ঢাকা | ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪ - ৮:৫৬ অপরাহ্ন

যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত সিরাজগঞ্জে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

  • আপডেট: Monday, June 20, 2022 - 10:36 pm

রফিকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ থেকে: ভারতের মেঘালয় ও আসামে টানা বৃষ্টি হওয়ায় পাহাড়ী ঢলে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।

জেলার দু’টি পয়েন্টেই পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রতিনিয়তই প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চলের একের পর এক এলাকা। জেলার বেলকুচি, কাজিপুর, চৌহালী, এনায়েতপুর ও শাহজাদপুরের চরাঞ্চলে শুরু হয়েছে নদী ভাঙন। জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

সর্বশেষ সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জের কাজিপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার (বিপৎসীমা ১৫.২৫ মি.) এবং শহররক্ষা বাঁধ হার্ডপয়েন্টে ৩৩ সেন্টিমিটার (বিপৎসীমা ১৩.৩৫ মিটার) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এতে নিম্নাঞ্চলের মানুষের ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে গেছে। অনেকেই নিরাপদ আশ্র্রয়ের খোঁজে ভিটে-মাটি ছেড়েছেন। কেউ ঠাঁই নিয়েছেন উঁচু বাঁধ বা নির্মাণাধীন ভবনে আবার কেউ রাস্তার ধারে ছাপরা ঘর করে থাকছেন।

দুই সপ্তাহ ধরে ধারাবাহিকভাবে পানি বাড়ায় যমুনার চরাঞ্চলের নিচু জমিগুলো তলিয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে অভ্যন্তরীন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফুলজোড়, করতোয়া, বড়াল, হুড়াসাগর, ইছামতীসহ চলনবিলের নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। পানি জমে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কাঁচা পাট, তিল, কাউন, বাদামসহ বিভিন্ন শাকসবজি। লোকসানের মুখে পড়েছেন এই অঞ্চলের কৃষকরা।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যমুনার পানি দ্রুত বাড়ছে। ২২ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত পানি বাড়ার সম্ভাবনা আছে। ‘এর মধ্যে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করলেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। স্বাভাবিক প্লাবন হলেও বন্যা বা আশঙ্কাজনক পরিস্থিতি সৃষ্টির সম্ভাবনা কম।’
তিনি আরো জানান, ভাঙন রোধে কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ইতোমধ্যেই ভাঙন এলাকায় ৪০ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। এছাড়া আরো ৩০ হাজার জিও ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা আকতারুজ্জামান জানান, বন্যার্তদের জন্য ইতোমধ্যেই ৯১১ মেট্রিক টন চাল, নগদ ২০ লাখ টাকা এবং ৪ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এগুলো বিতরণের জন্য স্ব-স্ব এলাকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছ ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী বিতরণ করা হবে বলে তিনি জানান।

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার বলেছেন, এবছর অতি বৃষ্টিপাতে আগাম বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। সিলেট সহ অনেকগুলো জেলা শহরে পানি ঢুকে গেছে। মানুষ চরম কষ্টে আছে। এছাড়া যমুনা ও পদ্মাতেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সেই সাথে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। সব কিছু মিলে এবার মনে হচ্ছে একটা শক্ত বন্যা মোকাবেলা করতে হবে। এজন্য সরকার পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে।