ঢাকা | জুলাই ২৬, ২০২৪ - ৭:৫৮ পূর্বাহ্ন

চাকরীর প্রলোভনে চার স্কুলছাত্রীকে পাচারের চেষ্টা

  • আপডেট: Friday, July 29, 2022 - 11:06 pm

 

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী থেকে ভালো চাকুরীর প্রলোভন দিয়ে চার স্কুলছাত্রীকে দেশের বাইরে পাচারের চেষ্টার অভিযোগে এক নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এই চার স্কুলছাত্রীর মধ্যে একজনের বাবা নগরীর রাজপাড়া থানায় অভিযোগ দেন। সেই সূত্র ধরে ঢাকার সাভার উপজেলার একটি বাসা থেকে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে পাচারের সাথে জড়িত এক নারীসহ চার স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

ভুক্তভোগী চার কিশোরীর মধ্যে একজন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। বাকি তিনজন অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে দুজনের বাবা রিকশাচালক। একজনের বাবা নির্মাণশ্রমিক। অন্য আরেকজনের বাবা ছাগলের ব্যাপারী।

আটক নারীকে এক কিশোরীর বাবার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গ্রেপ্তার নারীর নাম চাঁদনী (৩০)। তিনি নগরীর রাজপাড়া থানার কোর্ট বুলনপুরের সুরুজ আলীর স্ত্রী। সুরুজ ও চাঁদনী নগরীর মহিষবাথান এলাকার ভাড়াটিয়া। শুক্রবার সকালে রাজপাড়া থানায় কিশোরীরা জানায়, চাঁদনী তাদের ঢাকায় ভালো চাকরির কথা বলেছিলেন। ভালো টাকা-পয়সা পাওয়া যাবে। নিজের মতো খরচ করা যাবে। এই প্রস্তাবে তারা চাঁদনীর সঙ্গে যেতে রাজি হয়েছিল।

গত মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে প্রথমে তিনজন বাড়ি থেকে বের হয়। পরে তাদের সঙ্গে আরেকজন যোগ দেয়। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তাদের নগরীর লক্ষ্মীপুর ঝাউতলা মোড়ের একটি ডেকোরেটরের দোকানের গুদামঘরে রাখা হয়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাসে করে তারা ঢাকায় রওনা হয়। থানায় এই কিশোরীরা সব কথা চাঁদনীর পাশে বসেই বলছিল। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁদনী তাদের নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন।

রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চাঁদনী এই চার কিশোরীকে যৌন কার্যকলাপে নিয়োগের জন্য ফুসলিয়ে চাকরির প্রলোভন দিয়ে ঢাকায় নিয়ে যান। তারা স্কুলে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে বিকেলে ফিরে না এলে অভিভাবকেরা খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেন। একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন তাদের জানায়, চাঁদনী নামের এক নারীসহ ওই চার কিশোরীকে নগরের মহিষবাথান কলোনির উত্তর পাশের গেট দিয়ে যেতে দেখেছেন। এই খবর পেয়ে তারা চাঁদনীর স্বামীর কাছে যান।

চাঁদনীর স্বামীর কাছ থেকে জানতে পারেন, চাঁদনীও কাউকে না জানিয়ে প্রায়ই ঢাকায় যান এবং ১০-১২ দিন পর ফিরে আসেন। চাঁদনীর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। এক কিশোরীর বাবা এই অভিযোগে থানায় মামলা করেন। এরপর তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ঢাকার সাভার থানার পূর্ব রাজাসন এলাকার একটি বাসা থেকে স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় চাঁদনীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার হেফাজত থেকে ওই চার কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়।

ওসি জানান, চার কিশোরীর কেউই বলেনি যে তাদের কোনো ধরনের নির্যাতন করা হয়েছে। এর পরও নিশ্চিত হতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস (ওসিসি) সেন্টারে আজ শুক্রবার তাদের শারীরিক পরীক্ষা করা হবে। এটি শেষ হলে তাদের আদালতে তোলা হবে। তারা আদালতে জবানবন্দি দেবে। এরপর আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্ত নারীকে গতকাল দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।