পদ্মাপাড়ে প্রাণের উচ্ছ্বাস
স্টাফ রিপোর্টার: পশ্চিম আকাশে সূর্যটা যখন হেলে পড়লেই আকাশটা সেজে ওঠে এক মায়াবী রঙে। ওপরে মায়াবী আকাশ আর নিচে পদ্মার স্রোত রেখে দল বেধে নৌকা ভ্রমণে নেমে পড়েন ভ্রমণ পিপাসুরা। রোজ বিকালেই এমন দৃশ্যের দেখা মেলে রাজশাহীর পদ্মা নদীর পাড়ে। কোন উৎসব এলে তো মানুষের প্রাণের উচ্ছ্বাস দেখা যায় নদীর তীরজুড়ে। এবার ঈদুল আযহায়ও এর ব্যতিক্রম হয়নি।
রাজশাহী শহরের দক্ষিণ দিয়ে প্রবাহিত পদ্মা নদীর প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকায় মানুষের ঢল নামে গত রোববার ঈদের দিন বিকাল থেকেই। পরদিন সোমবারও অসংখ্য মানুষের পদচারণায় মুখর ছিল পদ্মাপাড়। কেউ শহর থেকে নেমে পদ্মার বালুচরের কাঁশবনে ঘুরে বেড়িয়েছেন, কেউ আরেকটি হেঁটে গিয়ে অল্প পয়সার বিনিময়ে উঠেছেন মাঝিদের নৌকায়।
পদ্মার অবারিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে এবারও ঈদের ছুটিতে সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে নগরীর লালন শাহ মুক্তমঞ্চ এলাকায়। এরপরই মানুষের আনাগোনা বেশি ছিল শ্রীরামপুর টি-বাঁধ, বড়কুঠি, পঞ্চবটি আইবাঁধ ও ফুলতলা ঘাট এলাকায়। কেউ পরিবারের সঙ্গে আবার কেউ কেউ বন্ধু-বান্ধবীদের সঙ্গে ঘুরে বেড়িয়েছেন পদ্মাপাড়ে।
সোমবার বিকালে শ্রীরামপুর টি-বাঁধ এলাকায় কথা হয় একটি টেলিকম কোম্পানির কর্মকর্তা আরিফুর রহমানের সঙ্গে। স্ত্রী আর ছোট্ট মেয়েটাকে নিয়ে পদ্মাপাড়ে গিয়েছিলেন তিনি। আরিফুর রহমান জানান, ছুটিতে বাড়ি এলেই পরিবার নিয়ে পদ্মাপাড়ে আসা হয়। এবার ঈদে বাচ্চাটাকে চিড়িয়াখানায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু শোনেন চিড়িয়াখানা এখন বন্ধ। তাই নির্মল বাতাসের টানে আবারও ছুটে এসেছেন পদ্মা নদীর তীরে।
ঈদের ছুটিতে পদ্মাপাড়ে ছুটে আসা হাজার হাজার বিনোদনপিপাসু মানুষের জন্য নৌকার মাঝিদেরও আয়-রোজগার ভাল হয়েছে। পদ্মার পাড়ে গড়ে ওঠা ছোট ছোট রেস্তোরাঁ মালিক, চটপটি, ফুচকা, আচারের দোকানী কিংবা শিশুদের খেলনা-বেলুন বিক্রেতাদেরও ব্যবসা জমে উঠেছিল বেশ। এই দুই দিন সবখানেই সবার ব্যস্ততা দেখা গেছে চোখে পড়ার মত।
টি-বাঁধ এলাকার আচারের দোকানী আবদুস সালাম বললেন, গতবছরও করোনার কারণে ঈদে মানুষের আগমন ছিল একটু কম। এবার করোনার ভয় না থাকায় প্রচুর মানুষ এসেছে। তাই আমাদের ব্যবসাও হয়েছে ভাল। এখন ঈদ চলে গেলেও রোজই পদ্মাপাড়ে মানুষ আসবেন।