ঢাকা | অক্টোবর ৬, ২০২৪ - ১১:১৯ অপরাহ্ন

নিয়ামতপুরে সারের দামে আগুন, বিপাকে কৃষক

  • আপডেট: Wednesday, July 20, 2022 - 11:32 pm

নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের কৃষক রাসেল। তিনি এবার ১০ বিঘা জমিতে আমনের আবাদ করবেন। সে লক্ষ্যে তিনি তীব্র খরার মধ্যেও বিকল্প ব্যবস্থায় অতিরিক্ত খরচে জমিতে সেচ দিয়ে মাঠ প্রস্তুত করছেন। জমিতে রাসায়নিক সার দেয়ার জন্য তিনি বুধবার এসেছিলেন নিয়ামতপুর বাজারে সার কিনতে। কিন্তু সারের দাম শুনে তিনি রীতিমত হতাশ। সার ডিলারের সাথে অনেক বাক-বিতন্ডা করেও পাননি সরকারী নির্ধারিত মূল্যে সার। তিনি জানান, আমার ৫ বস্তা ইউরিয়া, ৩ বস্তা টিএসপি ও ২ বস্তা পটাশ সারের প্রয়োজন থাকলেও সার ডিলার দিচ্ছেন নামমাত্র।

প্রয়োজনীয় পরিমান সার না পেয়ে তিনি বাধ্য হয়ে ১০কেজি ইউরিয়া কিনেছেন প্রতি কেজি ১৮ টাকা দরে, ১০ কেজি পটাশ কিনেছেন ২৯টাকা দরে আর ১০ কেজি টিএসপি কিনেছেন ৩০ টাকা দরে। অথচ, প্রতি কেজি ইউরিয়া সারের সরকারী মূল্য ১৬ টাকা, টিএসপি ২২ টাকা এবং পটাশ ১৫ টাকা করে কৃষকের নিকট থেকে নেয়ার কথা।

তিনি আরো জানান, কৃষিবান্ধব সরকার কৃষকদের সুবিধার্থে সারের মূল্য নির্ধারণ করলেও শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট কৃষি অফিস ও প্রশাসনের মনিটরিং এর অভাবে ডিলাররা কৃষকদের নিকট থেকে ইচ্ছেমত হারে সারের মূল্য আদায় করছেন। এমন অভিযোগ শুধু আমার না, আরো অনেকের। অপর কৃষক নিয়ামতপুরের সালেহীন জানান, তিনিও সরকারী নির্ধারিত মূল্যে সার পাননি। নায্য মূল্যে সার পাওয়ার জন্য বিভিন্ন বাজারে সার ডিলারের নিকট হন্নে হয়ে ঘুরলেও কোথাও কৃষি বিভাগের তৎপরতা লক্ষ্য কারা যায়নি। তাকেও উচ্চ মূল্যে সার কিনে জমিতে প্রয়োগ করতে হয়েছে।

সরেজমিনে বুধবার নিয়ামতপুর উপজেলার ছাতড়া, খড়িবাড়ি, গাংগোর, নিমদীঘি বাজার ঘুরে দেখা গেছে একই চিত্র। সার বিক্রেতারা সরকারী নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে চড়াও মূলে কৃষকদের নিকট সার বিক্রি করছেন। লাল কাপড়ে সরকারী নির্ধারিত মূল্যের তালিকা টাঙিয়ে সার বিক্রির নির্দেশনা থাকলেও কোথাও তা চোখে পড়েনি। ফলে সার বিক্রেতারা ইচ্ছেমত হারে সার বিক্রি করছেন।

নিয়ামতপুর বাজারের সার বিক্রেতা ফারুক হোসেন জানান, কৃষকদের নিকট খুচরা সার বিক্রি করে অনেক সময় ওজনে বেশী চলে যায়। পরবর্তীতে লস হয়। এ কারনেই লস পুষিয়ে নিতে কিছুটা বাড়তি মূল্য নেয়া হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে নিয়ামতপুর ফার্টিলাইজার এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিমল চন্দ্র প্রামানিকের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, সরকারী বরাদ্দের এমওপি সার এখনো নিয়ামতপুরে পৌঁছায়নি। হয়তো এ সুযোগেই বিক্রেতারা তাদের মনমত মূল্য আদায় করছেন কৃষকদের নিকট থেকে, যেটা উচিৎ না। এতে করে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।

কৃষি কর্মকর্তা আমীর আব্দুল্লাহ মো. ওয়াহেদুজ্জামান জানান, তিনি কৃষকদের নিকট থেকে কয়েকটি ফোন পেয়েছেন এবং বিষয়টি কৃষকরা তাকে জানিয়েছেন। বুধবার সংবাদ কর্মীদের ফোন পেয়ে তিনি সরেজমিনে বের হয়ে প্রতিটি ডিলারকে সতর্ক করেন এবং লাল কাপড়ে সরকারী নির্ধারিত সারের মূল্য সংযোজিত তালিকা টাঙিয়ে সার বিক্রি করার নির্দেশ দেন। এর ব্যতিক্রম ঘটলে এবং কৃষক অভিাযোগ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।