ঢাকা | জুলাই ২৬, ২০২৪ - ৯:২৮ পূর্বাহ্ন

চামড়ার ন্যায্য দাম মেলেনি

  • আপডেট: Wednesday, July 13, 2022 - 11:06 am

অনলাইন ডেস্ক: কোরবানির পশুর চামড়ার দামের কথা ভুলেই গেছে অনেকে। বিপর্যয়কর এ অবস্থা এক যুগেরও বেশি সময়ের। তবে ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত যে মহাবিপর্যয়কর ও ভয়াবহ পরিস্থ্থিতি তৈরি হয়েছিল, এ বছর তেমনটি হয়নি। ন্যায্য মূল্য তো নয়ই, কোথাও সরকারের বেঁধে দেওয়া দরেও চামড়া কেনাবেচা হয়নি। তবে গতবারের তুলনায় চামড়াপ্রতি ঢাকায় ১০০-২০০ টাকা, দেশের অন্যত্র ৫০-১০০ টাকা বেশি দর পাওয়া গেছে। ছাগলের চামড়ার বেশিরভাগ গত বছরের মতো নষ্ট হয়েছে। তবে ক্রেতার অভাবে বা দাম না পেয়ে গত বছরের মতো গরুর চামড়া নষ্ট বা পুঁতে ফেলার ঘটনা ঘটেনি।

চামড়ার দাম কমার কারণ হিসেবে ঢাকার বড় মৌসুমি ব্যবসায়ী, আড়তদার ও ট্যানারি মালিকদের দাবি, সাভারের চামড়া শিল্প নগরী পুরোপুরি আন্তর্জাতিক ‘কমপ্লায়েন্স’ অনুসরণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রকৃত আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যে রপ্তানি করা যাচ্ছে না। কেমিক্যাল, লবণ ও শ্রমিক মজুরিকেও দায়ী করলেন তাঁরা।

তার পরও চাহিদা অনুযায়ী এ বছর চামড়া না পাওয়ায় গতবারের তুলনায় আকার ভেদে চামড়াপ্রতি ১০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বেশি দাম দিয়েছেন। যদিও ঢাকার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের দিন রাত ৯টার পর লালবাগের পোস্তায় গত বছর বড় গরুর যে চামড়া ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়ও কেনার কেউ ছিল না, এবার তা হাজার থেকে ১২শ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

অর্থাৎ চামড়ার দাম গত বছরের তুলনায় অনেকটা বেড়েছে। তবে এটাও ঠিক, চামড়ার প্রকৃত দাম হওয়া উচিত বা এক যুগ আগের তুলনায়ও এবারের বাজারদর চারভাগের একভাগও নয়। পোস্তার পারভেজ হোসাইন বলেন, ২০১২-১৩ সালেও বড় চামড়া ৪ হাজার ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। গত বছর একই সাইজের চামড়ার দর ছিল ৬০০-৭০০ টাকায়। এ বছর ওই সাইজের চামড়ার জন্য সর্বোচ্চ ১২শ টাকা দাম দিতে হয়েছে।

ঢাকার বাইরের অবস্থা অতটা স্বস্তিদায়ক নয়। গ্রামাঞ্চল তো বটেই সব মফস্বল শহর, এমনকি জেলা ও বিভাগীয় শহরেও বিক্রেতারা চামড়ার ভালো দাম পাননি। ৫ থেকে ৭ লাখ টাকার বড় গরুর চামড়ার দামও কোথাও কোথাও দুইশ টাকা, কোথাও পাঁচশ টাকা সেধেছেন ছোট মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। গত তিন বছরে ব্যবসায় মন্দা থাকায় এ বছর পাড়া-মহল্লাভিত্তিক ছোট মৌসুমি ব্যবসায়ীর সংখ্যা ছিল কম। কোরবানিদাতারাও চামড়া বিক্রির অপেক্ষায় না থেকে মাদ্রাসা, এতিমখানা বা মসজিদে দান করেছেন।

এ বছরও ছাগলের চামড়ার ক্রেতা মেলা ছিল ভার। সরকার প্রতি বর্গফুট ছাগলের চামড়ার দাম ২০ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও কোথাও কোথাও ১০ থেকে ১৫ টাকা দরে কেনাবেচা হয়েছে। ছোট ছাগলের চামড়ার কোনো ক্রেতাই ছিল না। ঈদের দিন সায়েন্স ল্যাবরেটরির সামনে মাদ্রাসা ও এতিমখানার খাদেমরা এসে শতাধিক ছাগলের চামড়া গড়ে ১৫ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। ক্রেতা না পেয়ে কেউ কেউ ফেলে গেছেন। গরুর চামড়ার ক্ষেত্রে এমনটি হয়নি। কম বা বেশি হোক, গরুর চামড়া কেনাবেচা হয়েছে। প্রতি বর্গফুট লবণ দেওয়া কাঁচা চামড়ার দাম গত বছরের তুলনায় ৭ টাকা বাড়িয়ে ৪৭ টাকা থেকে ৫২ টাকা নির্ধারণ করেছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ঢাকার বাইরে দর নির্ধারণ করা হয় ৪০ থেকে ৪৪ টাকা।

সরেজমিন চামড়ার বাজার :বছরজুড়ে দেশে যত চামড়া সংগ্রহ হয়, তার ৬০-৭০ ভাগই সংগ্রহ কোরবানির ঈদে। ঈদকেন্দ্রিক চামড়ার বাজার বসে পথেঘাটে অস্থায়ী হাটে। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা দাম-দর করে গড় মূল্যে চামড়া কেনেন। আবার কোনো মাদ্রাসা ভালো দাম পেতে পোস্তার অস্থায়ী হাটে, আড়তে বা সরাসরি ট্যানারিতে নিয়ে বিক্রি করেন।

ঈদের দিন বিকেল সাড়ে ৩টায় খিলগাঁও তালতলা মার্কেট সংলগ্ন মিছবাহুল উলুম মাদ্রাসায় দেখা গেল, শিক্ষক বকুল ইসলাম প্রায় পাঁচশ চামড়া নিয়ে বসে আছেন। মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকরা পশুর চামড়া নিয়ে আসছেন। বকুল ইসলাম জানান, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা গড়ে প্রতিটি চামড়ার দাম সর্বোচ্চ ৮০০ টাকা বলেছেন। তিনি ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা দরে চামড়া বিক্রির অপেক্ষায় ছিলেন। এর আধাঘণ্টা পর রামপুরা রোডের নুর মসজিদ হিসেবে পরিচিত শেখ জনুরুদ্দীন র. দারুল কুরআন মাদ্রাসায় গিয়ে জানা গেল, প্রিন্সিপাল মাহফুজুল হক ২৭৪ পিস চামড়া গড়ে ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। এমন দরে চামড়া বিক্রিতে আফসোস ছিল তাঁর।

বিকেল ৫টায় রাজধানীর কাঁঠালবাগান বাজারে কথা হয় মৌসুমি ব্যবসায়ী আব্দুল খালেকের সঙ্গে। প্রায় একশ চামড়া কিনে এনেছেন গড়ে ৮০০ টাকা দরে। তাঁর আফসোস, মিরপুর রোডে সাইন্স ল্যাবরেটরির সামনের রাস্তায় অস্থায়ী হাটে আড়তদাররা ৭০০ টাকার বেশি দাম দিতে রাজি নন। তিনি তখনও লোকসানের শঙ্কায় ছিলেন। সায়েন্স ল্যাবরেটরির সামনে মৌসুমি ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন ৩৫ থেকে ৪০ বর্গফুটের চারটি বড় চামড়াসহ আটটি চামড়া গড়ে ৯৫০ টাকা করে দাম চাচ্ছিলেন। ক্রেতারা গড়ে সর্বোচ্চ ৮০০ টাকা দিতে আগ্রহ দেখাচ্ছিলেন। জামাল বলেন, যে দাম বলা হচ্ছে তাতে কেনা দামই উঠবে না।

এক সময়ের জমজমাট হাজারীবাগের চামড়া পল্লি ২০১৭ সালে সাভারের হেমায়েতপুরে স্থানান্তরের পর এ এলাকায় এখন সুনসান নীরবতা। তবু ঈদের দিনে সেখানে বিক্ষিপ্তভাবে চামড়া কেনাবেচা হয়েছিল। সেখানকার মৌসুমি ব্যবসায়ী স্ব্বপন বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত মাত্র দেড়শ চামড়া কিনেছেন ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা দরে, যেখানে তাঁর লক্ষ্য সাড়ে চার হাজার চামড়া কেনার। এ সময় মোহাম্মদপুর থেকে পাড়ার মৌসুমি ব্যবসায়ী সোহেল পিকআপ ভ্যানে শতাধিক চামড়া এনে গড়ে ১১শ টাকা দাম চান। কিন্তু আড়তদার সাফায়েত ৭০০ টাকার বেশি দর দিতে রাজি নন। তিনি বলেন, চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে যে কেমিক্যাল দরকার তার বাজারদর এখন দ্বিগুণ। লবণের বস্তাপ্রতি দাম ৭০০ টাকা থেকে বেড়ে ১১শ টাকা। শ্রমিক মজুরিও বেড়েছে। ফলে এর থেকে বেশি দরে কিনলে ট্যানারির কাছে বিক্রি করে আসল দামও মিলবে না।

