুমে ডেকে নেন। সেখানে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত আটকে রেখে রড ও স্টাম্প দিয়ে নির্যাতন করে। তিনি বলেন, ভাস্কর আমাকে চাকু ঠেকিয়ে ২০ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। বিষয়টি কাউকে জানালে আবরারের মতো আমার অবস্থা করার হুমকি দেয়। এমতাবস্থায় আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

মারধর ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে মতিহার হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহা বলেন, তার সঙ্গে আমার এধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমি জানি, সে আমার হলে মোবাইল সার্ভিসিং করে। মোবাইল ঠিক করার জন্য আমার দুই ছোট ভাই তাকে ফোন দেওয়ার কথা বলে। পরে সে বিষয়ে তার সঙ্গে কথা হয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, বিষয়টা আমরা দেখছি। সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেবো। জানতে চাইলে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূর বলেন, একজন ছাত্র একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তাকে শারিরীক ভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। আমি তার শরীরের আঘাতের চিহ্ন দেখেছি। অভিযুক্ত শিক্ষার্থী একটি ছাত্র সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত বলে জানতে পেরেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুসারে এ ঘটনার ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ইলেক্ট্রিকাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আরিফুর রহমানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সহকারী প্রক্টর ফার্মেসি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আল মামুন ও ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জহুরুল আনিস। তদন্ত শেষে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রমাণ মিললে কোনো ছাড় দেয়া হবে না বলে জানান প্রক্টর।