ঢাকা | নভেম্বর ২০, ২০২৪ - ৫:২৭ পূর্বাহ্ন

অনৈতিক সম্পর্কই কাল হলো স্বাস্থ্যকর্মীর

  • আপডেট: Monday, July 18, 2022 - 10:51 pm

পুঠিয়া প্রতিনিধি: অনৈতিক সম্পর্কই কাল হলো রাজশাহীর পুঠিয়ায় স্বাস্থ্যকর্মী আমিনা বেগমের (৫৪)। তার হত্যাকাণ্ডের ৮ দিন পর সেই রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ।

এঘটনার মূলহোতা ও স্থানীয় কিশোর গ্যাং অন্যতম সদস্য শাহাদত হোসেন ওরফে শুভ (১৪) ও তার বাবাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করেছে। এরপর বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে শিশু পূর্নবাসন ও শোধনাগারে পাঠানো হয়।

গত ১০ জুলাই উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নের শিবপুরহাট গ্রামের নিজ বাড়িতে ওই স্বাস্থ্যকর্মী আমিনা বেগম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়। তার পিতার নাম মৃত ইয়াকুব আলী।

এ ঘটনার ৮ দিন পর সোমবার পুলিশ অভিযুক্ত ও তার পিতাকে আটক করেন। আটককৃত শুভ একই গ্রামের মখলেছুর রহমানের ছেলে ও শিবপুরহাট হাই স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও থানার উপপরির্দশক সোহেল রানা। তিনি বলেন, নিহত আমিনা বেগম অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী ছিলেন। সেই সাথে তিনি স্বামী পরিত্যাক্তা, বাড়িতে একাই বসবাস করতেন। প্রতিবেশীদের তথ্যমতে এলাকার চিহ্নিত কিছু বখাটে কিশোরদের যাতায়াত ছিল তার বাড়িতে। ঘটনার দিন ১০ জুলাই (ঈদের দিন) অভিযুক্ত রাত ২টার পর কৌশলে ভুক্তভোগির ঘরে প্রবেশ করেন। এরপর ঘুমন্ত অবস্থায় তাকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।

তার মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর ঘরে থাকা ১৮ হাজার টাকা, একটি মোবাইল ফোন ও কিছু স্বর্ণের গহনা নিয়ে চলে যায়। ঘটনার পরেরদিন পুলিশ খবর পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করেন এবং ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।

প্রাথমিক ভাবে ইউডি মামলাভুক্ত করলেও গত ১৩ জুলাই নিহতের ভাই আবু মুসা বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ওই কর্মকর্তা বলেন, এ ঘটনার পর থেকে আমরা প্রাথমিক তথ্য ও অনুসন্ধান শেষে সোমবার অভিযুক্তকে আটক করতে সক্ষম হই। সেই সাথে অভিযুক্তের পিতার নিকট থেকে ওই টাকা, গহণা ও মুঠোফোন পাওয়া যায়। যার কারণে তাকেও আটক করা হয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের আগে ধর্ষণ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, লাশের প্রাথমিক তদন্তে ধর্ষণ হওয়ার নমুনা কিছুটা বুঝা গেছে, তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া চুড়ান্ত কিছুই বলা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, আটককৃত কিশোর জিজ্ঞাসাবাদে একাই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে স্বীকার করেছেন। তবে আরো কেও জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

নিহতের প্রতিবেশীরা বলছেন, গ্রেপ্তারকৃত শুভ কিশোরগ্যাং সদস্য। তাদের গ্রুপে ১২-১৪ জন কিশোর-যুবক রয়েছে। অপরদিকে নিহত স্বাস্থ্যকর্মীর দুইবার বিয়ে হয়। এরপর থেকে সে নির্জন এলাকায় ঘর বানিয়ে একাই থাকতো। আর ওই কিশোর গ্রুপের অধিকাংশদের দিনরাত যাতায়াত ছিল নিহতের বাড়িতে। নানা প্রলোভন দিয়ে কিশোরদের সাথে ওই স্বাস্থ্যকর্মী শারীরিক সম্পর্ক করতো। বিষয়টি গ্রামের অনেকেই জানেন। তবে মানসম্মানের ভয়ে প্রতিবেশী কেউ প্রতিবাদ করেননি।

থানার ওসি সোহরাওয়াদী হোসেন বলেন, হত্যাকাণ্ডের অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে নিজে ওই নারীর উপর ক্ষীপ্ত হয়ে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেছে। আমরা তাকে ও তার পিতাকে আদালতে পাঠিয়েছি।