বাদীর হাত ভেঙে দিলেন ইউপি চেয়ারম্যান
মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর মান্দায় এক ব্যক্তিকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মকলেছার রহমান কামরুলের বিরুদ্ধে। ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যক্তি বাদী হয়ে মঙ্গলবার নওগাঁ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-২ এ একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান মকলেছার রহমান কামরুলসহ তাঁর ভাতিজা সাজেদুর রহমান সাজু, ব্যক্তিগত সহকারী কাবিরুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন ও বাবুল হোসেনকে আসামি করা হয়েছে। আদালতের বিচারক বিকাশ চন্দ্র বসাক মামলাটি রেকর্ডভূক্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মান্দা থানার ওসিকে নিদের্শ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী ব্যক্তির নাম বিদ্যুৎ হোসেন প্রামানিক (৪৫)। তিনি উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের পানিয়াল গ্রামের বাসিন্দা।
ভুক্তভোগী বিদ্যুৎ হোসেন প্রামানিক বলেন, পারিবারিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে তাঁর ওয়ারিশদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। এ মামলা ফি’র নামে চেয়ারম্যান কামরুলের কথা বলে তাঁর কাছ থেকে নেওয়া হয় ২৫০০ টাকা। একইভাবে মামলার বিবাদীর কাছ থেকেও নেওয়া হয় একই পরিমাণ টাকা।
বিদ্যুৎ হোসেন আরও বলেন, ‘গ্রাম আদালতে মামলা ফি’র নামে নেওয়া টাকার কথা সাবাই বাজারের অনেকের কাছে প্রকাশ করে দেই। এতে চেয়ারম্যান কামরুল আমার ওপর চরম ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন ও বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছিলেন।’
ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, ‘এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোরবানির ঈদের দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে সাবাই বাজারের মাহাবুরের চায়ের দোকান থেকে আমাকে পরিষদে ধরে নিয়ে যান চেয়ারম্যানের ভাতিজা সাজেদুর রহমান সাজু। সেখানে আগে থেকেই চেয়ারম্যান কামরুল, চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত সহকারী কাবিরুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেনসহ আরও অনেকে বসা ছিলেন। চেয়ারম্যান আমাকে সামনে পেয়েই লোহার রড দিয়ে মারধর শুরু করেন। লোহার রডের আঘাতে আমার ডান হাতের হাড্ডি ভেঙে যায়। সংবাদ পেয়ে পরিবারের লোকজন পরিষদে এসে চেয়ারম্যানের কবল থেকে আমাকে উদ্ধার করেন।’
ভুক্তভোগীর ভাই আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ভাই বিদ্যুৎকে উদ্ধার করে প্রথমে মান্দা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু হাতের হাড্ডি ভেঙে যাওয়ায় তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন চিকিৎসকেরা। সেখানে চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে মান্দা থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে মঙ্গলবার নওগাঁ আদালতে মামলা করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মকলেছার রহমান কামরুল বলেন, ‘বিদ্যুৎ হোসেনের বিবাদমান বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল হাকিমের ওপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। টাকা পয়সা নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।’ চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘বিদ্যুৎ হোসেনকে মারধর করা হয়নি। পরিষদ থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় পড়ে গিয়ে হাতটি ভেঙে গেছে বলে শুনেছি।’
মান্দা থানার ওসি বলেন, এ ঘটনায় থানায় কেউ মামলা করতে আসেননি।
মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু বাক্কার সিদ্দিক বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এ সংক্রান্ত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।