জমি দখলে বাধা দেওয়ায় আদিবাসী নারীকে মারধর
স্টাফ রিপোর্টার: জমি দখলের প্রতিবাদ করায় এক আদিবাসী নারীকে নির্যাতন ও মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গুরুতর আহত ওই নারীকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল রোববার বিকালে গোদাগাড়ী উপজেলার গোগ্রামের গুনিগ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত সেই আদিবাসী নারীর নাম মিরানী রানী। তিনি ওই এলাকার প্রেম কুমার লাকড়ার স্ত্রী।
এ ঘটনায় মিরানী রানী ছাড়াও তার দেবর জয় কুমার লাকড়া, নিকটাত্মীয় সাগর সরদার, উকিল সরদারসহ আরো কয়েকজন আহত হয়েছেন। স্থানীয়ভাবে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এ নিয়ে জানতে চাইলে জয় কুমার লাকড়া অভিযোগ করে বলেন, গোগ্রামের গনিগ্রামে প্রায় ১৫ বিঘা কৃষি জমি তারা বংশপরম্পরায় ভোগদখল করে আসছেন। কিন্তু একই এলাকার উত্তম এক্কা, সুর্জা রায়সহ কয়েকজন স্থানীয় ভূমিদস্যুদের খপ্পরে প্ররোচিত হয়ে দীর্ঘদিন যাবত তাদের (জয় কুমার) ভোগ দখলকৃত জমি হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এছাড়াও কাউকে কিছু না জানিয়ে জমি ভূমি দস্যুদের নামে করে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন হুমকি ধামকিসহ চাপ সৃষ্টি করে আসছে।
তিনি বলেন, রোববার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে আমরা নিজেদের জমিতে ধান রোপন করতে যাই। এ সময় একই সম্প্রদায়ের উত্তম এক্কা, সুর্জা রায়সহ বেশ কয়েকজন স্থানীয় ভূমিদস্যুদের সাথে নিয়ে জমি দখল করতে আসে। আমরা প্রতিবাদ করতে গেলে তাদের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আরো ৩০-৩৫ জনকে সঙ্গে নিয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
জয় কুমার বলেন, আমরা পুরুষরা সেখান থেকে কোনরকম পালিয়ে আসতে পারলেও আমার ভাবি (মিরানী রানী) সেখানে আটকা পড়ে। এ সময় তারা আমার ভাবিকে একা পেয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। তাকে উদ্ধার করে ওই রাতেই আমরা রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি করেছি। তিনি এখন সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।
জয় লাকড়া বলেন, তারা যে জমিটি দখল করতে চাইছে; তার আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। আমরা এ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থও হয়েছিলাম। বংশপরম্পরায় দীর্ঘদিন জমিটি আমাদের দখলে থাকায় আদালত জমির ভোগ দখল করতে আমাদের আইনগত অনুমতি দিয়েছেন। সামাজিকভাবেও এটি মীমাংসার চেষ্টা করা হয়েছে। সেখানেও তারা টিকতে পারেনি। আদালত ও সামাজিকভাবে মতামত তাদের অনুকূলে যাওয়ার কারণেই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে এই হামলার ঘটনা ঘটাল।
জয় বলেন, এনিয়ে আমরা আইনের আশ্রয় নেওয়ার প্রস্তুতির কথা বলে তারা গ্রামছাড়া করার হুমকি দিচ্ছে। বর্তমানে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এ বিষয়ে গোদাগাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নারীকে মারধরের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। ইতিমধ্যেই পুলিশ সেটি তদন্ত শুরু করেছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।