ঢাকা | অক্টোবর ৬, ২০২৪ - ৪:৫৬ অপরাহ্ন

৩৩ মণের `শান্তবাবু’কে নিয়ে মহাবিপাকে আলিম উদ্দীন

  • আপডেট: Thursday, July 7, 2022 - 10:25 pm

এইচ এম শাহনেওয়াজ, পুঠিয়া থেকে: বিক্রি না হওয়ায় গত তিন বছর থেকে ৩৩ মণ ওজনের “শান্তবাবু’কে (ষাঁড়) নিয়ে মহাবিপাকে আছেন মালিক আলিম উদ্দীন। শান্তবাবু’কে পুষতে তিনি কয়েক লাখ টাকা ঋনে আছেন। আশা করছেন এ বছর ঈদুল আযাহায় তার প্রাণপ্রিয় ষাঁড়টি ১০ লাখ টাকা হলেও বিক্রি করবেন। আর সে বিক্রিত ওই টাকায় সংসাবের মোটা অংকের দেনা পরিশোধ করবেন।

 রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার কান্দ্রা গ্রামে গিয়ে কথা হয় শান্তবাবু’র মালিক আলিম উদ্দীনের সাথে। তিনি বলেন, শান্ত বাবুর বয়স সাড়ে ৪ বছর। এখন তার ওজন প্রায় ৩৩ মণ। গত দুই বছর ঈদুল আযাহায় তাকে বিক্রির জন্য অনেক চেস্টা করেছিলাম। কিন্তু মহামারি করোনার প্রভাবে ও দর দামে না হওয়ায় তাকে বেচা হয়নি। এরপর এলাকার লোকজন কশাইয়ের কাছে বিক্রি করতে বলেছিল। কিন্তু আমি তাকে কশাইয়ের কাছে বেচতে চাই না। আমি তাকে কুরবানির জন্য প্রস্তুত করেছি। যার কারণে আরো এক বছর শান্তবাবুকে পুষেছি। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, শান্তবাবু’কে পুষতে ইতিমধ্যে দেড়বিঘা জমি বন্ধক দেয়া হয়েছে। আর গরুর খাবারের দোকানেও লক্ষাধিক টাকা বকেয়া পড়েছে। আশা করছি এবার ঈদে তাকে ১০ লাখে বিক্রি করা হলে সেই টাকায় সকল ঋণ পরিশোধ করে দিব।

আলিম উদ্দীনের স্ত্রী সালমা বেগম বলেন, ষাঁড়টি মোটাতাজা করতে আমরা কোনো ওষুধ, ইনজেকশন বা রাসায়নিক কিছু ব্যবহার করা হয়নি। যার কারণে গত ৪ বছরের বেশী সময় ধরে তাকে পুষছি। তিনি বলেন, ষাঁড়টিকে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়েই বড় করা হয়েছে। আর শান্তবাবুর প্রত্যেক দিনের খাদ্য তালিকায় থাকে ১৫ কেজি সবুজ ঘাস, খড়, গাছের পাতা, ভুট্টা ভাঙা, বিভিন্ন ভূসি, সরিষার খৈল, ধানের কুড়া, বিভিন্ন পাঁকা ফল ও লবণ। এসব উপাদান দিয়ে বানানো খাবার খাওয়ানো হয় ষাঁড়টিকে। তার পিছনে দৈনিক এক হাজার টাকার বেশী খরচ হয়। এতে করে গত কয়েক বছরে আমরা মানুষের কাছে কয়েক লাখ টাকার ঋণী হয়ে গেছি।

প্রতিবেশী আশরাফুল ইসলাম বলেন, চাচার এই গরু দেখতে গত দুই বছর থেকে ঈদ এলে বিভিন্ন এলাকার লোকজন আসছেন। এদের মধ্যে দুই একজন দাম দরও করছেন। তবে তারা গরু অনুসারে দাম অনেক কম বলছেন। এ কারণে তিনি গরুটি বিক্রি করতে পারছেন না। এখন তিনি গরুটিকে নিয়ে মহাবিপাকে পড়েছেন। পুঠিয়া উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জান্নাতুন ফেরদৈাস বলেন, লোকমুখে শুনে কিছুদিন আগে ওই ষাঁড়টি দেখতে গিয়েছিলাম। সাদা-কালো মিশ্রণে প্রায় ৬ ফিট উচ্চতা ও সাড়ে ৯ ফিট দৈর্ঘ্যর ষাঁড়টির ওজন প্রায় ৩৩ মণ হতে পারে। গরুটিকে সম্পূর্ণ দেশি খাবার খাইয়ে মোটাতাজা করা হয়েছে। তবে বিশাল দেহের কারণে কিছুটা স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে। সেই সাথে ওই গরুটি পেছনে অনেক ব্যয় বেড়ে যাবে।