বিমানবন্দর সড়কে উন্নয়নের দুর্ভোগ
স্টাফ রিপোর্টার: মাত্র আট কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ শুরু হয়েছে দু’বছর আগে। কিন্তু এখনও কাজ শেষ হয়নি। ফলে সড়কে চলাচলকারী মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সব সময় ধুলায় ধূসর হয়ে থাকছে সড়কটি। বৃষ্টি হলে আবার কাদায় একাকার হচ্ছে সড়কটি।
এই সড়কটি দিয়েই যাতায়াত করতে হয় রাজশাহীর হযরত শাহমখদুম (র.) বিমানবন্দরে। অবর্ণনীয় দুর্ভোগ নিয়ে রাজশাহী নওগাঁ-মহাসড়কের এই আট কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হচ্ছে আকাশপথে ভ্রমণ করা যাত্রীদেরও। রাজশাহী নগরীর রেলগেট থেকে উত্তরে আমচত্বর, বিমানবন্দর হয়ে পবার নওহাটা পর্যন্ত মহাসড়কে কাজ চলছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগে (সওজ) খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুই লেনের মহাসড়কটিকে চার লেনে উন্নীত করতে কাজ শুরু হয়েছে ২০২০ সালের জুনে। চারটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন প্যাকেজে কাজ করছে। প্রকল্পের মেয়াদ আছে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত। হাতে সময় থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করছে কচ্ছপগতিতে। ফলে দুর্ভোগ বাড়ছে।
শনিবার সকালে সড়কটিতে গিয়ে দেখা গেছে, নগরীর রেলগেট থেকে আমচত্বর পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সড়কটি সম্প্রসারণ করা হয়েছে। কিন্তু কার্পেটিং করা হয়নি। ইট-পাথর আর বালু পড়ে থাকা সড়কের ওপর দিয়ে যানবাহন গেলেই ধুলায় ঢেকে যাচ্ছে চারপাশ।
এ দিন সকালে আমচত্বর মোড়ে আগের দুই লেন সড়কটি কেটে চার লেনে প্রশস্ত করার কাজ চলছিল। ফলে সেখানে গর্ত হয়ে সড়ক সংকুচিত হয়ে পড়ে। এই সংকুচিত স্থানটি দিয়ে তিন দিকের গাড়ি চলতে গিয়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছিল। আমচত্বর থেকে নওহাটা পর্যন্ত গিয়ে দেখা গেছে, অল্প কিছু স্থানই কার্পেটিং করা হয়েছে। বাকি সড়ক কার্পেটিং হয়নি। বিমানবন্দরের প্রধান ফটক বন্ধ করে চলছে সড়কের পাশের ড্রেন নির্মাণের কাজ। এ জন্য অন্য পাশে করা হয়েছে আরেকটি গেট। গোটা সড়কে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে নির্মাণ সামগ্রী। সড়কে চলাচলকারী মানুষ ছাড়াও স্থানীয়রা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
পবার বায়া বাজার এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হাবিব বলেন, ‘সামান্য আট কিলোমিটার রাস্তার কাজ সারতে দু’বছর পার হয়ে গেল। এভাবেই পড়ে আছে দিনের পর দিন। এতে আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। অথচ এখন যে পর্যায়ে কাজ তা চাইলেই দ্রুত শেষ করা সম্ভব।’
নওহাটা এলাকার বাসিন্দা জুলফিকার আলী বলেন, ‘এই রাস্তায় দু’বছর ধরে চলাচল করতে গিয়ে মানুষ রোগবালাইয়ে আক্রান্ত হতে শুরু করেছে। ধুলাবালু নিঃশ্বাসের সাথে শরীরে ঢুকে নানা সমস্যা হচ্ছে। আমারই নতুন করে ডাস্ট এলার্জি শুরু হয়েছে। নিয়মিত ওষুধ খেতে হচ্ছে। আগে এই সমস্যা ছিল না। একবছর ধরে এখন এই রোগ টানছি।’
রাজশাহীর ব্যবসায়ী তুহিনুর আলম বলেন, ‘বিমানে আমরা ঢাকা যাই ৩০ মিনিটে। কিন্তু বিমানবন্দরে যেতে এই আট কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগে তারও বেশি। বিমানবন্দর হয়ে বড় কর্মকর্তা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা রাজশাহী আসেন। তারা আগে আগে থেকেই জানেন যে রাজশাহী সাজানো-গোছানো সুন্দর শহর। কিন্তু বিমানবন্দর থেকে নেমেই তারা দুর্ভোগে পড়েন। অন্তত এই বিষয়টি মাথায় রেখে কাজটা দ্রুত শেষ করা দরকার।’
জানতে চাইলে সওজের রাজশাহীর সড়ক উপবিভাগ-১ এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহা. নাহিনুর রহমান বলেন, ‘নির্মাণ কাজ চললে একটু দুর্ভোগ হবেই। সে জন্য আমরা দ্রুত কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি। কাজের মেয়াদ আছে আরও একবছর। তবে অত সময় লাগবে না। আশা করছি আর পাঁচ-ছয়মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবে। তখন দুর্ভোগও শেষ হবে।’