গর্ভের সন্তান নষ্ট করায় স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর মামলা
নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর নিয়ামতপুরে যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে নির্যাতন করে গর্ভের সন্তান হত্যার অভিযোগে স্বামী সগেন চন্দ্র বর্মনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ করেছেন এক নারী।
আদালত ওই নারীর অভিযোগ পত্রটি আমলে নিয়ে নিয়ামতপুর থানাকে এজাহার নিতে বলে। বৃহস্পতিবার রাতে অভিযোগপত্রটি এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করে নিয়ামতপুর থানা পুলিশ। এ মামলায় অন্যান্য অভিযুক্তরা হলেন ভাসুর মংলু বর্মন, দেবর হরিপদ বর্মন, ননদ অঞ্জলী বর্মন ও ভাসুরের ছেলে শ্রী নয়ন। মামলার বাদী সগেন চন্দ্র বর্মনের স্ত্রী আরতী রাণী (৩৩) নিজেই। তিনি উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের মদনাকান্দর গ্রামের মৃত ধীরেন্দ্রনাথ বর্মনের মেয়ে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালের ২৭ এপ্রিল হিন্দু (সনাতন) ধর্ম মতে আরতী রানীর সাথে একই গ্রামের অনিল বর্মনের ছেলে সগেন চন্দ্র বর্মনের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় মেয়ের পরিবার স্বর্নের গহনা বাবদ মেয়ে জামাইকে ২ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা এবং পণ হিসেবে নগদ ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করে। পরবর্তীতে আরতী রানীর বাবা-মার মৃত্যুর পর শশুরালয়ে বসবাস শুরু করে সগেন চন্দ্র বর্মন। এরি মাঝে তাদের কোলজুড়ে আসে একটি কন্যা সন্তান। যার নাম তৃষা বর্মন (১১)।
অভাব অনটনের সংসারে স্বামী সগেন মাঝে-মধ্যেই টাকা দাবী করতো স্ত্রীর নিকট। সম্প্রতি তিনি ৩ লক্ষ টাকার যৌতুক দাবি করে বসেন স্ত্রীর কাছে। আরতী রানী এ টাকা দিতে অনীহা প্রকাশ করলে গত ২৩ জুন পরিবারের সদস্যদের প্ররোচনায় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে অন্তঃস্বত্তা আরতী রানীকে বেদম মারধর করে স্বামী সগেন চন্দ্র বর্মন।
স্থানীয়রা ছুটে এসে আহত আরতী রানীকে উদ্ধার করে নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে নিয়ে যায় বাবার বাড়ি। পর দিন ২৪ জুন পেটের ব্যথা উঠলে স্বজনরা আরতী রানীকে ক্লিনিকে নিয়ে যায়। সেখানে ডাক্তাররা চেষ্টা করেও আরতীর পেটের সন্তানকে বাঁচাতে পারেননি। এমন ঘটনায় বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মিমাংসা না হলে বৃহস্পতিবার নওগাঁ আদালতে গিয়ে স্বামী সগেন ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন আরতী রানী।
আরতী রানী জানান, ‘তার বাবা অনেক টাকা দিয়েছে স্বামী সগেনকে। বাবার মৃত্যুর পর সে আমার বাবার বাড়িতে থাকা শুরু করে। এতেও কোন সমস্যা ছিলনা তার। কিন্তু টাকার জন্য মাঝে-মধ্যেই নির্যাতন করে আমাকে। সম্প্রতি তার নির্যাতনে আমার গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
ঘটনা জানতে চাইলে নিয়ামতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, আদালতের নির্দেশে অভিযোগটি মামলা হিসাবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।