ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি, প্রতিবাদ করায় তিনজনকে ছুরিকাঘাত
![](https://sonalisangbad.com/wp-content/uploads/2022/07/8432911_New-Project-2022-04-09T162245.952.jpg)
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) রাকিব নামে এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে এসে ঘটনাস্থলে ছুরিকাঘাতে জখম হয় ভুক্তভোগী ছাত্রীর বিভাগের তিন শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ^বিদ্যালয়ের মমতাজউদ্দিন আহমেদ একাডেমিক ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার সকালে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ছাত্রী ও ছুরিকাঘাতপ্রাপ্ত তিন শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী বিশ^বিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত একটি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। এছাড়া ছুরিকাঘাতে জখম হওয়া তিন শিক্ষার্থী হলেন- মো. নাইম, শুভ ঘোষ ও নয়ন আলী। তিনজনই রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত রাকিব আল হাসান ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।
অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী জানান, একই জেলায় বাড়ি হওয়ায় আগে থেকেই রাকিবের সাথে তার পরিচয় ছিল। রাকিব প্রায় তাকে বিরক্ত করতো। গত মঙ্গলবার রাত সোয়া দশটার দিকে এক বান্ধবীসহ ওই ছাত্রী হলে যাওয়ার পথে মমতাজউদ্দিন কলা ভবনের সামনে রাকিবের সাথে দেখা হয়। এসময় রাকিব তাকে থামিয়ে কথা বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু ছাত্রী চলে আসার সময় রাকিব পেছন থেকে তাকে টেনে ধরলে ওই ছাত্রীর জামা ছিড়ে যায়। পরে তাকে চড়-থাপ্পড় মারে রাকিব। এসময় রাকিবের সাথে আরও কয়েকজন উপস্থিত ছিল।
তবে বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রাকিবের সাথে ভুক্তভোগী ছাত্রীর দেড় বছরের সম্পর্ক ছিল। এর মধ্যে রাকিব অন্য একটি মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়ায়। বিষয়টি জানতে পেরে ওই ছাত্রী রাকিবের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেয়। সে বিষয়ে কথা বলতেই ওই ছাত্রীকে দাঁড় করিয়ে কথা বলার চেষ্টা করেন রাকিব। এই সময় ওই ছাত্রী চলে যেতে চাইলে থাপ্পড় মারেন রাকিব।
বিষয়টি ভুক্তভোগী ছাত্রী তার বন্ধুদের জানালে, তারা বিভাগের (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) কয়েকজন জুনিয়রসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এসময় ছাত্র-উপদেষ্টা ও মতিহার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও সেখানে উপস্থিত হয়। পরে রাকিব ও তার বন্ধুদের সাথে ভুক্তভোগী ছাত্রীর বন্ধুদের হাতাহাতি শুরু হয়। এক পর্যায়ে তারা ওই ছাত্রীর বন্ধু নাইম, শুভ ও নয়নকে ছুরিকাঘাত করেন। এসময় ঘটনাস্থলে রাকিব ও তার বন্ধুদের হাতে বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র-উপদেষ্টা তারেক নূরও লাঞ্ছিত হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত রাকিবের শাস্তি চেয়ে আহতরা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর।
এ বিষয়ে রাকিবের মন্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর বলেন, আমি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এছাড়া আমি গতকালের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলাম। কিন্তু এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করবো না। তবে ওই ছেলের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত বলেও জানান তিনি।
সার্বিক বিষয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, শুনেছি ছাত্র-উপদেষ্টার কাছে অভিযোগপত্র দিয়েছে। আমি ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত ব্যস্ততার কারণে এখনো হাতে পাইনি। হয়তো আগামীকাল হাতে আসবে। তখন আমরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।