সার ও তেলের দাম বৃদ্ধিতে দুশ্চিন্তায় কৃষকরা
ফরহাদ হোসেন পত্নীতলা (নওগাঁ) থেকে: চলতি রোপা আমন মওসুমের শুরতেই বৃদ্ধি পেয়েছে সার ও ডিজেলের মূল্য। আর এই সার ও ডিজেলের দাম বৃদ্ধিতে প্রভাব পড়েছে কৃষিতেও। চাষাবাদে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। এতে দুশ্চিন্তায় দিশেহারা পত্নীতলার কৃষকরা।
আমন চাষিরা জানান, সারের দাম কেজিতে ৬ টাকা এবং ডিজেল ৩৬ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে জমি চাষ দিতে খরচ বেশি হচ্ছে। এবার বর্ষা মওসমের শুরুতেই অনাবৃষ্টিতে পত্নীতলার মাঠে মাঠে আমন রোপণে সেচ দিয়ে চাষাবাদ শুরু হয়। আষাঢ় পেরিয়ে শ্রাবনে দেখা মেলে বৃষ্টির, তাও প্রয়োজনের তুলনায় অপর্যাপ্ত। এখনো শেষ হয়নি আমণের রোপন।
আবার যেসব জমিতে রোপণ করা হয়েছে, পানির অভাবে ব্যহত হচ্ছে চাষাবাদ। বিদ্যুৎতের লোডশেডিং এর কারনে মটারগুলোতে টাকা দিয়েও মিলছে না সময়মত সেচ। এতে জমিতে শুকিয়ে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা ধান গাছের কচি চারা। এমতাবস্থায় যদি কয়েক দিন বৃষ্টি না হয় এবং সেচ না দেওয়া যায় তাহলে মরে যাবে অনেক রোপনকৃত কচি চারা গাছ। চাষ করা জমিও শুকিয়ে যাচ্ছে । এ অবস্থায় ধান উৎপাদনের খরচ উঠানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।
এদিকে বাজারে পটাশ সারের সঙ্কট বলেও জানান কয়েকজন কৃষক। কোন কোন সার ব্যবসায়ী সরকারী রেটের চেয়েও বেশী দাম নেওয়ার অভিযোগও আছে। নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অতিরিক্ত সেচ, সার ও ডিজেলের দাম বাড়ায় প্রতি বিঘাতে অতিরিক্ত সাড়ে ৩ হাজার থেকে চার হাজার টাকা বাড়তি খরচ হচ্ছে।
বিলম্বে চারা রোপণ করায় ফলন কম হতে পারে বলেও কৃষকের ধারনা। এত খরচ করে আমন আবাদ করে লস হতে পারে জানিয়েছেন অনেকেই। গরু ছাগল বিক্রি করে, এনজিও ঋন, দোকানে বাকী করে চাষ করেছেন স্বপ্নের আমণ ধান। জিনিসপত্রের যে দাম তাতে সপ্ন পূরন হওয়া নিয়ে সংশয় তাদের।
উপজেলার পদ্ম পুকুর গ্রামের কৃষক আপেল মাহমুদ বলেন, তিন একর জমিতে এবার আমন আবাদ করেছেন। রোপন শেষ হয়েছে। সার ও ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিঘা প্রতি আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা বেশী খরচ হয়েছে। পত্নীতলার কৃষক আলম বলেন, ৫ বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছেন, খরচ অনেক বেশী হচ্ছে, এবার লাভ হবে না। কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের কৃষক ইয়ামিন বলেন, তিনি ১৬ বিঘাতে আমন ধান রোপণ করেছেন। সার ও ডিজেলের দাম বৃদ্ধি ও সেচ দিতে আমাদের অনেক খরচ বেড়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ প্রকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, এখনো আমন ধান রোপনের সময় আছে। যদি চারার বয়স ৩০ দিনের বেশি হয় তাহলে ফলন কিছুটা কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এবার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৭ হাজার ২শ হেক্টর। অর্জন হয়েছে ১৮ হাজার ৫শ হেক্টর।