ঢাকা | মে ১১, ২০২৫ - ৫:২৩ পূর্বাহ্ন

ওয়াসা কেন পানির দাম বেশি নিতে চায়, জানতে চান বাদশা

  • আপডেট: Sunday, August 7, 2022 - 11:13 pm

 

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেছেন, ওয়াসার মতো প্রতিষ্ঠানগুলো আসলে দুর্বৃত্ত কাঠামোর মতো হয়ে গেছে। মাঝে মাঝে এরা জনগণের বুকের ওপর চেপে বসতে চায়। পৃথিবীর অনেক দেশে ট্যাপের পানি সরাসরি খাওয়া গেলেও ওয়াসার পানি পানের অযোগ্য। যে পানি খাওয়া যায় না, সেই পানির দাম তারা কোন আইন ও যুক্তির ভিত্তিতে বাড়িয়ে দেয়; তা আমি সুনির্দিষ্টভাবে জানতে চাই।

রোববার শাহমখদুম কলেজের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জনমতকে উপেক্ষা করে ওয়াসা কর্তৃক পানির তিনগুণ মূল্যবৃদ্ধি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে রাজশাহীর সচেতন নাগরিকের ব্যানারে এই সভার আয়োজন করা হয়। এতে রাজশাহীর বিভিন্ন পেশাজীবী ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ বিশিষ্টজনরা অংশ নেন।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, বাইরের অনেক দেশের পাঁচ তারকা হোটেলে ট্যাপের পানি পান করা যায়। কারণ সেখানে পানি ট্রিটমেন্ট না করে সরবরাহ করা হয় না। অথচ আমাদের শহরে একটি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নেই। আমি দ্বিতীয় মেয়াদে সংসদে যাওয়ার পরে রাজশাহীতে একটি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট করার জন্য প্রজেক্ট পাশ করেছিলাম। সেই প্রজেক্ট আজও আলোর মুখ দেখেনি। যে প্রজেক্টটি আমাদের টাকায় না, বিদেশি ফান্ডের টাকায় হবে, সেই প্রজেক্টও আমলাতান্ত্রিক কারণে আমরা বাস্তবায়ন করতে পারিনি।

তিনি বলেন, ওয়াসার সার্ভিস রেন্ট কী হবে এবং আইন এই বিষয়ে কী বলে, তার সুনিদিষ্ট কাগজ আমরা সংগ্রহ করবো। আজকের এই সভা থেকে একটি নাগরিক প্রতিনিধি গঠন করে রাজশাহী ওয়াসার এমডির সাথে কথা বলা হবে। আমরা সেখানে তাকে বলবো- আইন হচ্ছে এইটা, আপনি পানির দাম কীভাবে বাড়ান? তাকে যথাযথ আইন দেখানোর পরে যদি তিনি কথা শুনতে না চান, তবে আমরা আইনের আশ্রয়ে আদালতে যেতে পারি, আন্দোলনেও যেতে পারি। আমাদের দুই প্রচেষ্টাই অব্যাহত থাকবে। জনমতের বাইরে নেওয়া কোন সিদ্ধান্তকে আমরা সমর্থন করতে পারি না।

সম্প্রতি দেশে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়েও কথা বলেন জাতীয় এই রাজনীতিক। তিনি বলেন, সরকারের জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে পুরোপুরি সঠিক মনে করি না। তেলের মূল্যবৃদ্ধি হবে, এটি সকলেই জানতো। আমাদের দেশের জ্বালানি যেহেতু আমদানি করতে হয়, সেহেতু বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ জ্বালানি সংকটে পড়তে পার; এটি অস্বাভাবিক কিছু নয়। সরকারের ভিতরে এমন কিছু ব্যক্তি আছেন, যারা তেলের মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে কীভাবে জনগণের স্বার্থ কম বিপন্ন হবে, তা বিবেচনা করেননি। আমাদের দেশে তেলের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে একটি প্রো-পিপল অ্যাপ্রোচ নিয়ে আসার প্রয়োজন ছিল।

রাকসুর সাবেক এই ভিপি আরো বলেন, গণপরিবহন ও কৃষিক্ষেত্রে সবথেকে বেশি ব্যবহৃত হয় ডিজেল। অতএব আজকে ডিজেলের মূল্য কিছুটা বাড়িয়ে পেট্রোল ও অকটেনের মূল্য বেশি বাড়ানো যুক্তিযুক্ত ছিল। ডিজেলের মূল্য বেশি বাড়ানোর কারণে এর প্রভাব এসে পড়বে জনগণের ওপর। ফলে মধ্যরাতে যে নীতির ভিত্তিতে তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে, এবং এমন সিদ্ধান্ত যারা নিয়েছেন; তারা কখনো সরকারের বন্ধু হতে পারে না। আমরা যারা ক্ষমতায় আছি, তাদের চিন্তা করতে হবে- মানুষকে সন্তুষ্টির মধ্যে রেখেই বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে টিকিয়ে রাখা।

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান দীপ কেন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র-১ সরিফুল ইসলাম বাবু, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, সাবেক ছাত্রনেতা মনজুর মোর্সেদ চুন্না, রাজশাহী থিয়েটারের সভাপতি কামারুল্লাহ কামাল, বিশিষ্ট সমাজসেবক এ কে মাসুদ, বিশিষ্ট সমাজসেবক সেলিম মনোয়ার, দিগন্ত প্রসারী সংঘের সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের নেতা গোলাম মাওলা রনি প্রমুখ। সভাটি সঞ্চালনা করেন মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ প্রামানিক দেবু।

 

 

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS