ঢাকা | নভেম্বর ২০, ২০২৪ - ৭:৩৬ অপরাহ্ন

বেড়েছে মুরগি-ডিম মাছ-পেঁয়াজ-রসুনের দাম

  • আপডেট: Friday, August 12, 2022 - 10:28 pm

 

স্টাফ রিপোর্টার: জ্বালানি তেলের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। পিছিয়ে নেই ডিম-মুরগির দামও। মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতি কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে। ডিমের হালিতে দাম ৬ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬ টাকায়। বেড়েছে পেঁয়াজ ও রসুনের দামও।

শুক্রবার সকালে রাজশাহীর সাহেববাজার, নিউমার্কেট, মাস্টারপাড়া, শালবাগান সবজি বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে এমনটা জানা যায়। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৪০ টাকা। আর সোনালি মুরগি কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা। যা বুধবার ছিল কেজি প্রতি ২৩০ টাকা।

এদিকে বাড়তে শুরু করে পেঁয়াজের দামও। ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া দেশি পেঁয়াজ ১০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। রসুন কেজি প্রতি ৩০ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১০ টাকায়। আদা কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা। তাল মিলিয়ে বেড়েছে সবজির দাম। ২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজিতে, গত সপ্তাহের চেয়ে ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে করোলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, এ সপ্তাহে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ঢেঁড়স যা গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ১০ টাকা বেশি, ২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে এ সপ্তাহে মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা কেজিতে। ৪০ টাকার লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। এছাড়া প্রতিটি সবজির দাম কেজিতে ৫-১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।

একই সাথে বেড়েছে মাছের দামও। গত সপ্তাহের চেয়ে ৩০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে মৃরকা মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা, রুই মাছ ৭০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা, আগের দামের চেয়ে ৭০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বাটা মাছ এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা, ৩০০ টাকা কেজিতে বৃদ্ধি পেয়ে চিংড়ি মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ টাকা, গত সপ্তাহের চেয়ে ১৫০ টাকা বেড়ে পাবদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা, ১০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে টেংরা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা এবং ২০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে গুচি মাছ বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকা কেজিতে।

সাহেববাজারের মুরগি দোকানদার মিঠু হোসেন বলেন, কয়েকদিন আগে ব্রয়লার মুরগি ১৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। এখন বেড়ে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা হয়েছে। সোনালি ২৫০ টাকা, কক মুরগি ২৫০ টাকা, হাঁস ৩৩০ টাকা, রাজহাঁস ৪৫০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। দাম আরও বাড়বে এমনটা প্রত্যাশা এই মুরগি ব্যবসায়ীর।

একই বাজারের ফাহিম ডিম ভাণ্ডারের মালিক মাসুদ রানা বলেন, ডিমের দামে খামারিরা কিছুটা লাভবান হচ্ছেন। খাবারের দাম বেশি থাকলে লাভ কিছুটা কম হয়। লাল ডিম পাইকারিতে হালি ৪৪ টাকা আর সাদা ডিম ৪০ টাকা। হাঁসের ডিম ৪৮ টাকা। ডিমের দাম আরও বাড়বে। বাজারে ডিমের ঘাটতি আছে।

নগরীর শালবাগান সবজি বাজারে কথা হয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আমিনুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ডিম-মুরগি, রসুন-পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের দাম যেভাবে বাড়ছে, তাতে আমাদের নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। পরিবার নিয়ে খেয়ে-পরে বেঁচে থাকা দায় হয়ে গেছে। কারণ নিত্যপন্যের দামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমাদের বেতন বাড়ছে না।

রাজশাহীর পবা উপজেলার পারিলা এলাকার লেয়ার খামারি আব্দুল মজিদ বলেন, গত দুবছর ধরে পাঁচ-ছয় দফায় পোল্ট্রি ফিডের দাম বেড়েছে। আমরা লোকসানে শেষ হয়ে গেছি। গত মাসেও খাদ্যের দাম বেড়েছে। আগে ১৯’শ টাকায় যে খাদ্য কিনেছি সেই খাদ্য এখন ৩২’শ ৫০ টাকা বস্তা। তবে, ডিমের দাম বাড়ার কারণে লাভ হচ্ছে। মিথ্যে বলব না- ১ হাজার ডিমে এখন দেড়-দু হাজার টাকা লাভ হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে খামারে লাল একশ ডিমের পাইকারি রেট ১ হাজার ২০ টাকা। সাদা ডিম সাড়ে ৯’শ টাকা একশ ডিমের দাম। বাজারে এর চেয়ে কিছু বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

রাজশাহী পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক বলেন, চারিদিকে সবকিছুর দাম যেভাবে বাড়ছে ডিম-মুরগির দাম বাড়া অস্বাভাবিক নয়। অবহেলিত এ খাতের মাথা চাড়া দেওয়ার সময় হয়তো চলে এসেছে। রাজশাহীতে করোনায় ৭০ ভাগ খামার বন্ধ হয়েছে। মাঝখানে উৎপাদন খরচ আরও বেড়ে গেছে, কারণ ভুট্টা, সয়াবিন মিল, প্রোটিনের দাম বেড়েছে। রেডি মুরগির দাম কমায় খামারিরা আরও বিপাকে পড়েছিল। কয়েকমাস আগে খামারিরা মুরগির বাচ্চা তোলা বন্ধ করে দেয় এতে করে এখন সংকট দেখা যাচ্ছে। ৫০ শতাংশ খামারে মুরগি নেই। এ কারণেই দাম বেড়েছে। এ দাম আর একটু বাড়ার পর কমতে থাকবে।