ঢাকা | জুলাই ২৬, ২০২৪ - ৯:২৮ পূর্বাহ্ন

চামড়া সংগ্রহের ব্যস্ততা

  • আপডেট: Sunday, July 10, 2022 - 5:40 pm

অনলাইন ডেস্ক: ঢাকায় ঈদের নামাজের পরপরই শুরু হয়েছে পশু কোরবানি। বরাবরের মত এবারও রাজধানীর পশু কোরবানি হচ্ছে রাস্তার পাশে আর অলিতে গলিতে। সেখানেই জবাই করা পশুর শরীর থেকে চামড়া ছাড়িয়ে আলাদা করা হচ্ছে। মৌসুমি ব্যবসায়ীরাও চামড়া কিনতে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সাধারণত স্থানীয় মসজিদ-মাদ্রাসা ও এতিমখানাগুলোর লোকজনই পাড়া মহল্লার বাড়ি বাড়ি ঘুরে দান হিসেবে চামড়া সংগ্রহের কাজটি করে। আবার কিছু মৌসুমি ব্যবসায়ীও ঈদের দিন চামড়া কিনে নেন।

রোববার সকাল থেকেই চলছে তাদের চামড়া সংগ্রহের তৎপরতা। পরে তা বিক্রি হবে চামড়ার পাইকার ব্যবসায়ীদের কাছে।

পোস্তার পাইকাররা সেই চামড়ায় লবণ দিয়ে সংরক্ষণের প্রাথমিক কাজটি সেরে বিক্রি করেন ট্যানারিতে। ট্যানারি কেমন দামে চামড়া কিনবে, তা প্রতিবছর নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিছু কিছু ট্যানারি ফড়িয়াদের মাধ্যমে সরাসরি কম দামেও চামড়া সংগ্রহ করে।

সরকারের বেঁধে দেয়া দর অনুযায়ী, ট্যানারি ব্যবসায়ীদের এবার ঢাকায় লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া কিনতে হবে ৪৭ থেকে ৫২ টাকায়। আর ঢাকার বাইরে এই দাম হবে ৪০ থেকে ৪৪ টাকা।

এছাড়া লবণযুক্ত খাসির চামড়া সাড়া দেশে ১৮ থেকে ২০ টাকায় কিনবে ট্যানারি। প্রতিটি ক্ষেত্রেই গতবারের চেয়ে দাম বেড়েছে ৭ টাকা।

তবে ফড়িয়া বা মৌসুমি ব্যবসায়ীরা কোরবানি দাতাদের কাছ থেকে বর্গফুট হিসাবে চামড়া কেনেন না। আকার বুঝে মোটের ওপর একটি দাম তারা দেন। সেখানে কিছু লাভ রেখে তারা পাইকারদের বিক্রি করেন।

পাইকাররা নিজেদের লাভ রেখে সরকারের ওই নির্ধারিত দরে বা তার বেশি দামে বিক্রি করেন ট্যানারিতে।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চামড়ার স্তূপ জমতে দেখা যায়। কেউ কেউ আবার ভ্যানে করেও চামড়া নিয়ে যাচ্ছিলেন।

জিগাতলা এলাকার আকবর আলী নামের একজন বলেন, আজ সকাল ৮ টা থেকে পশু কোরবানি শুরু হয়েছে। এক ঘণ্টা লাগে পশুর শরীর থেকে চামড়া ছাড়াতে। আমরা ১২টার দিকে চামড়া সংগ্রহ করতে নেমেছি। দুপুর ২টা পর্যন্ত হাজারী বাগ, ধানমন্ডি ও রায়ের বাজার এলাকায় আমাদের ৫০ জন কাজ করছে। এ পর্যন্ত ৩৫০টি চামড়া সংগ্রহ করেছি। বিকাল ৫টার দিকে লালবাগের পোস্তায় নিয়ে বিক্রি করবো।

তিনি বলেন, এবছর সরকার লবণযুক্ত চামড়া ৪৭ থেকে ৫৫ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। তবে আমরা লবন ছাড়া কাঁচা চামড়া নিচ্ছি। প্রতিটি বড় সাইজের চামড়া ১৫০০ টাকা, মাঝারি সাইজের চামড়া ১২০০ টাকা, এর থেকে ছোট ৮০০ থেকে এক হাজার এবং ছোট চামড়া ৫০০ টাকা এবং সবচেয়ে ছোট চামড়া ৩০০ টাকায় বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি। গত বছর পানির দামে চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে। আশা করছি এবছর ভালো দাম পাবো।

জানা গেছে, কোরবানির চামড়া সংগ্রহের মাধ্যমেই টিকে আছে দেশের তৃতীয় বৃহৎ রফতানি খাত ট্যানারি ব্যবসা। শুধু তা-ই নয়, ঈদের সময় দেশের বিভিন্ন মাদ্রাসা ও এতিমখানার সংগ্রহ করা চামড়া বিক্রি করে যা টাকা হয়, তার মাধ্যমে তাদের চার-পাঁচ মাসের খরচও উঠে আসে। তাই প্রতি বছর ঢাকা শহরের অলিগলি ও প্রধান সড়ক এবং গ্রামে গ্রামে চামড়া সংগ্রহের কাজে এগিয়ে থাকে স্থানীয় মসজিদ-মাদ্রাসা ও এতিমখানা কর্তৃপক্ষ। পরে তা বিক্রি হয় চামড়া ব্যবসায়ীদের কাছে। বেশির ভাগ চামড়া মূলত তাদের মাধ্যমেই বড় ব্যবসায়ীদের কাছে যায়।

সোনালী/জেআর