ঈদের দিন বিকেল পর্যন্ত দাম ছিল না পোস্তায় :ঈদের দিন রাত ৮টা। আজিমপুর মোড় ঘুরে ঢাকেশ্বরী মোড়ে কথা হয় হাজারীবাগের দারুস সুন্না মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা মিজানুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, প্রায় দুইশ চামড়ার দাম গড়ে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা বলছেন আড়তদার। একই সময়ে লালবাগের ছোট মৌসুমি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শাহীন ১৪ ছোট ও মাঝারি আকারের ১৪টি চামড়া আনেন বিক্রি করতে। কিন্তু ক্রেতা দুটি বাতিল করে বাকি ১২টির দর গড়ে ৬৫০ টাকা সাধছেন। শাহীন বলেন, ১৪ পিস চামড়া গড়ে ৬৫০ টাকা দরে কেনা। গাড়ি খরচ আছে। এখন লোকসানেই বিক্রি করতে হচ্ছে। আড়তদার তাহের জানান, গতবছরের তুলনায় গড়ে প্রতি বর্গফুট চামড়া ২ থেকে ৫ টাকা বেশি দরে কিনছেন। বড় চামড়া হলে ৭৫০ থেকে ৭৭০ টাকা দরও দিয়েছেন। সরকার যেখানে প্রতি বর্গফুট চামড়ার দাম ৭ টাকা বাড়িয়েছে, সেখানে তার কমে কেন কেনা হচ্ছে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কেমিক্যাল ও লবণের দাম বেড়েছে। এর থেকে বেশি দরে কিনলে লোকসান হবে।

দাম বৃদ্ধি :ঈদের দিন রাত ৯টার পরই পরিস্থিতি বদলাতে থাকে। রাত ৮টায়ও যে চামড়া ৬০০ টাকায় কেনাবেচা হয়েছিল তা ৭০০ টাকা ছাড়ায়। বড় চামড়ার দাম ৮৫০ থেকে ৯৫০ টাকায় ওঠে। ইম্মা ট্যানারির প্রতিনিধি আওয়াল প্রায় ৩০ বর্গফুটের একটি চামড়া সেলিম নামের এক বিক্রেতার কাছ থেকে ৯৫০ টাকায় কেনেন। এ অবস্থা ঈদের পরদিনও চলেছে। গত সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় লালবাগ কেল্লার মোড়ে হাজি ফয়জুল হক আড়তের মালিক মোহাম্মদ ওয়াসিম রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন বিক্রেতার অপেক্ষায়। তার লক্ষ্য ছিল অন্তত তিন হাজার চামড়া কেনার। কিন্তু ঈদের দিন ও পরের দিন ১২শ এবং পরের দিন ২০০ মিলে দেড় হাজার চামড়াও কিনতে পারেননি। তিনি জানালেন, একই অবস্থা অন্য সবার।

সরাসরি ট্যানারিতে দাম বেশি :ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানাগুলো আগে নিজের জায়গায় বসেই ফড়িয়াদের কাছে চামড়া বিক্রি করত। গত কয়েক বছর তাঁদের সংখ্যা কমায় পোস্তায় গিয়ে রাস্তার ওপর বিক্রি করতে হচ্ছে। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো দর দিচ্ছেন। তবে যাঁরা সরাসরি ট্যানারির কাছে চামড়া বিক্রি করছেন তাঁরা ভালো মূল্য পাচ্ছেন। হাজারীবাগের কালুনগরের সামিনা ট্যানারিতে রায়েরবাগের জনতাবাদ আল নূর মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, প্রতি বছরই তাঁরা এ ট্যানারিতে চামড়া দেন। এবার ৩৬২টি চামড়া এনেছিলেন। ছোট-বড় মিলে বাকি ৩৫০ পিস গড়ে ৯২০ টাকা দরে কিনেছে ট্যানারি। গত বছর এ চামড়াই ৮০০ টাকা দরে বিক্রি করেছিলেন তাঁরা।

ঢাকার বাইরের চামড়ার বাজার :বন্দরনগরী চট্টগ্রামের পাশের উপজেলা বোয়ালখালীর ধোরলা গ্রামে এক সময় মৌসুমি ব্যবসায়ীদের চার থেকে পাঁচটি গ্রুপ চামড়া কিনতে আসত। এবার পুরো গ্রামে চামড়া সংগ্রহ করেছে মাত্র একটি গ্রুপ। ফলে প্রতিযোগিতা না থাকায় মর্জিমাফিক দামে চামড়া সংগ্রহ করেছেন তাঁরা। লাখ টাকার গরুর চামড়ার দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকার বেশি দেননি। চামড়া সংগ্রহকারী নূর মোহাম্মদ জানান, তিনি প্রতিটি গরুর চামড়া ১৫০ থেকে সর্বোচ্চ ২০০ টাকায় কিনছেন।

