বিদেশিদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠকে নিষেধাজ্ঞা মিয়ানমার জান্তার
অনলাইন ডেস্ক: মিয়ানমারের রাজনৈতিক দলগুলোকে বিদেশি ব্যক্তি ও আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বিধিনিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির ক্ষমতাশীন সামরিক সরকার। আগামী বছরে সম্ভাব্য নির্বাচনকে সামনে রেখে এই বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জান্তা বাহিনী।
শনিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। জান্তা গঠিত ইউনিয়ন ইলেকশন কমিশন গতকাল শুক্রবার বলেছে, বিদেশি ব্যক্তি ও সংগঠনগুলোর সঙ্গে যদি বৈঠক করতে চায়, সে জন্য দেশের নিবন্ধিত ৯২টি রাজনৈতিক দলকে অনুমতি নিতে হবে।
এক বিবৃতিতে নির্বাচন কমিশন বলেছে, রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত আইনের প্রতি সম্মান জানানো। কোনো দল যদি এতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তাদের নিবন্ধন বাতিল করা হবে। এছাড়াও বিদেশি দূতাবাস ও আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে ২০২০ সালের নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগও করেছে কমিশন ।
মিয়ানমারের রাজনৈতিক দলগুলো সামরিক সরকারের নতুন এই আদেশের নিন্দা জানিয়েছে।
এনএলডির সাবেক আইনপ্রণেতা সোয়ে থুরা তুন বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে সীমাবদ্ধ করা উচিৎ নয়। এই আদেশ অগণতান্ত্রিক ও সংগঠন করার সাংবিধানিক অধিকারের পরিপন্থী।
পিপলস পার্টির প্রধান কো কো গি বলেন, এই ঘোষণা নজিরবিহীন। এটি মিয়ানমারের পরবর্তী নির্বাচনে গণতন্ত্রের অনুশীলনে একটি বড় বাধা হবে। তিনি আরও বলেন, এই পদক্ষেপ আসন্ন নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি মিয়ানমারের জনগণ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার আস্থায় বড় ধরনের ফাটল ধরাবে।
এদিকে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন সামরিক সরকারের আয়োজনে আগামী বছর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ‘প্রহসনের নির্বাচন’ প্রত্যাখ্যান করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। কম্বোডিয়ার রাজধানী নম পেনে অ্যাসোসিয়েশন অফ সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনস (আসিয়ান) পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের বৈঠকে ব্লিঙ্কেন বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনা নির্বাচন স্বাধীন বা ন্যায্য হতে পারে না।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানে অং সান সু চির সরকারকে উৎখাতের পর থেকে দেশটিতে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা ও সহিংসতা লেগেই আছে। যার দেশটির অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
২০২০ সালের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছিল সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। এই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ আনে সামরিক বাহিনী। তবে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, এই নির্বাচন অনেকাংশে অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে।
অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখলের এক বছর পর নির্বাচন দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল সামরিক সরকার। কিন্তু পরে এই সময়সীমা বাড়িয়ে বলা হয়, ২০২৩ সালের আগস্টে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে চলতি মাসের শুরুতে জান্তা জরুরি অবস্থার মেয়াদ ছয় মাস বাড়িয়ে বলেছিল, নির্বাচন তখনই হতে পারে যখন সংঘাত-বিধ্বস্ত দেশটি স্থিতিশীল এবং শান্তিপূর্ণ হবে।