ডাক বিভাগের খামে প্রত্যন্ত গ্রাম
স্টাফ রিপোর্টার: ডাক বিভাগের খামে এবার স্থান পেয়েছে রাজশাহীর একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি গ্রাম। এই গ্রামটির ছবি ডাক বিভাগের বিশেষ খামে স্থান পেয়েছে।
বরেন্দ্র ফিলাটেলিক সোসাইটি ‘বরেন্দ্রপেক্স ২০২২’ শীর্ষক ডাকটিকিট প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। রাজশাহী মহানগরীর একটি রেস্তোরাঁয় দুই দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী শেষ হয়েছে গতকাল রোববার। খামটিতে দেখা যায়, রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম তালবাড়িয়া। এ বিশেষ খামের সিলমোহরটিতে লেখা রয়েছে প্রদর্শনীর নাম, আয়োজক প্রতিষ্ঠানের নাম, জিপিও রাজশাহী। প্রদর্শনী দেখতে আসা অনেকে এই বিশেষ খামটি দেখে মুগ্ধ হয়েছেন বলে মত প্রকাশ করেছেন। গ্রামে যাদের শৈশব-কৈশোর কেটেছে, তারা এই খামের তালবাড়িয়া গ্রামের ছবিটির প্রতি স্মৃতিকাতরতা প্রকাশ করছেন।
এই ছবিটির চিত্রকর সুমন সরকার। ২০১১ সালের কোনো একদিন তিনি ওই গ্রামের একটি মাটির বাড়ির পাশে বসে পড়েন। তার তুলিতে দোতলা মাটির ঘরের সঙ্গে উঠে আসে তালবাড়িয়া গ্রামের ঘরদোর, গাছগাছালি, গৃহস্থালির আসবাব, মানুষ সবকিছুই। সেটিই এই বিশেষ খামের মাধ্যমে ধরে রাখা হলো। খামটির নকশা করেছেন রাজশাহী চারুকলা মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজাইনার সুমন্ত কুমার। তিনি বলেন, তালবাড়িয়া গ্রামে তার নানাবাড়ি। এ গ্রামটিকে ঘিরে তার শৈশবের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। এ গ্রামের ছবিটি দিয়ে খামের ডিজাইন করে আসলে তিনি বরেন্দ্র অঞ্চলের একটি গ্রামকে ধরে রাখতে চেয়েছেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ সিলমোহর দিয়ে খামটি অবমুক্ত করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তার। মোখলেসুর রহমান বলেন, আজকে প্রকাশিত বিশেষ খামটি বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ১৪৯তম খাম। যুবসমাজ মাদকের নেশায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তারা যদি ডাক টিকিট সংগ্রহের মতো ইতিবাচক নেশার সঙ্গে যুক্ত হয়, তাহলে একটি সুস্থ সমাজ গঠনে তা ভূমিকা রাখতে পারে। তিনি এটাকে সামাজিক আন্দোলনে রূপ দেওয়ার জন্য আয়োজকদের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রদর্শনী উপলক্ষে অনুষ্ঠানস্থলে ভ্রাম্যমাণ ডাকঘর বসানো হয়েছে। সেই ডাকঘরে ডাকটিকিট বিক্রির ধুম পড়ে যায়। সিলমোহরের খটখট শব্দে মুখরিত হয় চারপাশ। ভীষণ ব্যস্ত সময় কাটান পোস্টাল অপারেটর শাকিলুর রহমান ও জিয়া নিছার আহমেদ।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক বলাই সরকার বলেন, তার বাবা-মা এখনো তালবাড়িয়া গ্রামে থাকেন। প্রতি সপ্তাহে তাকে যেতে হয়। গত সপ্তাহেও তিনি গিয়েছিলেন। এখনো তার গ্রাম একটি নিভৃত এলাকা। তিনি বলেন, ‘গ্রামের ছবি ডাক বিভাগের খামে উঠেছে, এর চেয়ে আনন্দের খবর আর কী হতে পারে। খুবই ভালো লাগছে।’