গত বছর খুলনায় ৩০০ টাকার ওপরে চামড়া বিক্রি হয়নি। এ বছর মাঝারি গরুর চামড়া ২০০-৩০০ টাকায় এবং বড় গরুর চামড়া ৪০০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে নামমাত্র মূল্যেই চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন এমন অভিযোগ ক্ষুদ্র মৌসুমি বিক্রেতা, এতিমখানা ও মাদ্রাসাগুলোর। নগরীর শেখপাড়া চামড়াপট্টি ঘুরে দেখা গেছে, ১৪/১৫ জন ব্যবসায়ী চামড়া কিনেছেন। নগরীর বাগমারা জামিয়া আরাবিয়া আবু বকর সিদ্দিক (রা.) মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোডিংয়ের শিক্ষক মাওলানা ইউসুফ শেখ জানান, ঈদে ৮৭টি চামড়া সংগ্রহ করেছেন। বড় চামড়া গড়ে ৪৫০ টাকা এবং মাঝারি গরুর চামড়া ৩০০ টাকায় বিক্রি করতে হয়েছে।

সমকালের রংপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ৩০ হাজার চামড়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন আড়তদাররা। এখন পর্যন্ত কোনো ট্যানারি মালিক রংপুরে আসেননি। নগরীর শাপলা চত্ত্বরের চামড়া পট্টিতে ঈদের দিন থেকে চামড়া কিনছেন আড়তদাররা। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে চামড়া কিনে আড়তে দিলেও এবার তাদের দেখা যায়নি। ফুল আমেরতল এলাকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, খাসির চামড়া আড়তদাররা নেয় না। গরুর চামড়া ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কেউই সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া বিক্রি করতে পারেননি।

এ বছর বরিশালে মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের কম দেখা গেছে। মাদ্রাসা-এতিমখানাগুলো চামড়া সংগ্রহ করে পদ্মাপতি ও হাটখোলা এলাকার চামড়া ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন। ব্যবসায়ীরা জানান, তাঁরা ছাগলের চামড়া কেনেননি। গরুর চামড়া কিনেছেন অর্ধেক টাকা বাকি রেখে। ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের দারুচ্ছুন্নাত মাদ্রাসার মোহতারামি মাওলানা রূহুল আমিন জানান, পোর্ট রোড মোকামের ব্যবসায়ীরা ছাগলের চামড়া না কেনায় সেখানেই ফেলে আসতে হয়েছে।

সিলেটের লালাবাজারের ব্যবসায়ী গেদা মিয়া জানান, তিনি ছোট আকারের গরুর চামড়া ২০০-২৫০ টাকায়, মাঝারি গরুর চামড়া ৪০০-৪৫০ টাকায় এবং বড় গরুর চামড়া ৫০০-৬০০ টাকা দরে কিনেছেন। ঈদের দিন বিকেলে রাজশাহীর পুঠিয়ায় পাইকার ক্রেতা দেখা যায়নি। ফড়িয়ারাই মৌসুমি হাটে চামড়া কেনাকাটা করছিলেন। তাঁরা জানান, গতবছর অনেক চামড়া ফেলে দিতে হয়েছিল। এবার গরুর চামড়া ফেলতে হয়নি। কেনাবেচা হয়েছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা দরে।

এ বছর দেশব্যাপী গরু ও ছাগল মিলে এক কোটি পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করে বাংলাদেশ ট্যানারস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ)। সংগঠনটির চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ বলেন, চামড়া সংরক্ষণ ও ব্যবস্থা উন্নত করার কারণে চামড়া বাজারে বিরূপ পরিস্থিতি হয়নি। বরং ৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। হেমায়েতপুরে চামড়া শিল্প নগরির ব্যবস্থাপনা ও কমপ্লায়েন্স উন্নত করা গেলে ভবিষ্যতে চামড়ার দর আরও বাড়বে।

কত পশু কোরবানি হয়েছে :প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এবার সারাদেশে ৯৯ লাখ ৫০ হাজার ৭৬৩টি গবাদি পশু কোরবানি হয়েছে। এজন্য প্রস্তুত করা হয়েছিল এক কোটি ২১ লাখ পশু। অবিক্রীত থেকেছে ২১ লাখ ৫০ হাজার ২৩৭টি পশু। গত বছর কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ছিল এক কোটি ১৯ লাখ ১৬ হাজার ৭৬৫টি। এর মধ্যে কোরবানি হয় ৯০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪২টি। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এ বছর আট লাখ ৫৭ হাজার ৫২১টি পশু বেশি কোরবানি হয়েছে।

সোনালী/জেআর