বিকাশ থেকে উধাও হচ্ছে টাকা
এম এম মামুন মোহনপুর থেকে: নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে বিকাশ থেকে টাকা উধাও হওয়ার ঘটনা। বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে বিত্তশালী, গরীব দিন মজুরেরাও ছাড় পাচ্ছে না প্রতারক চক্রের হাত থেকে। অথচ, এবিষয়ে উদাসীন সংশ্লিষ্ট কোম্পানী এবং মোবাইল ব্যাকিং কর্তৃপক্ষ।
টাকা উধাও হওয়া এমন ঘটনা ঘটেছে রোববার মোহনপুর বাজারে ইত্যাদি টেলিকমে। বিকাশ নম্বর হ্যাক করে ২৪ হাজার ৩২৯ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র। এ বিষয়ে ইত্যাদি টেলিকমের কর্মচারী মো. আসাদুজ্জামান মিলন রোববার রাতে মোহনপুর থানায় সাধারণ ডায়রী করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মোহনপুর বাজারে ইত্যাদি টেলিকমের কর্মচারী মো. আসাদুজ্জামান মিলন রোববার বিকাশের দোকানের ক্যাশ বক্সের ভিতরে মোবাইল ফোন রেখে দোকানঘর পরিষ্কার করছিলেন। সকাল ১০ টার পর তার বিকাশ নম্বর হ্যাক করে প্রথমে ৩ হাজার টাকা নেয়। মাত্র দুই মিনিট পর একই বিকাশ নম্বর হ্যাক করে আরোও ২১ হাজার ৩২৯ টাকা নেয়। দুই বারে মোট ২৪ হাজার ৩২৯ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র।
মোহনপুর বাজারের ইত্যাদি টেলিকমের বিকাশ এজেন্ট (মালিক) মো. মিরাজুল ইসলাম মতিন জানান, মোবাইল ব্যাংকিং কোম্পানিগুলোর দূর্বলতার কারণে হর হামেশাই এমন টাকা উধাও ঘটনা ঘটছে। বিকাশের এমন দূর্বল সিস্টেমের কারণে মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সামান্য লাভে অধিক অর্থ লেনদেনে ধরা খাওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী ব্যবসা বন্ধও করে দিয়েছে।
অভিযোগকারী মো. আসাদুজ্জামান মিলন জানান, বিকাশ একাউন্ট নিয়ে কোনো প্রকার ঘাটা-ঘাটি করিনি অথবা একাউন্ট হ্যাক হয় এমন কোনো কাজ করা হয়নি। এমনকি প্রতারক চক্র থেকে কোনো কল আসেনি বিকাশ একাউন্ট হ্যাক হওয়ার মতো। তারপরও টাকা মোবাইল থেকে গায়েব হয় কি করে?
অনেকে অভিযোগ করে বলেন, হাজার হাজার কোটি টাকার লেনদেনকারী ডিজিটাল মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলোর ত্রূটির কারণে উধাও হচ্ছে মোবাইল একাউন্টে থাকা অর্থ।
মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, থানায় সাধারণ ডায়েরী হওয়ার পর থেকে বিষয়টি নিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মোবাইল ব্যাংকিং ও হ্যাকিং এর বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসসি বিভাগের অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার বলেন, বর্তমানে প্রায় মোবাইল হ্যাকিং এর মাধ্যমে টাকা চুরির বিষয়টি শোনা যাচ্ছে। টাকা উঠানোর সময় যদি কোনো ওটিপি বা ভেরিফিকেশন কোড ব্যবহার করা যায় তাহলে এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। যেখানে লক্ষ কোটি টাকার ব্যবসা সেখানে এসব বিষয়গুলো থাকা অতি জরুরী। তা না হলে এমন ঘটনা প্রায়শই ঘটবে। যা প্রতিষ্ঠানের সুনাম ও ব্যবসা উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর।