ঢাকা | নভেম্বর ২০, ২০২৪ - ৯:৩৫ অপরাহ্ন

শিশুকে যৌন হয়রানির চেষ্টা সালিশে জরিমানার অর্থ বাটোয়ারা

  • আপডেট: Saturday, July 16, 2022 - 11:23 pm

 

পুঠিয়া প্রতিনিধি: পুঠিয়ায় খাবার জিনিসের প্রলোভন দিয়ে এক শিশুকে যৌন হয়রানীর চেষ্টা করা হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রামের সালিশদাররা অভিযুক্তকে ৯০ হাজার টাকা জরিমানা ও জুতা পেটা করেন। ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, চেয়ারম্যানের লোকজন বিষয়টি আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধা দেয়। সেই সাথে তারা গ্রামে সালিশ বসায় এবং জরিমানার অর্থ তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ভাগ বাটোয়ারা করে নেন। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে ক্ষোভ ও নানা রকম গুঞ্জন শুরু হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) দুপুরে উপজেলার ভালুকগাছি ইউনিয়নের খামারপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তের নাম অপির করিগর (৪৫)। তিনি ওই গ্রামের মৃত কবির কারিগরের ছেলে। অপরদিকে ভুক্তভোগী ওই শিশু (৮) স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী।

ভুক্তভোগী শিশুর পরিবার জানায়, ওই শিশু ও অভিযুক্ত অপির কারিগর সম্পর্কে প্রতিবেশী চাচা ও ভাতিজি হয়। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে খাবার জিনিসের প্রলোভন দিয়ে অভিযুক্ত বাড়ির পাশের একটি কচু খেতে ডেকে নেয়। সেখানে শিশুটিকে যৌন হয়রানীর চেষ্টা করে। সে সময় তার চিৎকারে বাড়ির লোকজন ছুটে যায়। লোকজন দেখে অভিযুক্ত পালিয়ে যায়। বিষয়টি আইনগতভাবে যেতে চাইলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও তার অনুসারিরা বাধা দেয়। পরে তারা গত শুক্রবার রাতে চেয়ারম্যানের বাড়িতে সালিশ বসায়। আর সেখানে অভিযুক্তকে জরিমানা করে এবং সে টাকা তারা ভাগ বাটোয়ারা করে নেয়।

ভালুকগাছি ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি সুধীর চন্দ্র কর্মকার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অপির কারিগর সমাজে একজন চিহ্নিত বখাটে। সে এর আগেও কয়েকটি অসামাজিক কার্যকলাপ ঘটিয়েছে। গ্রামে একাধিকবার তার বিচার সালিশ হয়েছে। গত পরশুদিন (বৃহস্পতিবার) গ্রামের একটি ছোট মেয়েকে যৌনচারের চেষ্টা করে। সে ঘটনায় গত শুক্রবার রাতে ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের বাড়িতে একটি সালিশ বসে। শালিসে অভিযুক্তকে ৭টি জুতা মারা হয় ও ৯০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। যদ্দুর জানি জরিমানার অর্থ ক্লাব ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বণ্টন করে দেয়া হয়েছে।

তবে ভালুকগাছি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাকবির হাসান বলেন, এটা নরমাল বিষয়, তাই আমরা সামাজিকভাবে সমাধান করেছি। বেশী কিছু হলে অভিযুক্তকে থানা পুলিশে দিতাম। সালিশে কি রায় দেয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৯০ হাজার টাকা ও ৭টি জুতার বারি। তবে অভিযুক্তের ভাইকে দিয়ে জুতা মারা হয়। তিনি বলেন, যেহেতু ভুক্তভোগীর পরিবার স্বচ্ছল তাই বিচারের জুরি বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক জরিমানার অর্থ এলাকার এতিমখানা, মাদ্রাসা ও ক্লাব ঘরে সমবণ্টন করে দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে থানার ওসি সোহরাওয়াদী হোসেন বলেন, বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। তবে এখনো পর্যন্ত ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে অব্যশই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।