ঢাকা | অক্টোবর ৬, ২০২৪ - ৪:৫২ অপরাহ্ন

রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়াতে নিয়ম আরও শিথিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

  • আপডেট: Wednesday, August 10, 2022 - 8:22 pm

 

অনলাইন ডেস্ক: এখন থেকে বিদেশি কোনো মানি এক্সচেঞ্জ হাউজের সঙ্গে চুক্তি করতে (ড্রইং অ্যারেঞ্জমেন্ট) বাণিজ্যিক কোনো ব্যাংকের আর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আগাম অনুমতি নিতে হবে না। বুধবার এ বিষয়ে একটি সার্কুলার জারি করে সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

দেশীয় কোনো বাণিজ্যি ব্যাংকের বিদেশি কোনো মানি এক্সচেঞ্জের সঙ্গে এ ধরনের চুক্তি করতে এতদিন বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হত। সেইসঙ্গে ওই দেশে থাকা বাংলাদেশ মিশন বা হাই কমিশনের কাছ থেকেও বিদেশি মানি এক্সচেঞ্জের বিষয়ে ইতিবাচক সুপারিশপত্র আনতে হত।

এখন থেকে এ দুটি বিষয়ে ছাড় দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, নতুন নিয়মে চুক্তি করার পর বাংলাদেশ ব্যাংককে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে হবে। বাংলাদেশ মিশনের প্রত্যয়নপত্র ছাড়াও চুক্তি করা যাবে।

বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৬ শতাংশের বেশি আসে প্রবাসী আয় থেকে। আর রপ্তানির পর এই রেমিটেন্সই বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের বড় উৎস।

তবে মহামারীর ধাক্কার পর ইউক্রেইন যুদ্ধের জেরে বিশ্ববাজারে অস্থিরতার কারণে অনেক দেশই এখন অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, ফলে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের পরিমাণেও টান পড়েছে সাম্প্রতি সময়ে।

জুনে শেষ হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসীরা ২ হাজার ১০৩ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন, যা আগের বছরের চেয়ে ১৫.১২ শতাংশ কম। রেমিটেন্স কমায় আমদানির বাড়তি মূল্য পরিশোধের চাপে দেশে ডলারের সরবরাহ সংকট দেখা দিয়েছে। দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে ব্যবহৃত প্রধান এ মুদ্রার দাম এ কারণে প্রতিনিয়ত বাড়ছে।

এ অবস্থায় রেমিটেন্স বাড়াতে বৈধপথে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ দেশে আনার বিষযে জোর দিচ্ছে সরকার। প্রবাসীরা যাতে তাদের কষ্টের টাকা সহজে পরিবারের কাছে পাঠাতে পারেন, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিদেশে মানি এক্সচেঞ্জ বা ব্যাংকের সুবিধা বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন।

রেমিটেন্স দেশে আনতে অনেক ব্যাংক নিজস্ব এক্সচেঞ্জ হাউজ পরিচালনা করে। তবে সব দেশের ক্ষেত্রে তা সম্ভব হয় না, কারণ অফিস পরিচালনার খরচ উঠিয়ে রেমিটেন্স আনা কঠিন হয়ে যায়। সেজন্য বিদেশি মানি এক্সচেঞ্জের সঙ্গে চুক্তিতে যায় দেশীয় ব্যাংকগুলো।

এক সময়ে দেশীয় ব্যাংকের মালিকানায় পরিচালিত এক্সচেঞ্জের নিজস্ব প্রতিনিধি বা সাব-এজেন্ট দেওয়ার সুযোগ ছিল। ২০০৭ সালের এক নীতিমালার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সে সুযোগ বন্ধ করে দেয়। মানি এক্সচেঞ্জের আড়ালে যাতে হুন্ডি বা অবৈধ অর্থের লেনদেন না হয়, তা নিশ্চিত করতেই নেওয়া হয়েছিল এমন সিদ্ধান্ত।

আবার বিদেশে এক্সচেঞ্জ হাউজ পরিচালনায় কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বিভিন্ন রকম কড়াকড়ি আরোপ করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমাল অনুযায়ী, বিদেশে নাগরিক বা কোনো দেশের স্থায়ীভাবে বসবাসকারী বিদেশির মালিকানাধীন মানি এক্সচেঞ্জের সঙ্গেই রেমিটেন্স আনার জন্য চুক্তি করতে পারে দেশের কোনো বাণিজ্যিক ব্যাংক। এ ক্ষেত্রে সে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন হয়।

কোন এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে বা কোনো দেশ থেকে বছরে কী পরিমাণ রেমিটেন্স আনা যাবে, তারও একটি সীমা নির্ধারণ করা ছিল হুন্ডি ও বৈধ আয় বহির্ভূত অর্থ লেনদেন ঠেকাতে। ডলার সঙ্কটের মধ্যে সম্প্রতি সেই সীমা তুলে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন দৈনিক যে কোনো পরিমাণে রেমিটেন্স আনার সুযোগ রয়েছে।

আবার রেমিটেন্স পাঠাতে কোনো ধরনের কাগজপত্রও লাগছে না প্রবাসী বা মানি এক্সচেঞ্জগুলোর। ব্যাংকগুলোকে এখন ১০৭-১০৮ টাকায় বিদেশি এক্সচেঞ্জ থেকে ডলার কিনতে হচ্ছে। আর খোলা বাজারে ডলারের দাম উঠেছে ১১৪ টাকায়।