জামিন পেলেন আমান গ্রুপের চেয়ারম্যান ও দুই পরিচালক
স্টাফ রিপোর্টার: দেশের অন্যতম শীর্ষ শিল্প গ্রুপ আমান গ্রুপ অব ইণ্ড্রাষ্ট্রিজের চেয়ারম্যান ও দুই পরিচালককে ঋণ প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলায় জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট। সোমবার বিচারপতি মোহা: জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মোহা: কামরুল হোসেন মোল্লার দ্বৈত বেঞ্চ আমান গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম ও পরিচালক শফিকুল ইসলামের জামিন মঞ্জুর করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মোহা: তারেক কামাল। তিনি জানান, আমান গ্রুপের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের ছেলে তারিকুল ইসলাম সোমবার সন্ধ্যায় তাদের জামিনের বিষয়টি তাকে জানিয়েছেন। রাজশাহী মহানগর পিপি মোসাব্বিরুল ইসলামও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য যমুনা ব্যাংকের ৮৮ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতির একটি মামলায় জামিন চেয়ে গত ২৩ মে রাজশাহীর অতিরিক্ত সিএমএম আদালতে উপস্থিত হলে বিচারক রেজাউল করিম জামিন নামঞ্জুর করে তাদেরকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। সেই থেকে আমান গ্রুপের তিন মালিক রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। এরপর গত ৬ জুন ও ১৪ জুন হাইকোর্টের পৃথক দুটি বেঞ্চে আমান গ্রুপের চেয়ারম্যান ও দুই পরিচালকের জামিনের আবেদন নাকচ হয়ে যায়। তৃতীয় বেঞ্চে সোমবার জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যমুনা ব্যাংকের ৮৮ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির মামলায় আমান গ্রুপের তিন মালিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন রাজশাহী মুখ্য মহানগর হামিকের আদালত। গত ২৩ মে এই মামলায় জামিন নিতে রাজশাহীর অতিরিক্ত সিএমএম আদালতে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে রাজশাহীর অতিরিক্ত সিএমএম রেজাউল করিম, আমান গ্রুপের চেয়ারম্যান ও দুই পরিচালকের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। গত ২৯ মে পুণরায় রাজশাহীর সিএমএম আদালতে তাদের জামিন নামঞ্জুর করেন। আমান গ্রুপের তিন কর্ণধার পরস্পর ভাই। রাজশাহী মহানগরীর সাগরপাড়ায় আমান গ্রুপের বিকল্প কর্পোরেট দপ্তর রয়েছে। ঢাকার উত্তরায় আমান গ্রুপের কর্পোরেট অফিস।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৭ সালে আমান গ্রুপের পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম সম্পত্তি বন্ধক রেখে মেসার্স আরএসএন্ডটি ইন্টারন্যাশনাল নামের প্রতিষ্ঠানের নামে যমুনা ব্যাংক রাজশাহী শাখা থেকে ৮৮ কোটি টাকার চলতি ঋণ গ্রহণ করেন। এই ঋণের জামিনদার ছিলেন আমান গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল ও তার ছোট ভাই শফিকুল ইসলাম। ঋণ গ্রহণের পর পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম ব্যাংককে জামানত হিসেবে দেওয়া বন্ধকি সম্পত্তি অন্য মালিকানায় হস্তান্তর করে দেন।
ব্যাংক জানতে পেরে ঋণের টাকা ও জমি উদ্ধারের চেষ্টা করেন। ব্যর্থ হয়ে ২০১৯ সালে যমুনা ব্যাংকের রাজশাহীর শাখার ব্যবস্থাপক মঞ্জরুল আহসান শাহ বাদী হয়ে আমান গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম ও পরিচালক শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৫২০ ও ৪০২ এবং রেজিষ্ট্রি আইনের ৮ ধারায় শাহমখদুম থানায় একটি প্রতারণা মামলা করেন। এই মামলায় পুলিশ চার্জশিট দাখিল হলে আদালত আমান গ্রুপের তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।