১৮ কিমি পথ ভ্যান চালিয়ে মেয়ের লাশ থানায় নিয়ে গেলেন বাবা
বাগমারা প্রতিনিধি: পুলিশের নির্দেশে প্রায় ১৮ কিমি পথ ভ্যান চালিয়ে ময়না তদন্তের জন্য মেয়ের লাশ থানায় পৌঁছে দিলেন বাবা। তবে পুলিশের দাবি রাতে কোন যানবাহন না পাওয়ায় এবং নিহতের বাবা একজন ভ্যান চালক হওয়ায় স্বেচ্ছায় সে তার ভ্যানে করে মেয়ের লাশ থানায় পৌঁছে দিয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাত ১১ টায় রাজশাহীর বাগমারা থানায়।
জানা গেছে, আট মাস আগে যোগীপাড়া ইউনিয়নের গোপীনাথপুর গ্রামের ভ্যান চালক আব্দুল মালেকের মেয়র হোসনে আরা খাতুনের (১৫) পাশের বীরকুৎসা গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে সোহেল রানার সঙ্গে বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকে হোসনে আরাকে তার শ্বশুর-শ্বাশুড়ি মেনে না নেওয়ায় পারিবারিক অশান্তি বিরাজ করছিলো।
নিহত হোসনে আরার বাবা আব্দুর মালেক জানান, ঈদের তিনদিন আগে তার জামাই সোহেল রানা একটি স্মার্টফোট কিনে চেয়েছিলো। কিন্তু স্মার্টফোন দিতে রাজি না হওয়ায় জামাই এবং মেয়ের শ্বশুর ও শ্বাশুড়ি ক্ষেপে যান। এ নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত সোমবার রাত ৯ টার দিকে হোসনে আরাকে পিটিয়ে হত্যার পর বারান্দায় লাশ ঝুঁলিয়ে রেখে পালিয়ে যায় জামাই সোহেল রানা এবং তার বাবা-মা।
খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় হোসনে আরা খাতুনের লাশ উদ্ধার করে এবং তার বাবার ভ্যান যোগে ময়না তদন্তের জন্য মেয়ের লাশ থানায় পাঠানো হয়। মঙ্গলবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেয়ের লাশের ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়।
এদিকে পুলিশের নির্দেশে বাবার ভ্যানে করে মেয়ের লাশ পাঠানোর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
তবে থানার পরিদর্শক তৌহিদুল ইসলাম বলেছেন, রাতে কোন যানবাহন পাওয়া যাচ্ছিল না। তাছাড়া নিহতের বাবা ছিলেন একজন ভ্যান চালক। এ কারণে স্বেচ্ছায় সে তার ভ্যানে করেই মেয়ের লাশ থানায় পৌঁছে দিয়েছে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম জানান, ওই গৃহবধূ হত্যাকান্ডের ঘটনায় তার স্বামী, শ্বশুর ও শ্বাশুড়িকে আসামী করে মঙ্গলবার থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।