দুর্গাপুরে দু’বছর পর দিঘি কৃষকের দখলে
দুর্গাপুর প্রতিনিধি: দুর্গাপুর উপজেলার কয়ামাজমপুর বড় বিলে দুই বছর ধরে টাকা না পেয়ে স্লোগান দিয়ে দেশিয় অস্ত্র নিয়ে দিঘি দখলে নিলো কৃষকেরা। রোববার সকালে বাঁশের লাঠি, হাসুয়া, কাঁচি, দা বটি নিয়ে দিঘি দখলে নেয় এলাকার শত শত কৃষক।
এ সময় ‘জনগণের পুকুর জনগণের থাকবে, আজ থেকে এ পুকুর জনগণই খাবে’ এ স্লোগান দিয়ে কৃষকেরা দিঘিতে মাছ ছেড়ে দেন। এনিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লেও ঘটনার সময় কৃষকদের বাধা দিতে আসেননি দিঘিটি দুই বছর ধরে জোবরদখল করে ভোগ করা স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ইমদাদুল হক ওরফে এমবি বা তার লোকজন।
ভুক্তভোগী কৃষকদের অভিযোগ, গত দুই বছর আগে কয়ামাজমপুর গ্রামের বিদেশ ফেরত প্রভাবশালী ইমদাদুল হক ওরোফে এমবি বড় বিলে ৫৬ বিঘা আয়তনের একটি দিঘি খনন করেন। প্রথমে তিনি কয়েকজন কৃষকের থেকে বেশি দামে জমি নিয়ে পুকুর খনন শুরু করেন। পরে আশে পাশের কৃষকের জমি তিনি জোরপূর্বক জবরদখল নিয়ে বিশাল আকৃতির দিঘি তৈরি করেন। খননকৃত দিঘিতে ওই এলাকার ১২০জন কৃষকের জমি পড়ে। প্রভাবশালী ইমদাদুল পরবর্তীতে কৃষকদের জমির খাজনা বাবদ টাকা না দিয়েই দিঘিতে মাছ চাষ শুরু করেন।
এতে কৃষকরা প্রতিবাদ করেও তার কাছে পাত্তায় পায়নি। এ বিষয় নিয়ে থানায় অভিযোগ করেন কৃষকেরা। সেখানেও সালিশে ইমদাদুল চার মাসের সময় নেয় টাকা পরিশোধের। পরে চার মাস কেটে গেলেও তিনি কৃষকদের টাকা পরিশোধ করেননি। এরপর আবার চার মাসের সময় নিয়ে তিনি কৃষকদের সঙ্গে সময় ক্ষেপণ করতে থাকেন। অপরদিকে তিনি পুরোদমে পুকুরে মাছচাষ করে বিক্রি করেন। এভাবে কৃষকদের দুই বছর কোন টাকা না দিয়ে মাছচাষ করে আসছিলেন তিনি।
ভুক্তভোগী আয়েন উদ্দিন বলেন, থানায় এনিয়ে প্রায় ২০দিন আগে বসা হয়ে ছিল। গত দুই বছরে তার কাছে জমির খাজনা পাওনা দাঁড়ায় ৩৬ লাখ টাকা। তিনি আরও চার মাস সময় চায় কৃষকের থেকে। এতে কৃষকেরা তাকে আর সময় দিতে অস্বীকৃতি জানায়। দুই বছর ধরে টাকা না পেয়ে গতকাল রোববার সকালে ১২০জন কৃষক ও পরিবারের লোকজন স্লোগান দিতে দিতে দিঘি দখল করে মাছ ছেড়ে দেন। তিনি আরও বলেন, চার মাস করে করে কেটে গেছে দুই বছর। তবু কৃষকের টাকা দেননি তিনি।
এ বিষয়ে ইমদাদুল হক ওরফে এমবির মোবাইল ফোনে একাধিক কল হলে তিনি রিসিপ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নাজমুল হক বলেন, এ ঘটনা আমি শুনেছি। খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত জানা হবে। ভুক্তভোগী কৃষকেরা থানায় অভিযোগ দিলে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।